কত টাকার সম্পত্তি রেখে গেলেন লতা মঙ্গেশকর, কে হবে এই সম্পত্তির মালিক

গতকাল কন্ঠ হারাল ভারতবর্ষ। সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের (Lata Mangeshkar) প্রয়াণে মন খারাপ আসমুদ্র হিমাচলের। সুরের সম্রাজ্ঞী তিনি, তাকে ভারতবর্ষের নাইটিঙ্গেল উপাধি দেওয়া হয়েছিল। কত শত মানুষের প্রেরণা, তাকে সরস্বতী জ্ঞানে পূজো করতেন তার ভক্তরা। বসন্ত পঞ্চমী তিথির শেষে মা সরস্বতীর সঙ্গেই যেন বিসর্জন হল সুর সম্রাজ্ঞীর। মৃত্যুর পরেও তিনি আজীবন বেঁচে থাকবেন ভক্তদের মনে। লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুর পর তার সম্পর্কে বহু অজানা তথ্য উঠে আসছে।

এক অতি সাধারণ পরিবারে জন্ম হয়েছিল তার। তার বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর নাট্যমঞ্চের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সেই সুবাদে তিনি মেয়েকে খুব কম বয়সেই নাটক এবং গানের দুনিয়াতে নিয়ে আসেন। লতা সেই সময় থেকেই তার দিদিমার কাছে লোকগানের তালিম নিতে শুরু করেন। তখন তিনি বিভিন্ন মঞ্চে গান গাইতেন। এভাবেই গান গাইতে গাইতে তিনি তার জীবনের প্রথম উপার্জন করলেন গান গেয়ে। লতা তখন নেহাত কিশোরী। তখন তার বয়স মাত্র ১৩ বছর। সেই সময় গান গেয়ে তিনি প্রথম ২৫ টাকা উপার্জন করতে পেরেছিলেন।

এরপর তার জীবনে নতুন মোড় আসে। তিনি পাড়ি দেন বলিউডে। বাকিটা ইতিহাস। প্রথমে অবশ্য গলার সুর মিহি বলে তাকে বাতিল করে দিয়েছিলেন সঙ্গীত পরিচালক। পরে সেই মিহি গলার সুরের জাদুতেই মুগ্ধ হয় গোটা বিশ্ব। অধ্যাবসায় আর নিষ্ঠার জোরে ভারতরত্ন উপাধি পেয়েছিলেন তিনি। জীবনে যার প্রথম উপার্জন ছিল ২৫ টাকা, তিনি ধীরে ধীরে ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি অর্জন করে ফেলেন নিজের প্রতিভার জোরে। তবে তার সম্পত্তির মোট পরিমাণ নিয়ে বহু জল্পনা রয়েছে।

কেউ কেউ দাবি করেন, জীবনের শেষ ভাগে তার মাসিক উপার্জন ছিল ৪০ লক্ষ টাকা। বছরে তিনি ৬ কোটি টাকা উপার্জন করতেন। তার গানের রয়্যালিটি থেকে তার এই উপার্জন হত। কারও দাবি, সুরের দেবীর সম্পত্তির মোট পরিমাণ ছিল ৩৭০ কোটি টাকা। তবে সেই সম্ভাবনা নস্যাৎ করে দিয়ে কেউ দাবি করেন অত সম্পত্তি না থাকলেও ১০৭-১১৫ কোটি টাকার সম্পত্তি তার কাছে ছিল। এখন প্রশ্ন হলো সন্তানহীন এই তারকার এই সম্পত্তি কে পাবেন? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। দ্রুতই হয়তো এই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলবেন তার আইনজীবী। তবে শোনা যাচ্ছে তার ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর এই সম্পত্তির মালিক হবেন।

আরও পড়ুন :- কাজ নিয়ে শত্রুতা, বন্ধ মুখ দেখাদেখি! আশার কীর্তি মেনে নিতে পারেননি লতা

১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি সম্পদের মালিক হলেও তিনি নিতান্তই সাধারণ জীবনযাপন করতেন। তবে একটি বিষয়ে তার দুর্বলতা ছিল। গাড়ি নিয়ে তিনি ছিলেন বেজায় শৌখিন। তার বাড়ি প্রভুকুঞ্জে নামিদামি ব্র্যান্ডের গাড়ি রয়েছে। তিনি নিজেও একাধিক সাক্ষাৎকারে গাড়ির প্রতি তার দুর্বলতার কথা স্বীকার করেছেন। লতা জানিয়েছিলেন, কেরিয়ারের একেবারে শুরুর দিকে তার কাছে ছিল একটি শেভারলে গাড়ি। তিনি ইন্দোর থেকে নিজের মায়ের নামে গাড়িটি কিনেছিলেন। তাছাড়াও তার গ্যারেজে বুইক এবং ক্রিসলার কোম্পানির গাড়িও ছিল। এরপর যশরাজের তরফ থেকে একটি মার্সিডিজ গাড়িও উপহার দেওয়া হয়েছিল তাকে।

আরও পড়ুন :- কার জন্য আজও অবিবাহিত লতা মঙ্গেশকর, নেপথ্যে এক অসম্পূর্ণ প্রেমকাহিনী