আমাদের দেশের মেয়েদের জন্য সুলভ শৌচাগার ব্যবহার করা একপ্রকার অসাধ্য। বেশীরভাগ পাবলিক টয়লেটই বানানো হয় হাইরোডের ধারে। শহরের মধ্যে যেগুলি আছে সেগুলির অবস্থা কহতব্য নয়। নোংরা তো বটেই তার সঙ্গে বিশ্রী গন্ধ। পুরুষেরাই কোনও রকমে নাক-মুখ চেপে কাজ সারে। সেখানে মেয়েদের অবস্থা যে আরও শোচনীয় সেটা বলাই বাহুল্য। বাইরে বেরিয়ে প্রকৃতির ডাক এলে আক্ষরিক অর্থেই চেপে রাখা ছাড়া মেয়েদের অন্য উপায় নেই। বাড়ি ফিরলে তারপর সেই দমবন্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি মিলবে।
ভারতীয় মহিলাদের এই দূরবস্থার হাত থেকে মুক্তি দিতে এগিয়ে এসেছে হ্যারি শেরওয়াত এবং অর্চিত আগরওয়াল নামের দুই আইআইটি পড়ুয়া। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের এই দুই ছাত্র একটি বিশেষ যন্ত্রের উদ্ভাবন করেছেন। যার সাহায্যে মহিলারাও পুরুষদের মতোই দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে পারবে।
নাম ‘সানফে’। মেডিক্যাল গ্রেড সিলিকন দিয়ে তৈরি এই সানফে গোপনাঙ্গে প্লাগ অ্যান্ড প্লে-র মতো কাজ করবে। দূর্গন্ধ প্রতিরোধের জন্যও আলাদা ব্যবস্থা আছে। দামেও সস্তা, মাত্র ১০ টাকা।
শেরওয়াতের কথায়, ‘আমরা পুরুষেরা বাইরে বেরলে সুলভ শৌচাগার ব্যবহার করি। তাই সেখানে মেয়েদের অবস্থা কতটা খারাপ সেটা জানি। প্রথমত, মেয়েদের জন্য সুলভ শৌচাগারের সংখ্যা খুবই কম। দ্বিতীয়ত, যেগুলোয় ব্যবস্থা আছে সেগুলিও চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর। এখান থেকে মেয়েদের অবস্থা বদলাতে চেয়েই আমাদের গবেষণা।’
যন্ত্র উদ্ভাবনের পর হ্যারি এবং অর্চিত সেটা ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন বান্ধবীদের। তাঁদের কাছ থেকে ‘ফিট সার্টিফিকেট’ পাওয়ার পর দুই বন্ধু সানফে যন্ত্রকে মেডিক্যাল কিট হিসাবে ব্যবহার করার আবেদন জানান। সেই অনুমতি মিলেছে। দিল্লীর বাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে সানফে যন্ত্র। অর্চিতেরা চাইছেন, তাঁদের উদ্ভাবিত যন্ত্রে উপকৃত হোক দেশের মেয়েরা। তাই দেশের সমস্ত ওষুধের দোকানেই এই যন্ত্র পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন : সকালে কফি? নাকি রাত্রে ফল? খালি পেটে কী কী খাবেন আর কী কী নয়?
সানফে যন্ত্র ব্যবহারের সুবিধার কথা বলছিলেন শেরওয়াত। জানালেন, ‘সানফে এতটাই ছোট যে অনায়াসে হাতের পার্সে ঢুকে যায়। তাই এটা নিয়ে ঘোরাও সহজ। মাসিকের দিনগুলিতে ব্যবহারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। ছোট এবং হালকা হওয়ায় এক হাতেই ব্যবহার করা যায়। ভারতীয় মেয়েদের শাড়ি পড়ার অভ্যাসের কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে সানফে।’