স্টার জলসার (Star Jalsha) অন্যতম এক সেরা ধারাবাহিক “খড়কুটো” (Khorkuto)। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের (Leena Gangopadhyay) লেখনীতে “খড়কুটো” ধারাবাহিকের গল্প দর্শকের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। “খড়কুটো” ধারাবাহিকের প্রতিটি চরিত্রই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুলাল লাহিড়ী, অভিষেক চ্যাটার্জী, রত্না ঘোষাল, অনুশ্রী দাস, চন্দন সেন, অম্বরিশ ভট্টাচার্যের (Ambarish Bhattacharya) মতো হেভিওয়েট অভিনেতা এবং অভিনেত্রীর পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের তৃণা সাহা (Trina Saha), কৌশিক রায়, রুকমা রায় (Rooqma Ray), রাজা গোস্বামীর মতো শিল্পীরা চুটিয়ে অভিনয় করছেন এই ধারাবাহিকে।
তবে এই ধারাবাহিকের প্রধান আকর্ষণের যে বিষয়বস্তু, তা হলো “গুনগুন-সৌজন্য” এর দুষ্টু-মিষ্টি, খুনসুটি ভরা দাম্পত্য। একদিকে সহজ, সরল, সাদাসিধে, শিশুর মতো নিষ্পাপ এবং চঞ্চল, প্রাণোচ্ছল “গুনগুন” এবং অপর দিকে রাগী, গম্ভীর, সবসময় পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত, শান্ত চরিত্রের “সৌজন্য”; বলতে গেলে দুজনেই যেন একে অপরের পরিপূরক। পর্দায় তাদের খুনসুটি, মান-অভিমান পর্ব, মানভঞ্জন পালাও দর্শক বেশ পছন্দ করেন।
ধারাবাহিকে “সৌজন্য” এর চরিত্রটি যিনি অত্যন্ত যত্নসহকারে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন, তিনি সকলের অত্যন্ত পছন্দের অভিনেতা এবং টেলি পর্দার অত্যন্ত জনপ্রিয় মুখ কৌশিক রায় (Koushik Roy)। “গুনগুন” এর সেই “ক্রেজি” “সৌজন্য” তথা “বাবিন” বাস্তব জীবনে কেমন?
অভিনেতা কৌশিক রায় (Koushik Roy) সবসময় প্রচারের আলো থেকে নিজেকে সবসময় দূরে রাখেন। তাই তাকে নিয়ে দর্শকের আগ্রহ প্রবল। পর্দার “সৌজন্য”কে তো সকলেই চেনেন এবং জানেন। আসুন আজ বরং জেনে নিই, ব্যক্তি কৌশিক রায়কে।
বর্তমান প্রজন্মের অন্যান্য অভিনেতাদের মতো লাইমলাইটে থাকতে বিন্দুমাত্র পছন্দ করেন না অভিনেতা কৌশিক রায়। ধারাবাহিকের স্লটটুকু ছাড়া অন্যান্য সময় তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিংবা ক্যামেরার সামনে দেখাই যায় না। কাজের বাইরেও নিজেকে পর্দার আড়ালে লুকিয়ে রাখতেই স্বচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
“খড়কুটো” ছাড়াও ছোটপর্দায় “পুন্যি পুকুর”, “বোঝেনা সে বোঝেনা”, “ফাগুন বউ”, “কুসুম দোলা”র মতো বেশ কিছু জনপ্রিয় ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে কৌশিক রায়কে। বিশেষত “বোঝে না সে বোঝে না” ধারাবাহিকে দুর্দান্ত খলচরিত্র “কৃষ্ণেন্দু সেনগুপ্ত” এর ভূমিকায় অভিনয় করে প্রভূত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন তিনি। এই অভিনেতার ঝুলিতে বড় পর্দারও বেশকিছু সিনেমা রয়েছে। যেমন, “ভাগশেষ”, “একলা চলো”, “গয়নার বাক্স”, “প্রলয়”, “ফ্লাইওভার” ইত্যাদি।
জানলে অবাক হবেন, টলিউডের এমন দক্ষ অভিনেতা কিন্তু প্রথম জীবনে অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছা মনে পোষণ করতেন না। তার ইচ্ছে ছিল তিনি বড় হয়ে ফুটবলার হবেন। অভিনয় জগত থেকেও যে তিনি এমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেন, তা কখনও কল্পনাও করতে পারেননি কৌশিক রায়। অভিনেতা নিজের মুখেই স্বীকার করলেন সেই কথা। টলিউডে তার আগমণও হয়েছিল হঠাৎ করেই।
অভিনেতা জানিয়েছেন, প্রথম জীবনে তিনি সেলসম্যান হিসেবে নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। চাকরি করতে করতেই অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন কৌশিক রায়। তারপর দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে টলিউডে চুটিয়ে কাজ করে চলেছেন তিনি। তবে কাজের বাইরে বাড়তি সময়টুকু তিনি নিজের পরিবারকেই দিতে পছন্দ করেন। আসলে অভিনেতা কৌশিক রায় ব্যক্তি হিসেবে ভীষণ ঘরোয়া এবং “ফ্যামিলি ওরিয়েন্টেড পারসন”।
তাই তো শুটিংয়ের বাইরে হাতে বাড়তি সময় থাকলে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে, ঘুরে বেড়িয়ে কিংবা পার্টি করে সেই সময়টুকু নষ্ট না করে বরং বাড়িতে থেকে নিজের ছোট্ট মেয়ের সঙ্গেই খেলতে পছন্দ করেন কৌশিক রায়। পর্দায় তাকে নেগেটিভ বা পজেটিভ, যেমন চরিত্রেই দেখা যাক না কেন, কৌশিক রায় নিজের ব্যক্তি জীবনেও কিন্তু অত্যন্ত মুডি, কাজের প্রতি সিরিয়াস এবং তিনি কমিটমেন্টে বিশ্বাসী। কথার খেলাপী তিনি একদমই পছন্দ করেন না।
পর্দার “সৌজন্য” চরিত্রটির সঙ্গে এখানেই তার বেশ কিছু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। অভিনেতা নিজেও স্বীকার করেছেন সেই কথা। আসলে “সৌজন্য” এর আদর্শে বিশ্বাসী কৌশিকও। বিশেষত “সৌজন্য” যেভাবে নিজের পরিবারকে গুরুত্ব দেয়, বাস্তব জীবনে কৌশিক রায়ও ঠিক একইভাবে অভিনেতা নিজেও নিজের পরিবারকেই সকল বিষয়ের উর্দ্ধেই রাখেন। তাই “সৌজন্য” চরিত্রটি তার অত্যন্ত পছন্দের চরিত্র।