ভারতীয় টেলিকম বাজারে এয়ারটেল প্রথম টেলিকম সংস্থা হিসাবে নিয়ে এসেছিল Wi-Fi কলিং পরিষেবা। তারপর এয়ারটেলের এই পরিষেবাকে টেক্কা দিতে জিও বাজারে নিয়ে আসে জিও VO Wi-Fi কলিং পরিষেবা। রিলায়েন্স জিও ভারতে প্রথম VOLTE বা ভয়েস ওভার এলটিই প্রযুক্তি নিয়ে এলেও Wi-Fi কলিং প্রথম নিয়ে এসেছে এয়ারটেল। কিন্তু এই Wi-Fi কলিং পরিষেবা সম্পর্কে আমরা কতটা ধাতস্থ বা কতটা জানি?
Wi-Fi কলিং পরিষেবার সুবিধা
ঘরের মধ্যে ভালো করে নেটওয়ার্ক থাকে না, শান্তিতে ঠিকঠাক কথা বলতে পারেন না, তাহলে আপনার স্মার্টফোনে যদি Wi-Fi কলিং পরিষেবার অপশন থাকে তাহলে এক্ষুনি তা অন করে নিন। আর তাতে আপনি যে কোন Wi-Fi ব্যবহার করেই নিশ্চিন্তে নির্বিঘ্নে কল করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে আলাদা করে কোনো রকম মূল্য দিতে হবে না, সম্পূর্ণটাই আপনার স্মার্টফোনে থাকা সিম কার্ডের রিচার্জ ও ভ্যালিডিটির উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ এই পরিষেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। আর ভারতে Jio ও Airtel এই দুই টেলিকম সংস্থা এই পরিষেবা দিয়ে থাকে।
Wi-Fi কলিং পরিষেবা আসলে কি?
Wi-Fi কলিং পরিষেবা হলো একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত সুবিধা, যার মাধ্যমে মোবাইল ব্যবহারকারীরা যেকোনো Wi-Fi-এর উপস্থিতিতে কল করা ও কল রিসিভ করতে পারেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, আপনার মোবাইল নম্বর থেকেই এই কল যায় ও আসে। অনেকে ভাবতে পারেন হয়তো Wi-Fi কলিং করলে নম্বর যাবে না, কিন্তু তেমনটা নয়।
এই পরিষেবা কোথায় কোথায় উপলব্ধ?
বিভিন্ন টেলিকম সূত্র থেকে এ অবধি যেটুকু জানা যায়, তাতে রিলায়েন্স জিও তিনটি টেলিকম সার্কেল কেরল, মহারাষ্ট্র ও কলকাতার (পশ্চিমবঙ্গ) গ্রাহকদের জন্য Vo Wi-Fi পরিষেবা চালু করেছে। অন্যদিকে, এয়ারটেল দিল্লি এনসিআর, অন্ধ্র প্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, মুম্বাই ও কলকাতার গ্রাহকদের জন্য Wi-Fi কলিং পরিষেবা চালু করেছে।
Wi-Fi কলিং পরিষেবা ব্যবহার করবেন?
মোবাইলে সিমকার্ড থাকলে কল হয় কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ট্রেনে বা বাসে বা অন্যান্য যানবাহনে যাতায়াতের সময় অথবা কোন বড় বিল্ডিং বা প্রত্যন্ত গ্রামে নেটওয়ার্ক ঠিকঠাক থাকে না। সেখানে এই Wi-Fi কলিং পরিষেবা অত্যন্ত লাভজনক। সেলুলার সিগন্যাল কম থাকলেও Wi-Fi কলিং পরিষেবার মাধ্যমে ঠিকঠাক কথা বলতে পারবেন।
এর জন্য কি করতে হবে?
Wi-Fi কলিং পরিষেবা উপভোগ করতে গেলে আপনার স্মার্ট ফোন অবশ্যই Wi-Fi কলিং পরিষেবা যুক্ত হতে হবে। আপনার স্মার্ট ফোনের সিম কার্ড অবশ্যই ৪জি হতে হবে। পাশাপাশি সিম কার্ডের সক্রিয় প্ল্যান থাকতে হবে।
Wi-Fi কলিং কীভাবে চালু করবেন?
প্রথমেই দেখে নিতে হবে আপনার স্মার্টফোন Wi-Fi কলিং পরিষেবা সাপোর্ট করে কিনা। যদি সাপোর্ট করে তাহলে প্রথমে আপনার ফোনের ‘Settings’ অপশনে যেতে হবে। তারপর যেতে হবে ‘Call Settings’ অপশনে। Wi-Fi কলিং অপশন সার্চ করুন। এবার সামনে আসা টোগলকে এনাবল করুন। যদি আপনার ফোনে এই অপশন না আসে তাহলে Jio Vo Wi-Fi বা Airtel Wi-Fi কলিং আপনার ফোনে সাপোর্ট করবে না।
আরও পড়ুন :- Jio র ইন্টারনেট স্পিড ৩ গুণ বাড়িয়ে নিন সেটিং বদল করেই
সেটিংস পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার পর আপনি আপনার স্মার্টফোনটিকে যেকোনো Wi-Fi এর সাথে সংযুক্ত করুন। নির্বিঘ্নে কল করার মত পরিষেবা উপলব্ধ করতে হলে Volte ও Wi-Fi কলিং পরিষেবা দুটি একসাথে অন রাখুন। এরপর আপনাকে কোন কিছু করতে হবে না। আপনি যেমন ভাবে কল করেন সেভাবেই করুন।
কল করার সময় ডায়াল নম্বরের পাশে একটি Wi-Fi সিম্বল দেখতে পাবেন। ইচ্ছামত আপনি এই পরিষেবা অফ অথবা অন করতে পারবেন। তবে আপনার স্মার্টফোনও নিজে থেকেই প্রয়োজনমতো Wi-Fi কলিং মোড বা Cellular Network মোডে কল করার মাধ্যম পরিবর্তন করে নেবে।
কোন কোন ফোনে Vo Wi-Fi কল করা যাবে?
সব রকম Apple iPhone-এ, Samsung Galaxy Note 10, Galaxy S10, Samsung Galaxy M20, Galaxy A70, Redmi K20, Redmi K20 Pro ও Poco F1। এই পরিষেবার জনপ্রিয়তা দিন দিন এতটাই বেড়ে চলেছে যে আগামী দিনে প্রায় সমস্ত রকম স্মার্টফোনে এই Wi-Fi কলিং পরিষেবা সংযুক্ত করা হবে বলে টেক দুনিয়ার খবর।