দীর্ঘদিন ধরে এয়ারটেলের সাথে টাটা টেলিকম সার্ভিসের সংযুক্তিকরণের প্রস্তাব স্থগিত ছিল। তবে এবার সেই সংযুক্তিকরণে মিললো ছাড়পত্র। এয়ারটেলের সাথে জোট বাঁধার ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত পেল টাটা টেলিকম সংস্থা। সম্মতি দিলো কেন্দ্রীয় টেলিকম দপ্তর অর্থাৎ ডট। স্টক এক্সচেঞ্জে বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছে টাটা টেলিকম সংস্থা। এয়ারটেলের সাথে টাটা টেলিকম সার্ভিসের জোট বাঁধার সম্মতি মিলেছে গত ৬ই ফেব্রুয়ারি। এই সংযুক্তিকরণকে টেলিকম ব্যবসায়ী বড় সিদ্ধান্ত ও বড় জোট বলে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র।
প্রথম এয়ারটেলের সাথে জোট বাঁধার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল টাটা। আর সেই পরিকল্পনার কথা তারা ঘোষণা করেছিল। অন্যদিকে গত বছর জুলাইয়ের প্রথম দিনই ভারতী এয়ারটেল জানিয়েছিল টাটা টেলিকম সংস্থা এয়ারটেলের অংশ হতে চলেছে। কিন্তু তারপরেও কেবল ছিল সম্মতির অপেক্ষা। আর এই সংযুক্তিকরণের ক্ষেত্রে কেন্দ্র সময় নিলো প্রায় দু’বছর। কারণ এই সংযুক্তিকরণের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরোতে হয় সংযুক্ত হওয়া সংস্থাগুলিকে ও কেন্দ্রকে।
এয়ারটেলের সাথে টাটা সংযুক্তিকরণের আগে কেন্দ্রীয় টেলিকম দপ্তর এয়ারটেলকে ৭,০০০ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক গ্যারেন্টি ও ১,২৮৭.৯৭ কোটি টাকা তৎক্ষনাৎ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। টেলিকম বাজারে জিও আসার পর প্রতিটি টেলিকম সংস্থায় তাদের ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ব্যবসায় যেমন ক্ষতি হয়েছিল এয়ারটেলের ঠিক তেমনই ক্ষতি হয়েছিল টাটা টেলিকম সংস্থারও। প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা দেনার দায় হয়েছিল টাটার। কিন্তু তারা ব্যবসা বন্ধ করতে চায়নি। সে কারণে এয়ারটেলের সাথে নগদহীন শর্তে জোট বাঁধার পরিকল্পনা করে।
২০১৯ সালের ২ রা মে টিডিএসএটি টাটা টেলিকম সংস্থার সাথে ব্যবসায় জোট বাঁধার জন্য ভারতি এয়ারটেলকে টেলিকম বিভাগ ৮,২৮৭ কোটি টাকা স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। পরে টিডিএসএটির নির্দেশ মত ভারতী এয়ারটেল ৬৪৪ কোটি টাকা জমা দিয়েছে।
ভারতে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে টেলিকম বাজারে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে টাটা টেলিকম সংস্থা। তারাই প্রথম রিলায়েন্সের পাশাপাশি CDMA পরিষেবা নিয়ে এসে একচ্ছত্র বাজার দখল করেছিল। পরে টাটার সাথে জাপানি সংস্থা এনটিটি ডোকোমো ১৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে জোট বাঁধে। কিন্তু সেই প্রকল্পে লাভ না হওয়াই অবশেষে ২০১৪ সালে ডোকোমো সেই প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ায়। আর এবার এয়ারটেলের সাথে টাকার এই জোট বাঁধা রিলায়েন্স জিওকে বড়োসড়ো টেক্কা দেবে বলেই মনে করছেন টেলিকম বিশেষজ্ঞরা।