ভালোবাসা কখনো কোনো বাধা মানে না। সে চঞ্চল! নিজের উত্তাল-উদ্যম গতিতেই সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে এগিয়ে চলে। অনেকটা যেন ঠিক নদীর মত! যে নদী “আপন বেগেই পাগল পারা”! ভালবাসার কোনও জাত হয় না। হয় না কোনও ধর্ম। ভালোবাসার সঙ্গে পার্থিব জগতের যেন কোনও যোগাযোগই নেই। প্রেম স্বতন্ত্র। এইজন্যেই প্রেমী মন ভালোবাসার মাধ্যমেই স্বর্গীয় সুখ খুঁজে পায়। ভালোবাসায় কখনো কোনও ব্যবসা চলে না। জাত-পাত, ফর্সা-কালো, মোটা-রোগা লম্বা-বেঁটে দেখে কখনো প্রেম হয় না। যদি তেমনটা হয় তাহলে ধরেই নিতে হবে, এই অনুভূতি কেবল একটি আকর্ষণমাত্র, যা ক্ষণস্থায়ী এবং ক্ষণভঙ্গুরও বটে। দুটি মানুষের মধ্যে মনের মিল না হলে সেই সম্পর্ক স্থায়ী হয় না।
আধুনিক প্রজন্মের কাছে ভালোবাসার নতুন সংজ্ঞা দিয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্র জগতের দুই জনপ্রিয় শিল্পী, সপ্তর্ষি এবং সোহিনীর জুটি। ২০১৩ সোহিনী সেনগুপ্ত (Sohini Sengupta) এবং সপ্তর্ষি মৌলিক (Saptarshi Maulik) বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। তার আগে বেশ কিছুদিন প্রেম সম্পর্ক ছিল তাদের মধ্যে। তাদের ভালোবাসার গল্পটাও যেন এক রূপকথা। বাস্তবে এমন ঘটনা অনেক কমই শোনা যায়।
সপ্তর্ষি এবং সোহিনী, দুজনের মুখই ছোটপর্দায় অতি পরিচিত মুখ। সপ্তর্ষি বর্তমানে স্টার জলসার (Star Jalsha) জনপ্রিয় ধারাবাহিক “শ্রীময়ী”তে প্রধান চরিত্রের ছোট ছেলে “ডিঙ্কা”র ভূমিকায় অভিনয় করছেন।
এদিকে সোহিনীও ওই একই চ্যানেলের অপর একটি ধারাবাহিক “খড়কুটো”য় “পুটু পিসি”র চরিত্রে অভিনয় করছেন। তাদের দুজনের অভিনয়ই দর্শকের নজর কেড়েছে। কিন্তু জানেন কি সপ্তর্ষি সোহিনীর থেকে বয়সে অন্তত ১৫ বছরের ছোট?
১৫ বছরের বড় শিক্ষিকা এবং নাট্যকর্মী সোহিনীকেই জীবন সঙ্গিনী হিসেবে নির্বাচন করেন সপ্তর্ষি। একই নাট্য থিয়েটারে কাজ করতেন তারা। সপ্তর্ষি সোহিনীর থেকে জুনিয়র ছিলেন। তবে একই নাটকের থিয়েটারে কাজ করতে করতে সোহিনীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন সপ্তর্ষি।
সোহিনীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল নাট্য ব্যক্তিত্ব গৌতম হালদার (Gautam halder)-এর। কিন্তু 2006 সালে তাঁদের ডিভোর্স হয়ে যায়। সোহিনী এরপর বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি তাঁর কেরিয়ারে মনোনিবেশ করেছিলেন। তার পাশাপাশি নাটকের ওয়ার্কশপ করাতেন সোহিনী।
এইরকম একটি ওয়ার্কশপে সোহিনীর ছাত্র হয়ে এসেছিলেন সপ্তর্ষি মৌলিক (saptarshi moulik)। সোহিনীর থেকে বয়সে চৌদ্দ বছরের ছোট সপ্তর্ষি ক্রমশ সোহিনীর প্রেমে পড়ে যান সোহিনীর অভিনয় দেখে। সপ্তর্ষি সোহিনীকে তাঁর মনের কথা জানালে সোহিনী রাজি হননি। তাঁর মনে প্রথম বিয়ের অভিজ্ঞতা রেশ রেখে গিয়েছিল।
কিন্তু সপ্তর্ষি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন সোহিনীর বাবা রুদ্রপ্রসাদের কাছে। সপ্তর্ষির নম্র ব্যবহার জিতে নিয়েছিল রুদ্রপ্রসাদের মন। অবশেষে রুদ্রপ্রসাদ ও স্বাতীলেখা সোহিনীকে বুঝিয়ে বিয়ের জন্য রাজি করিয়েছিলেন।