ভুলেও এই জিনিসগুলি কিনবেন না ধনতেরাসের দিন, সংসারে লেগেই থাকবে অশান্তি

ধনতেরাস উপলক্ষে সারা দেশ এমনকি বিদেশেও হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষেরা সোনা,রুপো ইত্যাদি অলংকার ধাতু কিনে থাকেন। এছাড়াও উত্তর ভারতীয়দের মধ্যে এই দিন মা লক্ষ্মী এবং গণেশের বিশেষ পূজা অর্চনা করা হয়ে থাকে। যদিও এই প্রথা বাঙালিদের মধ্যে অতীতে সেইভাবে বিস্তার লাভ করেনি কিন্তু বর্তমানে বিশ্বায়নের প্রভাবে এখন এরকম প্রথা আমাদের বাংলাতেও প্রচলিত এবং জনপ্রিয় হচ্ছে।

ধনতেরাস উপলক্ষে সাধারনত আমরা বাড়িতে যেমন পূজা অর্চনা করে থাকি আমাদের ধনের দেবী লক্ষ্মীর তেমনি কুবের দেবতার পূজা করা হয়ে থাকে। কারণ তিনিও ধনের দেবতা। আসুন জেনে নিই এই ধনতেরাস উৎসব উপলক্ষে কোন কোন কোন ধাতু ক্রয় করলে আমাদের পরিবার এবং ব্যক্তিগত ভাগ্যের সুবৃদ্ধি ঘটবে

দীপাবলি উৎসবের শুরু হয় ধনতেরাস উৎসবের মাধ্যমে। এই ধন্তেরাস বা ধন ত্রয়োদশী উৎসব কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ১৩তম দিনে পালন করা হয়ে থাকে। এই দিন বাড়িতে মা লক্ষ্মী এবং গণেশের পূজা এবং তার সাথে ১৩ টি প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়ির বিভিন্ন স্থানে অর্থাৎ বাড়িকে বেষ্টন করে দেওয়া হয়ে থাকে।

ধনতেরসে কি কি কেনা উচিত? এবং কি কি কেনা একদমই উচিত নয়?

লোক মতে বা প্রাচীন পুরাণ থেকে আমরা যা তথ্য পেয়ে থাকি তা হল এই ধনতেরাস উৎসবের মাধ্যমে আমরা পরিবারের সকল ব্যক্তির অকাল মৃত্যু রোধের কামনা করতে পারি। তেমনি ভগবান কুবের এর কাছে ধনের বাসনাও জানাতে পারি।

ধনতেরসে কি কি কেনা উচিত? এবং কি কি কেনা একদমই উচিত নয়?

ধনতেরাসে কি কেনা শুভ

এই উৎসব উপলক্ষে প্রত্যেকে ক্রয় করতে পারেন বিভিন্ন অলংকার ধাতু নিজের নিজের সাধ্যমত। যেমন সোনা এবং রুপো বা প্লাটিনামও কিনতে পারেন। তবে এই বিশেষ দিনে রুপার কয়েন বা রুপার অলঙ্কার কিনলে তা অত্যন্ত শুভ বলে গণ্য করেন জ্যোতিষীরা।

ধনতেরসে কি কি কেনা উচিত? এবং কি কি কেনা একদমই উচিত নয়?

এই দিন আপনি অবশ্যই কিনুন বাসনাদি এবং সেই বাসন যেন অবশ্যই স্টিলের অর্থাৎ স্টেনলেস স্টিলের হয়ে থাকে এরপর সেই বাসনাদি দিয়ে প্রথমে আপনার আরাধ্য দেবতা এবং মা লক্ষ্মী ও ভগবান কুবের এর উদ্দেশ্যে ভোগ নিবেদন করবেন। দেখবেন আপনার বাড়িতে কোনদিনই অর্থাভাব ঘটবে না এবং বাড়ির সকলের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে ।

ধনতেরসে কি কি কেনা উচিত? এবং কি কি কেনা একদমই উচিত নয়?

এছাড়াও ধনতেরাস উপলক্ষে যা অবশ্যই কিনবেন তা হলো দুটি নারকেল ঝাড়ু যা আপনি অনায়াসে যে কোন দোকান থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। এই দুই নারকেল ঝাড়ু কেনার পর একটি ঝাড়ু যত্নসহকারে বাড়ির মধ্যে লুকিয়ে রাখবেন অর্থাৎ আপনি ছাড়া অন্য কেউ সেই ঝাড়ুর প্রকৃত অবস্থান জানবে না। অপর ঝাড়ু দিয়ে বাড়ির সকল ধুলোবালি, নোংরা, আবর্জনা প্রতিদিন যত্ন সহকারে ঝাঁট দিয়ে বাইরে বের করে দেবেন।

তবে  ধনতেরাসের দিন থেকে এই নতুন ঝাড়ুর  ব্যবহার শুরু করবেন অবশ্যই। এইভাবে প্রথম ঝাড়ু নষ্ট হয়ে গেলে তারপর সেই লুকিয়ে রাখা ঝাড়ু বের করবেন ব্যবহারের উদ্যেশ্যে। জ্যোতিষীদের মতে নতুন নারকেল ঝাড়ু এই উৎসব উপলক্ষে বাড়িতে ব্যবহার করলে বাড়ির মধ্যে সকল দুশ্চিন্তা, খারাপ প্রভাব এবং নেগেটিভ এনার্জি বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যায় অর্থাৎ আপনার বাড়ির মধ্যে পজিটিভ এনার্জি বাড়তে থাকে। এইভাবে নারকেল ঝাড়ুর মাধ্যমে বাড়ির মধ্যে থাকা অলক্ষীকে বার করে দিয়ে মা লক্ষীর আগমন এর পথকে সুগম করা হয়।

এই বিশেষ দিনে আপনি অবশ্যই সেবা করাতে পারেন দুঃস্থ মানুষদের আপনার সাধ্যমত ।আর সেবা করালে আপনি অবশ্যই ঈশ্বরের অর্থাৎ মা লক্ষ্মীর কৃপা লাভ করবেন।

ধনতেরাসে যেসব জিনিস কিনবেন না

এই দিন ছুরি কাঁচি বা অন্যান্য ধারালো যেকোনো জিনিস তা ধাতুর হোক বা অন্য কিছুরই হোক না কেন কখনোই কিনবে না। কারণ ধারালো জিনিস এই উপলক্ষে কিনলে সম্পর্কের ধার নষ্ট হতে থাকে বলে বিশ্বাস করা হয়। এইদিন কাচের বা ভঙ্গুর জিনিস কখনোই কিনবেন না। কারণ তাতে আপনার বাড়িতে ধন এর স্থায়িত্ব চিরকাল হবে না।

ধনতেরাস উপলক্ষে আপনি কোনরকম আর্থিক লেনদেন অর্থাৎ আপনি ওই দিন কোন ব্যক্তিকে টাকা ধার দেবেন না বা অন্য কোন ব্যক্তির কাছে ধার চাইবেন না। এই বিশেষ দিনে আপনি যদি ধার বাকির কাজ করেন তাহলে মা লক্ষ্মী এবং ভগবান কুবের খুবই অসন্তুষ্ট হন।

রাহুর প্রকোপ থেকে নিজেকে এবং বাড়ির সকলকে রক্ষা করার জন্য এই দিন অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি বাসনপত্র বা জিনিস একদমই কিনবেন না। এই দিন অবশ্যই কোন ক্রয় ধার বাকির মাধ্যমে করবেন না আপনার সাধ্যমত ক্রয় করবেন।