“নেপোটিজম’ তথা “স্বজনপোষণ”, প্রায় সব ক্ষেত্রেই কমবেশি আছে। তবে বলিউডে এই ইস্যুটি এক অন্য মাত্রা পেয়েছে বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর। বলিউডের এই নবীন প্রতিভাশালী শিল্পীর আচমকা রহস্য মৃত্যুর ঘটনা গোটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকেই যেন নাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছে। “নেপোটিজম’ নিয়ে মুখ খুলেছেন কঙ্গনা রানাওয়াত, উর্মিলা মাতন্ডকর, সুস্মিতা সেন, শ্রীলেখা মিত্রের মতো অভিনেত্রীরা। বলিউড, টলিউড; নেপোটিজম বিতর্কে আজও সরগরম।
যদিও এই বিতর্ক বহু পুরনো এবং ভবিষ্যতেও চলতে থাকবে। বিশেষত বলিউডে “স্টার কিড’ এবং “বহিরাগত’দের নিয়ে বিতর্ক কখনো শেষ হওয়ার নয়। গতবছর সুশান্ত সিং রাজপুতকে নিয়ে মেতে উঠেছিল নেট দুনিয়া। চলতি বছরে বলিউডের আরেক “আউটসাইডার” কার্তিক আরিয়ানকে নিয়েও সেই একই বিতর্ক দেখা দিচ্ছে।
বলিউডের চকলেট হিরো কার্তিক। তার হ্যান্ডসাম চেহারা মহিলাদের মন জয় করে নিয়েছে। তার অভিনয় দক্ষতাও বেশ ভালো। দর্শক তাকে বেশ পছন্দ করেন। ইতিপূর্বে, “পেয়ার কা পঞ্চনামা’, “লুকা ছুপি’, “সোনু কে টিটু কে সুইটি’, “আকাশ বাণী’, “লাভ আজ কাল’ এর মতো জনপ্রিয় সিনেমাতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাকে।
করণ জোহরের ধর্মা প্রোডাকশনের সঙ্গে ভবিষ্যতেও বেশ কিছু সিনেমার চুক্তি ছিল তার। সাম্প্রতিককালে জাহ্নবী কাপুরের বিপরীতে “দোস্তানা ২’ সিনেমায় নায়কের চরিত্রে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তবে ধর্মা প্রোডাকশনের সঙ্গে তার তাল কেটেছে।
কোনও এক অজ্ঞাত কারণে করণ জোহারের প্রোডাকশন এখন আর কার্তিককে দিয়ে ছবি করাতে রাজি নয়। “দোস্তানা ২” থেকে বাদ পড়েছেন কার্তিক। ভবিষ্যতেও করণ জোহার কার্তিকের সঙ্গে আর কোনও কাজ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে নেটদুনিয়ায় আবার ঝড় উঠেছে। কার্তিকের অনুরাগীদের বক্তব্য, করণ ইচ্ছাকৃতভাবে আবার বলিউডের “বহিরাগত” কার্তিকের সঙ্গে অন্যায় করছেন।
বলিউডের “নেপোটিজম” নিয়ে ইতিপূর্বে সেলিব্রিটিরাও বহু সওয়াল জবাব করেছেন। বিশেষত যারা সত্য সত্যই “স্টার কিড’, তারা বলিউডের “নেপোটিজম’ বিতর্ক মানতে নারাজ। তাদের দাবি “স্টার কিড’ বলেই যে অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা দেয় বলিউড এমনটা নয়। তাদের কেউ রীতিমতো পরিশ্রম করে নিজেদের জায়গা গড়ে তুলতে হয়েছে। এবার বলিউডের নেপোটিজম প্রসঙ্গে মুখ খুললেন কবীর বেদীর কন্যা পূজা বেদী।
পূজা মনে করেন, “একজন অভিনেতার কাজ পুরোটাই তাঁর ভাগ্য, যোগ্যতা ও অভিনয় ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। বলিউডে সবার জন্য সমান সুযোগ রয়েছে।’ নিজের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পূজা নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তিনি বলেন, “আমাকেও “মাসাবা মাসাবা’ শোয়ের জন্য অডিশন দিতে হয়েছিল। এভাবে স্বজন-পোষণের নাম করে কোনও অভিনেতা বা অভিনেত্রীর ছেলে-মেয়েকে দোষারোপ করা ঠিক নয়।’
বলিউডে “নেপোটিজম এবং আউটসাইডার’ বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে পূজা মনে করিয়ে দিয়েছেন শাহরুখ খান, প্রীতি জিন্টা, সুস্মিতা সেন, মাধুরী দীক্ষিত, ঐশ্বর্য রাইয়ের মতো সেলিব্রিটিদের কথা। যাদের পরিবারের সঙ্গে বলিউডের কোনও সংশ্রব ছিল না। তবুও তারা বলিউডে নিজেদের জায়গা করে নিতে পেরেছেন। দর্শকের মন জয় করতে পেরেছেন।
পূজা বলেন, তিনি এমন অনেকেই চেনেন যারা সেলিব্রিটি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্বেও বলিউডে নিজেদের জায়গা গড়ে তুলতে পারেননি। একটা কিংবা দুটো ছবি করেই গ্ল্যামার দুনিয়া থেকে হারিয়ে গিয়েছেন তারা।