রাজীব কুমার কে? রাজীব কুমারের জন্য মমতা ব্যানার্জী ধর্ণা দিচ্ছেন কেন?

কলকাতার পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে রবিবার সিবিআই হানা দেওয়া নিয়ে তোলপাড় হয়ে গিয়েছে শহর। পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের সিবিআই হানার প্রতিবাদে রবিবার রাত থেকে ধর্নায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাত থেকেই মেট্রো চ্যানেলে মমতার ধর্না মঞ্চের সামনে ভিড় জমান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। সোমবার সকালেও সেই ভিড় বজায় থেকেছে। সিবিআই হানার প্রতিবাদে সোমবার দুপুর ২টো থেকে ৪টে পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে মিছিল করবে তৃণমূল। কেন রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করতে চাইছে সিবিআই?

সিবিআই জয়েন্ট ডিরেক্টর পঙ্কজ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, “চিট ফান্ড কাণ্ডে খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রমাণ আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। হতে পারে, সে সব ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আমরা তদন্তকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। চিট ফান্ড কাণ্ডের সঙ্গে যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের যোগ রয়েছে, সেটাকে খুঁজে বার করবই আমরা। কলকাতার নগরপাল চিটফান্ড দুর্নীতির তদন্তে তথ্য প্রমাণ নষ্ট করতে পারেন।”

রাজীব কুমার কে?

কলকাতার ৩৯ তম নগরপাল রাজীব কুমার ১৯৮৯ ব্যাচের আইপিএস আধিকারিক। ২০১৬ সালে কলকাতার পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন রাজীব কুমার। প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার সুরজিত কর পুরকায়স্থ সিআইডি-তে চলে যাওয়ার পর তাঁর জায়গায় আসেন রাজীব কুমার। এর আগে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে জন্ম রাজীব কুমারের। দেশের সেরা প্রকৌশল কলেজগুলির অন্যতম কানপুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা আইআইটি’র ছাত্র ছিলেন মি. কুমার। কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে স্নাতক হয়ে তারপরে তিনি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়ে ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস বা আইপিএস অফিসার হন ১৯৮৯ সালে। যোগ দেন পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারে।

পুলিশের কাজে মি. কুমার তার প্রকৌশল বিদ্যা ব্যাপকভাবে কাজে লাগানোর জন্য পরিচিত। একের পর এক তদন্তে তিনি ইলেকট্রনিক সার্ভেল্যান্স চালিয়ে অপরাধীদের ধরতে সক্ষম হয়েছেন। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের প্রধান থাকাকালীনই ২০১৩ সালে সারদা চিটফান্ড মামলা সামনে আসে। মি. রাজীব কুমারের নেতৃত্বাধীন বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। এরপরে কলকাতার পুলিশ কমিশনার হন রাজীব কুমার।

কেন রাজীব কুমারকে গ্রেপ্তার করতে চায় সিবিআই?

সারদাকাণ্ডের তদন্তে নেমে সুদীপ্ত সেনের অফিস থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন রাজীব কুমারের নেতৃত্বাধিন সিট। সিবিআইএর অভিযোগ, সুদীপ্ত সেনের অফিস থেকে ৫ টি মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছিল। কিন্তু সেই মোবাইল ও ল্যাপটপ থেকে উদ্ধার হওয়া তথ্য সিটের সদস্যরা সিবিআইকে জানাননি।

আরও পড়ুন ঃ কতদিন চলবে মমতার ধর্না? অনির্দিষ্টকাল?

শুধু উদ্ধার হওয়া মোবাইল কিংবা ল্যাপটপই নয়, সারদাকর্তার মুখে একাধিকবার উচ্চারিত  ‘লাল ডায়েরি’র ব্যাপারেও তাদের কিছু জানানো হয়নি। ওই লাল ডায়েরিতে এমন নেতা-নেত্রীর নাম লেখা রয়েছে, যাঁরা সারদা থেকে টাকা আত্মসাত্ করেছেন। এবিষয়ে রাজীব কুমারের কাছে একাধিকবার তলব করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। উলটে তদন্তে অসহযোগিতা ও বাধা সৃষ্টি করেছেন তিনি।