বালিশ-বিছানা নেই, নেই পাখাও, সামান্য একটা মাদুরে শুয়েই বাইকুল্লা জেলে দিন কাটাচ্ছেন রিয়া চক্রবর্তী। গত মঙ্গলবার গ্রেফতার হয়েছেন রিয়া। পরের দিন বুধবার সকালে মুম্বইয়ের এই মহিলা জেলে আনা হয়েছে তাঁকে।
শুক্রবার তৃতীয়বারের জন্য রিয়ার জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। তার আইনজীবী জানিয়েছেন তারা এবারে বোম্বে হাইকোর্টে আবেদন জানাবেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি অনুযায়ী ২২শে সেপ্টেম্বর অব্দি রিয়া থাকছেন বাইকুল্লা জেলেই।
তবে তিনি সেলিব্রেটি হলেও তাকে রাখা হয়েছে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে। অন্যদের থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে একটি অন্য সেলে রাখা হয়েছে তাকে। সব সময় তার সঙ্গে দুজন করে রক্ষী রয়েছেন।
জেলের কর্তৃপক্ষ জানান রিয়াকে ঘিরে জনসাধারণের মনে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে অন্যদের সঙ্গে রাখলে রিয়ার চরম বিপদের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। তাই রিয়ার সুরক্ষার জন্যই রিয়াকে অন্যদের থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদ মধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, জেলের মধ্যে রাখা হয়নি কোনও সিলিং ফ্যান, রাখা হয়নি বালিশ বিছানা। শুধুমাত্র একটি চাটাই মাদুর পেতে রাখা হয়েছে।
রিয়া যাতে সেলের মধ্যে কোনও এমন কাজ করে না বসেন যাতে অঘটন ঘটে সেই কারণে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তবে জেলে তরফ থেকে জানা গেছে আদালত অনুমতি দিলে তারা একটি টেবিল ফ্যানের ব্যবস্থা করতেই পারেন রিয়ার জন্য।
জেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, দু’একটি পোশাক, টুথ ব্রাশ-পেস্ট এবং কয়েকটি জরুরি সামগ্রী ছাড়া রিয়ার সঙ্গে কিছুই নেই। খাওয়ারে থাকছে নিরামিষ তরকারি আর রুটি। করোনাভাইরাসের কারণে প্রত্যেক বন্দিকেই ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য দুধ ও হলুদ দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন : রিয়ার উত্তরে সন্তুষ্ট নয় CBI, পলিগ্রাফি টেস্টের সম্ভাবনা, পলিগ্রাফি টেস্ট কী?
বাইকুল্লা জেল মুম্বইয়ের একমাত্র মহিলাদের জন্য জেল। রিয়ার পাশের সেলেই রয়েছেন শিনা বরা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়। এই জেলেই বন্দি ভীমা-কোরেগাঁও মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সমাজকর্মী সুধা ভরদ্বাজ-ও।
অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুতে মাদক যোগের ঘটনায় গত মঙ্গলবার রিয়াকে গ্রেফতার করেছিল নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। যদিও এই মৃত্যু রহস্যের কিনারা এখনো করা যায়নি তবে সুশান্তকে মাদক দিতেন রিয়া এই অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় রিয়াকে।
আরও পড়ুন : আগে সেক্স তারপর ট্যালেন্ট, টলিউডে কাজ পেতে শুতে হয় ছেলেদেরও
রবিবার থেকে মঙ্গলবার অব্দি টানা তিনদিন জেরা করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছিল একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সন্ধ্যায় তাকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে জাজের সামনে পেশ করা হয়। চোদ্দো দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।সেদিন রাতে রিয়া ছিলেন এনসিবির দপ্তরে। পরেরদিন তাকে বাইকুল্লা জেলে চালান করা হয়।
আরও পড়ুন : বলিউডে মাদক চক্রে জড়িয়েছেন এই ১৫ অভিনেতা-অভিনেত্রী
এর মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ পাওয়ার পরপরই জামিনের আবেদন করেছিলেন রিয়ার আইনজীবী। যদিও সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। চোদ্দো দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে এখন রাখা হবে রিয়াকে। এরপরও একবার জামিনের আবেদন করেন রিয়া। কিন্তু সেটিকেও খারিজ করে তাকে জেলে পাঠানো হয়। আপাতত বাইশে সেপ্টেম্বর অব্দি তিনি ওই জেলেই থাকবেন বলে জানা গেছে।