খড়গপুর আইআইটির ছাত্র এখন দুঁদে IPS, পাচারের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন ৫৫০ নারীকে

খড়গপুর আইআইটির কৃতী ছাত্র রাজ তিলক রৌশন। পাঁচ বছর উঁচু পদে কাজ করেছেন প্রাইভেট সেক্টরে। দেশে এবং বিদেশেও। কোটিরও বেশি বেতন পেতেন। কিন্তু একদিন মোহভঙ্গ হল। চাকরি ছেড়ে দিলেন। তাঁর নিজের কথায়, ‘আমি তখন প্রফেশনাল কেরিয়ারের শীর্ষে। হঠাত একদিন আমার মন আমাকে বলল, দেশের জন্য কি করলে রাজ? প্রস্তুতি নিয়ে আইপিএস হয়ে গেলাম, রাস্তায় নেমে কাজ করব বলে।’

চাকরি করতে এলেন পালঘরে। সেখানে তখন রমরমিয়ে চলছে শিশুপাচার। হারিয়ে যাওয়া শিশুদের খুঁজে পাওয়ার হার শঙ্কাজনক ভাবে কম। শুরু করলেন তদন্ত। দেখলেন নথিবদ্ধ তথ্যে অনেক খামতি এবং গাফিলতি। পুলিশ মহলের অনীহাও নজর এড়াল না তাঁর। নিজের মেধা ব্যবহার করেই রাজ তৈরি করলেন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর বা এসওপি। যার সাহায্যে সময়ের অপচয় ছাড়াই দ্রুত নারী ও শিশু পাচারের তদন্ত করা সম্ভব।

রাজ মনে করেন, নিজের বাড়ির মা-বোন বা শিশু হারিয়ে গেলে যে তৎপরতা দেখা যায়, সেই উৎসাহে করতে হবে তদন্ত। শিশু পাচারকে প্রথম থেকেই হিউম্যান ট্রাফ্যাকিংয়ের নিরিখে দেখতে হবে পুলিশকে। কোনও অঞ্চল থেকে একটি মেয়েকে উদ্ধার করা গেলে, সেখানে বারবার রেইড করতে হবে। রাজের পদ্ধতিতেই মহারাষ্ট্রের সবচেয়ে কুখ্যাত মানবপাচার গ্যাংটি ধরা পড়েছে। বাংলাদেশ থেকে ৫০০ জন নাবালিকাকে পাছার করছিল তারা।

নিজের এলাকার স্কুলগুলিতে পুলিশের টিম পাঠিয়ে নিয়মিত ‘গুড টাচ’ ‘ব্যাড টাচ’ বোঝানোর ব্যবস্থা করেছেন রাজ। বিভিন্ন কুখ্যাত ও জনবহুল এলাকায় তিনি ছদ্মবেশী মহিলা পুলিশ পাঠান যাতে টোপ ফেলে শিশু ও নারী পাচারকারীদের ধরা সহজ হয়। শুধু তাই নয়, নাবালিকাদের উদ্ধারের পর তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতেও সবরকমের চেষ্টা চালায় রাজের টিম।