কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী প্রতিদিন ৫০,০০০ ফোন, মানুষের সেবায় রোজ ২২ ঘণ্টা জেগে সোনু

করোনাকালে দেশের আর্ত-নিপীড়িত মানুষের জন্য রীতিমতো “মসিহা” তথা দেবদূত হয়ে উঠেছেন  সোনু সুদ। বিগত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশজুড়ে দাপটের সঙ্গে বিরাজ করছে করোনা। দেশে করোনার প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়ার প্রাক মুহূর্ত থেকেই সোনু সুদ ঝাঁপিয়ে পড়েছেন সাধারণের উপকার করার জন্য। দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন তিনি। পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজেদের ঘরে ফেরানোর জন্য তার অবিরাম সংগ্রাম ভোলেনি সারাদেশ।

   

সেই সময় থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত সোনু এবং তার সহযোগীরা দেশের প্রতিটি প্রান্তের মানুষের জন্য অমানুষিক পরিশ্রম করছেন। কলকাতা থেকে শুরু করে কোলাপুর পর্যন্ত, কাশ্মীর থেকে শুরু করে কন্যাকুমারী পর্যন্ত, সারা দেশের প্রতিটি প্রান্তের মানুষের সমস্যার কথা শুনছেন তারা। সোনু জানাচ্ছেন, এই সংকটময় পরিস্থিতিতে তিনি এবং তার সহযোগীরা দিনে অন্তত ৫০ হাজার মানুষের সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন!

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাহায্যের আবেদন আসছে তার কাছে। তিনি এবং তার টিম যতটা সম্ভব সাধারণের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য জীবনদায়ী ঔষধের খোঁজে, করোনা আক্রান্তদের কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে দ্রুত চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দুরন্ত গতিতে কাজ করে চলেছেন সোনু এবং তার টিম।

এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সোনু বলেছেন, “সরকারও যে সাহায্য করছে না তা নয়, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম। প্রত্যেক মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। এখন সবার সকলকে প্রয়োজন।” রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে করোনা পীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার বক্তব্য, “আমি কী ভাবে এটা করতে পারছি জানি না। প্রতি দিন প্রায় ২২ ঘণ্টা ফোন কলে থাকি। আমার এবং আমার টিমের কাছে প্রতি দিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার ফোন কল আসে।”

সোনু আরও জানালেন, “আমার ১০ জনের একটা টিম রয়েছে যারা শুধু Remdesivir খোঁজে। আমার অন্যান্য টিম রয়েছে যাঁরা বেডের জন্য, অক্সিজেনের জন্য শহর চষে ফেলেন।সারা দেশের বহু চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে হয়। তাঁদের যা প্রয়োজন তা দ্রুত পৌঁছে দিতে হয়। যাঁরা আমাদের কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছেন, তাঁরা নিজে থেকেই আমাদের টিমের অংশ হিসাবে থেকে যান। আমি সারা দিনে যত সাহায্যের মেসেজ পাই, তা সব দেখতে গেলে ১১ বছর সময় লেগে যাবে”।

লড়াইয়ের ময়দানে থেকে কিছুতেই পিছু হটতে রাজি নন সোনু। তিনি বলেন, “আমাদের যুদ্ধ জারি রয়েছে। যতটা বেশি যতটা বেশি সংখ্যাক মানুষের প্রাণ বাঁচাতে হবে”। এই লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই কাজ করে চলেছে তার টিম। গত বছর থেকেই সোনুর হেল্পডেক্স ছাড়া ভারতবর্ষজুড়ে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করে চলেছে। দেশের যে প্রান্তের মানুষই হোন না কেন, সোনু তার সাধ্যমত সাহায্য নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Viral Bhayani (@viralbhayani)

 শুধু তাই নয়, এই কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য সোনুরও সাধারণের সাহায্য প্রয়োজন হয়। যে কারণে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্যের আবেদন নিয়ে পোস্ট করেন, “সারা ভারত বর্ষ থেকে সাহায্যের আবেদন আসছে। নিজেদের সাধ্যমত সকলকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি। এই সময় সকলে দয়া করে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসুন। আমাদেরও আরও সাহায্য প্রয়োজন। নিজেদের সাধ্যমত মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা করুন।”

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Sonu Sood (@sonu_sood)

 করোনা আক্রান্ত রোগী এবং তাদের পরিবারকে সাহায্য করার জন্য সোনু এবং তার টিম নিত্যনতুন স্ট্র্যাটেজি নিচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান, করোনা সম্পর্কিত যে কোনও সাহায্য সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে। ডাক্তারি সাহায্য হোক কিংবা করোনা টেস্ট, সোনুর টিম সকলের বাড়িতেই করানোর চেষ্টা করবেন। এছাড়াও কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের কাছে করোনা আক্রান্ত রোগীদের শেষকৃত্য বিনামূল্যে করানোর আর্জি জানিয়েছেন তিনি।