এসে গেছে শীতের মরসুম, এসে গেছে বনভোজনের পালা। ইংরেজি মাসের ডিসেম্বর, অর্ধেক পেরিয়ে যেতে চলেছে! এখন থেকে বন্ধু-বান্ধবীরা ঠেকে বসে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে কোথায় করা যাবে এবারের বনভোজন? আর আলোচনাতে বসেই বনভোজনের নানা মত। কেউ বলে ধারে পাশে, কেউ বলে দুরে হবে এবারে আমাদের বনভোজন।
মায়াপুর
জলঙ্গি আর গঙ্গার মধ্যবর্তী স্থান মায়াপুর ইসকনের মন্দিরের জন্য বিখ্যাত৷ নদীর তীরে শীতকালে পিকনিক এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা এবং সেই অভিজ্ঞতা ও সুন্দর ইসকনের মন্দির দেখার হাত ছাড়া কেউ করেন না৷ মায়াপুর একটি পর্যটন কেন্দ্র হওয়ায় এখানে থাকা-খাওয়ার এবং অন্যান্য বিষয়ের সুবন্দোবস্ত রয়েছে।
নিউ দীঘা
কখনোই অপরিচিত নাম নয় এটি। সারা বছরই রাজ্যের তথা দেশের নানা ধরনের মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন। এখানে সারাবছর ঘোরা ছাড়াও বনভোজনের সময় রাজ্যের অন্যতম পিকনিক স্পট নামে পরিচিত এই নিউ দীঘা। থাকা-খাওয়া, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সমস্ত রকম সুবিধা রয়েছে এই নিউ দীঘায়।
ঝিলিমিলি
বাঁকুড়ার স্কটল্যান্ড। রয়েছে উপত্যকার সৌন্দর্য। ওয়াচ টাওয়ার থেকে দেখুন দূর দুরান্তের আকাশ কেমন পাহাড়ে এসে মিশেছে।
শুশুনিয়া
বাঁকুড়া জেলায় অবস্থিত অন্যতম একটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পট। গত দুই দশক ধরে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় পিকনিক স্পট এই শুশুনিয়া।
মাইথন
পিকনিকের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় নাম মাইথন। পিকনিক ছাড়াও এখানে দু’-এক দিনের ছুটি নিয়ে দামোদরের তীরে মাইথনের ঘুরে আসতে পারেন৷ মাইথনের কাছেই রয়েছে কল্যাণেশ্বরী মন্দির৷ আসানসোল বা বরাকর থেকে মাত্র আট কিমি দূরে নানারকমের গাছপালায় ঘেরা এক অপূর্ব জায়গা৷
বোলপুরে খোয়াই
বীরভূমের শান্তিনিকেতনের খোয়াইবনের হাট সম্পর্কে নতুন করে পরিচয় দেওয়ার কিছু নেই। ঠিক তার পাশেই কোপাই নদীর তীরে হাজারো হাজারো মানুষ বনভোজনের সময় ছুটে আসেন।
ম্যাসাঞ্জোর ড্যাম
ম্যাসাঞ্জোর ড্যাম সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। ঝাড়খন্ডে অবস্থিত হলেও ময়ূরাক্ষীর নদী এই ড্যামে কাতারে কাতারে মানুষ আসেন বনভোজনের জন্য। বীরভূমের অধিকাংশ মানুষ বনভোজনের সময় ছুটে যান এই ম্যাসাঞ্জোর ড্যামে।
হাজারদুয়ারী
মুর্শিদাবাদের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমন ও পিকনিকের স্পট এটি। বহু মানুষের সমাগম হয় পিকনিক ও ভ্রমনকে লক্ষ করে।
অযোধ্যা
পুরুলিয়া জেলার অন্যতম পিকনিক স্পট ইউ অযোধ্যা। বনভোজনের সময়ে বহু মানুষের আগমন ঘটে এই এলাকায়।
মন্দারমনি
পূর্ব মেদিনীপুরের ভ্রমণ এবং পর্যটন ছাড়াও পিকনিকের অত্যন্ত জনপ্রিয় স্থান এই মন্দারমনি। সমুদ্রের ধারে পিকনিকের আনন্দ উপভোগ করতে মন্দারমনির থেকে বিকল্প জায়গা অন্য কিছু ভাবা যায় না।
পানিত্রাস
এই স্পটের সব থেকে বড় বৈশিষ্ট্য– এখানেই রয়েছে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি৷ কাছেই রূপনারায়ণ৷ নদীর কাছে বিশাল মাঠ বা নদীর তীরে পিকনিক হয়৷ কাছেপিঠে অনেক গেস্ট হাউস রয়েছে৷ আগে থেকে বুক করে নিতে হবে৷ কোলাঘাটের আগের স্টেশন দেউলটি৷ এখান থেকে অটো বা গাড়িতে পানিত্রাস যেতে পারবেন৷ প্রসঙ্গত বলতে হয়, কোলাঘাটও একটা ভাল পিকনিক স্পট৷ নদীর ধারে মন খুলে ঘোরা যায়৷
তিলপাড়া ব্যারাজ
ময়ূরাক্ষী নদীর উপর সিউড়ির পাশেই তিলপাড়া ব্রিজ। প্রতিবছর এখানে বনভোজনের সময়ই বীরভূমের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষের আগমন লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে রবিবার গুলিতে ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো।
দেউলটি
সূবর্ণরেখার তীরে অবস্থিত গ্রামীণ এলাকা। একটা সময় শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এখানে থাকতেন। কলকাতা থেকে দুরত্ব ৬৩ কিলোমিটার।
গড় মান্দারণ
বিশাল এলাকা জুড়ে ঘন গাছের সারিতে ঢাকা এক মনোরম পিকনিক স্পট। কামারপুকুর থেকে ঘাটাল যাওয়ার পথে আড়াই থেকে তিন কিমি গেলেই গড় মান্দারণ৷
গাদিয়াড়া
হাওড়া জেলায় এই পিকনিক স্পট অন্যতম জনপ্রিয় পিকনিক স্পট৷ এখানে হুগলি নদীর তীরে বসে পিকনিক করার সুযোগের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ এই জায়গাটি৷ এখানে থাকার জন্য সুবন্দোবস্ত ও লজ রয়েছে।
কদমদেউলি জলাধার
বাঁকুড়া জেলার অপেক্ষাকৃত সুন্দর অথচ অপরিচিত পিকনিক স্পট ইন্দপুর ব্লকের কদমদেউলি জলাধার। প্রাকৃতিক দৃশ্যে টইটম্বুর কদমদেউলীতে এই জলাধারটি শিলাবতী নদীর ওপর নির্মিত। বাঁকুড়া-খাতড়া ভায়া ইন্দপুর রাস্তার উপর ভেদুয়াশোল থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে এই কদমদেউলী জলাধার, এছাড়াও হাতিরামপুর থেকে কংসাবতী ক্যানেলের পাড় বরাবর এসে পড়া যায় এই কদমদেউলিতে। মূলত কংসাবতী ক্যানেল ও শিলাবতী নদীর মিলনস্থলেই এই ড্যাম।
তালবেড়িয়া জলাধার
প্রকৃতির অপার বিস্ময় লুকিয়ে আছে আমাদের দক্ষিণ বাঁকুড়াতে। উঁচু পাহাড়ে ঘেরা রানিবাঁধ ব্লকের দক্ষিণ প্রান্তে আমাদের আজকের ডেস্টিনেশন, ঝিলিমিলির কাছেই তালবেড়িয়া ড্যাম। ঝিলিমিলির কাছে পাহাড় আর জঙ্গল ঘেরা তালবেড়িয়া হল একটি ছোট্ট জলাধার।
দুর্গাপুর ব্যারেজ
দুর্গাপুরে দুর্গাপুর ব্যারেজ আদর্শ পিকনিক স্পট। দামোদর নদের ধারে গাছের ছায়ায় পিকনিকে আলাদা অনুভুতি আনে এই জায়গা। এখানে দামোদরের অন্য তীরে অবস্থিত বাঁকুড়া জেলা।
গড়চুমুক
হাওড়া জেলার অন্যতম জনপ্রিয় পিকনিক স্পট এই গড়চুমুক। হাওড়া শ্যামপুর এলাকায় এই পিকনিক স্পটটি। পিকনিক স্পট এর সামনেই রয়েছে দামোদর নদ এছাড়াও কাছেই রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম গেটের অন্যতম আটান্ন গেট।
বাকসি
হাওড়ার বাগনান স্টেশন থেকে সামান্য দূরে বাকসি। এখানে যাওয়ার জন্য বাগনান থেকে বাসের ব্যবস্থা থাকে। এখানে নদীর ধারে পিকনিক করার আনন্দ উপভোগ নিতে পারেন।
পানিত্রাস
এখানে রয়েছে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি, কাছেই রয়েছে রূপনারায়ণপুর। এখানেই যাওয়ার জন্য কোলাঘটের আগের স্টেশন দেউলটিতে নামতে হবে এবং সেখান থেকে অটো ও অন্যান্য যান রয়েছে যোগাযোগের জন্য। নদীর ধারে রয়েছে বিশাল ফাঁকা মাঠ, যেখানে পিকনিক করা যায়।
কোলাঘাট
কোলাঘাট নদীর তীরে পিকনিকের আনন্দ নিতে বহু মানুষের সমাগম লক্ষ্য করা যায়। নদীতীরে পিকনিক করার আনন্দ নিতে হলে চলে আসুন কোলাঘাট।
টাকি (উত্তর ২৪ পরগনা)
ইছামতী নদীর তীরে অবস্থিত টাকি। পরিবার কিম্বা বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকের আদর্শ জায়গা।
ইছামতী পার্ক (উত্তর ২৪ পরগনা)
টাকি স্টেশনের অদূরেই রয়েছে আরও একটি পিকনিক স্পট। শুধুমাত্র পিকনিকের জন্য গাছপালা আর জলাশয় ঘেরা এই পার্ক।
মেঠো গাঁ (উত্তর ২৪ পরগনা)
মধ্যমগ্রাম থেকে বেশ খানিকটা এগোলেই হাজির হওয়া যায় এই গ্রামে।
চান্দুর (হুগলি)
হুগলির শেষ প্রান্তে আরামবাগ থেকে চার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চান্দুর। শাল–সেগুন-সোনাঝুরির জঙ্গলের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে দ্বারকেশ্বর নদী। চান্দুরের এই জঙ্গলেই মিলবে পিকনিকের মজা।
ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক ( হুগলি )
চন্দননগরে ১৩৫ বিঘা জমির উপর গড়ে উঠেছে ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক। অন্য নাম এমডিএ পার্ক।
অছিপুর (দক্ষিণ ২৪ পরগনা)
হুগলি নদীর তীরে চিনাদের এই পরিচিত তীর্থস্থানে পিকনিকের জায়গার কোনও অভাব নেই।
নীলদীপ গার্ডেন (দক্ষিণ ২৪ পরগনা)
বারুইপুরে অবস্থিত নীলদীপ পিকনিক গার্ডেন। বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য আদর্শ এই বাগান।
টাকি
উত্তর ২৪ পরগনায় অবস্থিত ছোট্ট একটা জায়গা। কলকাতা থেকে দুরত্ব ১১৩ কিলোমিটার। একটু এগোলেই রয়েছে মাছরাঙা দ্বীপ।
বকখালি
দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানার পাশে অবস্থিত বকখালিও কিন্তু ঘুরে আসতে পারেন। কলকাতা থেকে দূরত্ব ১২৫ কিলোমিটার।