২০০ টির বেশি দেশ করোনার ত্রাসে আতঙ্কিত। বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলি করোনার মোকাবিলা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। একবিংশ শতাব্দীতে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি হলেও এখনও পর্যন্ত করোনার কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। পর্যাপ্ত বেড, ভেন্টিলেশনের অভাবে ধুঁকছে বেশ কয়েকটি দেশ। করোনার প্রকোপে বাদ যায়নি ভারত। এখনও পর্যন্ত ভারতে ৫২৭৪ জন করোনায় আক্রান্ত। মারা গিয়েছেন ১৪৯ জন। করোনার মোকাবিলা করতে দেশের কাছে এখন একটাই অস্ত্র ‘লকডাউন’। আগামী ১৪ই এপ্রিল নমোর ঘোষিত লকডাউনের মেয়াদ শেষ হলে যে আবারও আরেক দফায় লকডাউন চলবে এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মোদী।
ঘরবন্দী মানুষ এই অস্বাভাবিক জীবনযাপনে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কীভাবে এই করোনা নিয়ন্ত্রনে আনা যায় এ নিয়ে তৈরী হচ্ছে জল্পনা। অনেকে বলছেন, উষ্ণতা বাড়লেই কাবু হয়ে পড়বে করোনা। এদিকে শীত কাটিয়ে গরম পড়তে শুরু করেছে ভারতে। এখন প্রশ্ন তাহলে কি উষ্ণতা দিয়েই ভারত করোনাকে প্রতিহত করতে পারবে!
আরও পড়ুন :- আপনার জেলার কোন কোন হাসপাতালে হচ্ছে করোনার চিকিত্সা
এদিকে পশ্চিমবঙ্গেও বাড়ছে তাপমাত্রা। ভারতেও কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি। তাহলে কি খুব তাড়াতাড়ি করোনার থেকে মুক্তি মিলবে? ডাক্তার রনদীপ গুলেরিয়া বলছেন, গরমে করোনা মরে যায় ঠিকই কিন্তু স্বস্তির কোনো কারণ নেই। করোনা নিজের চরিত্র বদলাচ্ছে ফলে এখনই নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।
প্রশ্নের উত্তর দিলেন দিল্লীর এমস্ হাসপাতালের ডিরেক্টর ও কেন্দ্র সরকার গঠিত করোনা মোকাবিলা কমিটির সদস্য রনদীপ গুলেরিয়া। রনদীপ গুলেরিয়া এদিন জানান। প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে করোনা ভাইরাস অতিরিক্ত গরমে বেঁচে থাকতে পারে না। ৪০ ডিগ্রির বেশী তাপমাত্র হলে করোনার বেঁচে থাকা অসম্ভব।
আরও পড়ুন :- জ্বর সর্দি গলাব্যাথা নয়, করোনা সংক্রমনে দেখা যাচ্ছে ৫টি নতুন লক্ষণ
ডাক্তার গুলেরিয়ার মতে, বাড়িতে ও বাইরের তাপমাত্রায় হেরফের হয়। বাড়িতে বা অফিসে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ এসিতে থাকেন। ফলে বাইরের তাপমাত্রা বেশি হলেও বাড়িতে বা অফিসেই করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকছে। আমরা সারাক্ষন বাইরে থাকি না যে করোনা সংক্রমন করলেও তা গরমে ধ্বংস হয়ে যাবে। ফলে এখন সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষকরা হোয়াইট হাউসে পাঠানো একটি চিঠিতে বলেছেন, উষ্ণ আবহাওয়ায় ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া বন্ধ হবে কিনা সে বিষয়ে মিশ্র তথ্য রয়েছে। চিঠিতে বলেছেন, ‘এমন কিছু প্রমাণ রয়েছে যে, গরম ও আর্দ্রতাপূর্ণ পরিবেশে ভাইরাসটির সংক্রমণ কমে যায়। তবে, বিশ্বজুড়ে মানুষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতার যে ঘাটতি রয়েছে তাতে ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা কমলেও রোগের বিস্তার উল্লেখযোগ্য হারে কমবে না।’ চিঠিতে গবেষকরা চীনে করোনা প্রাদুর্ভাবের একটি সমীক্ষা তুলে ধরেছেন, যেখানে দেখা যায় যে- উষ্ণ ও আর্দ্র পরিস্থিতিতেও ভাইরাসটি ‘তীব্রভাবে’ ছড়িয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন :- হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কি, এই ওষুধ দিয়ে কি করোনা আটকানো সম্ভব
যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়ে দিয়েছেন, গরম পড়লেই করোনা ভাইরাস ধ্বংস হয়ে যাবে এই ধারণা ভুল। তাঁদের মতে এখনও এমন কোনো প্রমান মেলেনি। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চও বলছেন, গরম করোনার হাতিয়ার এর স্বপক্ষে কোনো প্রমান পাওয়া যায়নি। এমনকি আইসিএমআর এর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপমাত্রার সাথে করোনার কোনো সম্পর্ক নেই।