Unknown Facts About Making Devi Durga Idol : সামনেই আসছে দুর্গাপুজো (Durga Puja 2023)। আশ্বিন মাসের শুরু থেকেই বাঙালির মনে পুজো পুজো আমেজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় সেজে উঠছে দুর্গামন্ডপ। প্যান্ডেল বাঁধার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পূজোর উদ্যোক্তারা এখন খুবই ব্যস্ত। দুর্গা প্রতিমা তৈরি করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে কয়েক মাস আগে থেকেই। তার জন্য পতিতালয় থেকে মৃত্তিকা তুলে নিয়ে এসেছেন শিল্পীরা।
দেবী দুর্গার মৃন্ময়ী মূর্তি তৈরিতে লাগে ‘অশুদ্ধ’ পতিতালয়ের মাটি। এমন নিদান আসলে শাস্ত্র থেকেই যে মিলেছে। অথচ পতিতালয়কে ‘অশুদ্ধ’ বলে মানেন সমাজের জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিরা। পতিতালয়ের মহিলাদের বলা হয় ‘অশুচি’। তবুও দেবী আদ্যাশক্তির মাটির প্রতিমা তৈরিতে সেই ‘অশুচি’ পতিতালয়ের মাটিরই প্রয়োজন পড়ে কেন?
পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুসারে দেবী দুর্গা ত্রিনয়নী। তার নজরে সকলেই সমান। তবে পতিতাপল্লির বেশ্যারা তার নজরে কিঞ্চিৎ উচ্চস্থানে রয়েছেন। পুরুষেরা পতিতাপল্লীতে গিয়ে তাদের জীবনের সব সঞ্চিত পুণ্য সেখানে ফেলে আসেন। তার বদলে নিয়ে আসেন মুঠো ভর্তি পাপ। বলতে গেলে তাই পতিতাপল্লীর মাটি পুণ্যে পরিপূর্ণ। তাই দেবী প্রতিমা পতিতালয়ের ওই ‘শুদ্ধ’ মাটি ছাড়া অসম্পূর্ণ।
তবে এর পেছনে আরেকটি পৌরাণিক কাহিনীর ব্যাখ্যা মেলে। পুরাণ মতে ঋষি বিশ্বামিত্র ইন্দ্রত্ব লাভের আশায় কঠোর তপস্যা করেন। দেবরাজ ইন্দ্র এতে ভয় পেয়ে স্বর্গের অপ্সরা মেনকাকে ঋষির কাছে পাঠান ধ্যান ভঙ্গের উদ্দেশ্যে। ঋষিদের ধ্যান ভঙ্গ করা সহজ কাজ নয়। দেবরাজ নিজে যেটা করতে পারেননি মেনকা অবলীলায় তা করেছিলেন।
এছাড়াও দেবী মহামায়া ৯ টি রূপে পূজা পান। মহামায়ার এই নবম রূপ পতিতালয়ের প্রতিনিধি। অষ্টকন্যার পুজোর পর দেবীর এই নবম রূপের পূজা হয়। এই নবকন্যারা হলেন নর্তকী, কাপালিনী, ধোপানি, নাপিতানি, ব্রাহ্মণী, শূদ্রাণী, গোয়ালিনি, মালিনী ও পতিতা। সমাজের নজরে যারা নিচু, যারা অশুচি এবং অশুদ্ধ থাকেন সারা বছর, তারাই দেবী বন্দনার সময় সাধারণ মানুষের থেকে পূজা পান।
আরও পড়ুন : সাক্ষাৎ যেন মা সরস্বতী! ‘বাবুউউ’র মায়ের গলায় গান শুনলে মুগ্ধ হবেন আপনিও
আরও পড়ুন : পঞ্চমীর পর নতুন সিরিয়ালে ফিরছে ‘কিঞ্জল’, বিপরীতে রয়েছেন এই জনপ্রিয় নায়িকা
তবে কারণ যাই হোক না কেন, পতিতালয়ের অশুদ্ধ নারীদের মাটি দিয়েই গড়ে তোলা হয় দেবীর মূর্তি। মৃন্ময়ী কাঠামোতে এই মাটির প্রলেপ না দিলেই নয়। পুরাণ মতে পতিতাদের ক্ষমতা দেবতাদের থেকেও বেশি। এছাড়া সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রত্যেক নারী মায়ের সমান। নারীকে পতিতা বানায় পুরুষ। নারী কখনোই অপবিত্র নন। দেবীর অকালবোধনে প্রত্যেক বছর এই বার্তাই মেলে।