মাত্র ৫জনের জন্য ২৭তলা বাড়ি, ঘুরে দেখুন মুকেশ আম্বানির বাড়ির অন্দরমহল

কেমন দেখতে মুকেশ আম্বানির বাড়ি, ঘুরে দেখুন অ্যান্টিলিয়ার অন্দরমহল

Riya Chatterjee

Updated on:

বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ধনকুবেরদের তালিকায় প্রথম সারিতে থাকে তার নাম। আধুনিক গণতান্ত্রিক ভারতবর্ষেও কার্যত রাজার হালে থাকেন তিনিই। তার পরিবার, বাড়ি-ঘর, জীবনযাত্রা কোনওটাই কোনও রাজ পরিবারের তুলনায় কম কিছু নয়। তিনি ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ ধনকুবের, রিলায়েন্স গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার মুকেশ আম্বানি।

মুকেশ আম্বানির মোট সম্পদের পরিমাণ ৬.০৯ লক্ষ কোটি। বিশ্বের এমন ধনী ব্যক্তির জীবনযাপনও যে স্বভাবতই তাই অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ হবে, এ আর নতুন কথা কি। মুকেশ আম্বানির সম্পত্তির মধ্যে তার নিজস্ব বাড়ি “আন্তিলিয়া”ও রয়েছে। সাধারণ মানুষের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু মুকেশ আম্বানির বাড়ি, গাড়ি এবং ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স!

কোনও এক স্বপ্নপুরীর রাজপ্রাসাদের তুলনায় কোনও অংশে কম নয় মুকেশ আম্বানির ২৭ তলার ফ্ল্যাট “আন্তিলিয়া”। আটলান্টিক মহাসাগরের নামানুসারে মুকেশ আম্বানির বাসস্থানের নামকরণ করা হয়েছে। ১০০ কোটি পাউন্ড খরচ করে নিজের মনের মতো বাড়ি বানিয়েছেন মুকেশ। কি নেই সেই বাসস্থানে! নিজের বাড়িটিকে মনের মত করে সাজিয়েছেন মুকেশ।

সাউথ মুম্বাইয়ের আল্টামাউন্ট রোডের উপর স্থাপিত হয়েছে মুকেশ আম্বানির রাজপ্রাসাদটি। ২৭ তলা বিল্ডিং হলেও ৫৭০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট “আন্তিলিয়া” আসলে ৪০ তলা বাড়ির সমান উঁচু! এই ২৭ তলা বিল্ডিংয়ের মধ্যেই হেয়ার স্পা, স্যালোঁ, বলরুম, সুইমিং পুল, যোগা স্টুডিও এবং ডান্স স্টুডিও থেকে আরম্ভ করে একটি আইসক্রিম পার্লার এবং ব্যক্তিগত থিয়েটার পর্যন্ত রয়েছে “আন্তিলিয়া”তে , যেখানে ৫০ জন মানুষ একত্রে বসতে পারবেন।

এই থিয়েটারের ঠিক উপরের ছাদের রয়েছে একটি মনোরম বাগান। “আন্তিলিয়া”র ছয় তলাতে রয়েছে পার্কিং প্লেস, যেখানে একসঙ্গে ১৬৮টি গাড়ি রাখা যেতে পারে! একতল থেকে অন্য তলে যাওয়ার জন্য সারা বাড়ির মধ্যে মোট ৯টি এলিভেটর রয়েছে। উল্লেখ্য, অতিথি এবং পরিবারের সদস্যদের ব্যবহারের জন্য আলাদা আলাদা এলিভেটরের ব্যবস্থা রয়েছে। হেলিকপ্টার ল্যান্ড করার জন্য “আন্তিলিয়া”র ছাদের উপরে ৩টি হেলিপ্যাডও রয়েছে।

স্ফটিক, মার্বেল এবং মুক্তো দ্বারা নির্মিত সূর্য এবং পদ্মের দুটি নকশা দিয়েই কার্যত সারা বাড়ি মুড়ে দেওয়া হয়েছে। মুকেশ আম্বানির এমন সুন্দর বাড়িটি দামের নিরিখে ইংল্যান্ডের বাকিংহাম প্যালেসের পর বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যয়বহুল বাসস্থান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

মুকেশ আম্বানির রাজপ্রাসাদ “আন্তিলিয়া”কে সযত্নে  বানিয়েছে শিকাগোর পারকিন্স এন্ড উইল কোম্পানি এবং অস্ট্রেলিয়ার লেইটন হোল্ডিং কোম্পানি। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে “আন্তিলিয়া”কে এতটাই সুরক্ষিতভাবে গড়ে তোলা হয়েছে যে রিখটার স্কেলে ৮ ম্যানিটিউড মাত্রার ভূমিকম্পেও অটুট থাকবে মুকেশ আম্বানির রাজপ্রাসাদ।

পূজার্চনা করার জন্য আম্বানি পরিবারকে অন্যত্র যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কারণ এই রাজপ্রাসাদেই রয়েছে বিশাল বড় একটি মন্দির। অতিথিদের থাকার জন্য সুবন্দোবস্ত রয়েছে। গরমের সময় দিল্লী-মুম্বাইয়ের তাপমাত্রা কি পরিমাণ বেড়ে যায় তা সাধারণের অজানা নয়। তবে মুকেশ আম্বানির পরিবারকে কার্যত কোনও অসুবিধা স্পর্শ করতে পারে না। তীব্র গরমেও তারা বরফে ঢাকা পাহাড়ের ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া পেয়ে যান বাড়িতে বসেই।

আরও পড়ুন : মুকেশ আম্বানি তার মানিব্যাগে যা রাখেন তা জেনে মুখ লুকোবে সবাই

মুকেশ আম্বানির রাজপ্রাসাদ “আন্তিলিয়া”তে রয়েছে একটি স্নো-রুম বা বরফ ঘর। এই ঘরের দেওয়াল থেকে সত্যি সত্যিই পেঁজা তুলোর মতো বরফ পরে গরমের সময়। গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহ তাই আম্বানি পরিবারকে কার্যত ছুঁতেও পারে না। আর এই এত বড় রাজপ্রাসাদে যে পরিবারটি থাকেন, সেই পরিবারের সদস্য সংখ্যা মাত্র পাঁচ!

আরও পড়ুন : বিশ্বের ১০টি মহামূল্যবান সম্পদ যা কেবলমাত্র মুকেশ আম্বানির কাছেই আছে

মুকেশ আম্বানি এবং তার স্ত্রী নিতা আম্বানি, তাদের পুত্র সন্তান আকাশ আম্বানি এবং পুত্রবধূ শ্লোকা মেহতা আম্বানি ও তাদের সদ্যোজাত সন্তান পৃথিবী আম্বানি, এই ছোট্ট পরিবারের থাকার জন্য বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট এবং সবথেকে দামি আবাসস্থল তৈরি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন : মুকেশ আম্বানির ড্রাইভারের বেতন লজ্জায় ফেলে দেবে দেশের বড় কর্পোরেট সংস্থার কর্মীদেরও

তবে পরিবার যতই ছোট হোক না কেন, এই পরিবারের দেখভাল করার জন্য কর্মচারীর সংখ্যা কিন্তু কিছু কম নয়। শোনা যায়, “আন্তিলিয়া”তে আম্বানি পরিবারের মাত্র পাঁচজন সদস্য থাকলেও তাদের দেখভাল করার জন্য প্রায় ৬০০ জন কর্মচারী নিযুক্ত আছেন।