Ravana`s Daughter : ভারতবর্ষের আদি মহাকাব্য রামায়ণ (Ramayan)। সারা বিশ্বের সব থেকে পুরনো মহাকাব্য হিসেবে ধরা হয় রামায়ণকে। এই গোটা পৃথিবীতে ভগবান শ্রী রাম (Sri Ram) -র অনেক ভক্ত রয়েছেন। বাল্মিকীরচিত রামায়ণ ছাড়াও ভারতবর্ষে আরও অন্যান্য লেখকের বিভিন্ন সংস্করণ পাওয়া যায় রামায়ণ নিয়ে। তবে রাম-রাবণের গল্প শুধু ভারতে নয়, ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কাতেও কিন্তু প্রচলিত আছে।
আসলে রামায়ণের একটা বড় ঘটনাক্রম যে জড়িয়ে আছে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। শ্রীলঙ্কাতেই ছিল রাবণের বাস। থাইল্যান্ড (Thailand) -র রামকিন রামায়ণ (Ramkin Ramayan) এবং কম্বোডিয়া (Kambodia) -র রামকার রামায়ণ (Ramkar Ramayan) -ও কিন্তু বেশ জনপ্রিয়। ভারতীয় রামায়ণে রাম, লক্ষণ, সীতা, রাবণ, হনুমান (Hanuman) ছাড়াও আরও নানা চরিত্রের উল্লেখ রয়েছে। তবে থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার রামায়ণে রাবণকন্যা সুবর্ণমৎস্য (Suvarnamatsya) বা সুবর্ণমাছের উল্লেখ পাওয়া যায়।
আসলে এই দুটি সংস্করণে দাবি করা হয় রাবণের তিন স্ত্রী ছিলেন এবং তাদের আট সন্তান ছিলেন। রাবণের সন্তানদের মধ্যে সাতজন পুত্র এবং একজন কন্যা। রাবণের একমাত্র কন্যার নাম সুবর্ণমৎস্য, যিনি দেখতে খুবই সুন্দর ছিলেন। সুবর্ণমৎস্য কথার আক্ষরিক অর্থ সোনার মাছ। রাবণ কন্যার শরীরের অর্ধেকটা ছিল মানুষের মত, বাকি অর্ধেকটা মাছের মত ছিল।
থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়াতে আজও রাবণের মেয়েকে সোনার মৎস্যকন্যা হিসেবে পূজা করা হয়। সীতাকে উদ্ধার করার জন্য রাবণের সঙ্গে লড়ে লঙ্কা জয় করার উদ্দেশ্যে শ্রীরাম সমুদ্রের উপর সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু রাবণ তার এই পরিকল্পনার সিদ্ধ হতে দিতে রাজি ছিলেন না। তাই তিনি সুবর্ণমৎস্যকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন যাতে সেতু না তৈরি হয়।
সেই মত বাবার অনুমতিতে সাগরে ছোড়া সমস্ত পাথর সুবর্ণমৎস্য বিলীন করে দিতে থাকেন। ঘটনাটি হনুমানজির নজরে পড়ে। তিনি সমুদ্রে গিয়ে দেখেন এক মৎস্যকন্যা পাথরগুলি সরিয়ে ফেলছে। কথিত আছে সুবর্ণমৎস্য হনুমানজিকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে তার প্রেমে পড়ে যান। হনুমানজি তখন তাকে প্রশ্ন করেন, “হে দেবী তুমি কে?” উত্তরে নিজের পরিচয় দেন রাবণকন্যা।
আরও পড়ুন : রাম-সীতা থেকে লক্ষণ, হনুমান, রাবণ, বাস্তবে কেমন দেখতে ছিলেন রামায়ণের চরিত্ররা? দেখুন ছবি
হনুমানজি এরপর তাকে তার বাবার অন্যায় কাজের কথা বুঝিয়ে বলেন। সুবর্ণমৎস্য সবটা বুঝতে পেরে শিলা ফেরত দেন। এরপরই রামসেতু নির্মাণ কার্য শুরু হয়। তবে ভারতীয় রামায়ণে অবশ্য রাবণকন্যার উল্লেখ পাওয়া যায় না। কিন্তু থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মত জায়গায় আজও সুবর্ণমাছের পূজোর প্রচলন রয়েছে।
আরও পড়ুন : বাংলার এই গ্রামে ৫০০ বছর ধরে প্রতিটি বাড়িতে রামের জন্ম হচ্ছে