সে রাধে, চুল বাঁধে আবার সমাজ শাসনও করে। ইন্দিরা গান্ধী এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ। অনেক পেশাতেই পুরুষদের আধিপত্য আছে। সেসব জায়গাতেও পা রাখছে মেয়েরা। আইনের মতো পেশাতেও নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এখানে তেমনই ৯ মহিলা আইনজীবীকে বেছে নিয়েছি যারা সফলতার সঙ্গে কেরিয়ারের চূড়ায় উঠেছেন।

বৃন্দা গ্রোভর
প্রখ্যাত আইনজীবী ছাড়াও তিনি একজন গবেষক, মানবধিকার কর্মী এবং নারী অধিকার কর্মী। নারী ও শিশুদের ওপর যৌন নিগ্রহ, সাম্প্রদায়িক হিংসা, বেআইনী হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। ২০১৩ সালে টাইমস ম্যাগাজিন কর্তৃক প্রভাবশালী ১০০ জনের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছিলেন বৃন্দা গ্রোভার।

মীনাক্ষী আরোরা
১৯৮৬ সাল থেকে মীনাক্ষী সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীর কাজ করছেন। কিছু সময়ের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক আইন সংস্থা গুডউইন এবং সোবলের সঙ্গে কাজ করেছেন ওয়াশিংটন ডিসি-তে। দেশে ফিরে হেমন্ত সহায়ের অংশিদারীত্বে কাজ শুরু করেন। ভারতের নির্বাচন কমিশনের স্থায়ী পরামর্শদাতা পদে যুক্ত ছিলেন। সুপ্রীম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১৩ সালে তাঁকে সিনিয়র আইনজীবী হিসাবে মনোনীত করেছে। ভারতে পঞ্চম মহিলা হিসাবে তিনি এই সম্মানের অধিকারী হলেন। ড্রাফটিং কমিটির সদস্য ছিলেন। নারী আইনজীবীদের অভিযোগের প্রতিকার ও সুরক্ষা প্রদানের জন্য ভারতের সুপ্রীম কোর্টে লিঙ্গ সংবেদনশীলতা ও যৌন হয়রানির প্রবিধান প্রণয়ন করেন।

ইন্দিরা জয়সিং
সুপ্রিম কোর্টের অন্যতম সেরা আইনজীবী হিসাবে মান্য করা হয় তাঁকে। তাঁর স্বামী আনন্দ গ্রোভারও একজন মানধিকার কর্মী এবং সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়ার আইনজীবী। ব্যাঙ্গালোর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্দিরা কলা বিভাগে পড়াশোনা করেন। বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক হন। ভারতের প্রথম মহিলা অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেলের দায়িত্ব পান ইন্দিরা।
আরো পড়ুন : বিশ্বের বিখ্যাত ৯ রাষ্ট্রনেতার বেতন ও অন্যান্য সুবিধা

পিঙ্কি আনন্দ
পিঙ্কি আনন্দ একজন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এবং আইনজীবী। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের দায়িত্ব পালন করছেন। নয়াদিল্লীর লেডি শ্রীরাম কলেজ থেকে স্নাতক হন এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে এলএলবি ডিগ্রি হাসিল করেন। এলএম সিংভি-র বিরুদ্ধে জয় তাঁকে পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে আসে।
১৯৮০ সালে সবচেয়ে বেশী ভোট পেয়ে দিল্লি ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট ইউনিয়ানের প্রথম মহিলা সেক্রেটারি নির্বাচিত হন। পরের বছর হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে মাস্টার্স করেন। উত্তরাখণ্ডে বিজেপি-র আইনি পরামার্শদাতা। সাংবিধানিক আইন, সম্পত্তি, ব্যক্তিগত আন্তর্জাতিক আইন, পারিবারিক আইন, পরিবেশ আইন এবং কর্পোরেট আইন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ। ২০১৪ সালে ভারতের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত হন। বার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার সহ সভাপতি ছিলেন।
আরো পড়ুন : রাস্তায় ট্রাফিক পুলিস আটকালে জেনে নিন কি কি করণীয় ও আপনার অধিকার

করুণা নন্দী
ভারতীয় সাংবিধানিক, বাণিজ্যিক ও মিডিয়া আইনজীবী এবং একজন নারীবাদী বুদ্ধিজীবী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন করুণা নন্দী। দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি লাভ করেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। পান এমেইলিন পাঙ্কহার্ড পুরস্কার, অ্যামি কোহেন অ্যাওয়ার্ডস এবং বেকার স্টুডেন্টশিপ।
বাণিজ্যিক আইনে দক্ষতার জন্য কর্পোরেট জগতে বিখ্যাত হয়েছেন খুব তাড়াতাড়ি। ফোবর্স ম্যাগাজিন তাঁকে পরিবর্তনের দূত হিসাবে চিহ্নিত করেছে।

ফ্যালভিয়া অগ্নিশ
বৈবাহিক, বিবাহবিচ্ছেদ এবং সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনের দক্ষ আইনজীবী। সংখ্যালঘু আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে এবং নারী আন্দোলনের প্রসঙ্গে একাধিক প্রবন্ধ লিখেছেন। গার্হ্যস্থ হিংসা এবং নারীবাদী আইনজীবী হিসাবেও তাঁর নাম আছে। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্রের মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রককে পরামর্শ দেন। একা হাতে গড়েছেন ‘মজলিশ’ সংস্থা। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই সংস্থা প্রতি বছর ৫০ হাজার অসহায় নারীকে আইনি সাহায্য করে থাকে।
আরো পড়ুন : ভারতের ৮টি মজাদার আইন যেগুলি শুধু হাস্যকর নয় রীতিমতো অর্থহীন

মীনাক্ষী লেখি
নয়া দিল্লী থেকে লোকসভার সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং বিজেপি-র জাতীয় প্রবক্তা। ‘নারী সংরক্ষণ বিল’ এবং ‘কর্মক্ষেত্রে নারীর যৌন হয়রানি’ মতো বিলের খসড়া কমিটির অংশ। গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য মিনাক্ষী লেখি আদালতের মিডিয়া প্রতিনিধিত্ব করেন। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে নারীদের অর্ন্তভুক্তির জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়েন।

জিয়া মোদী
ভারতের আইনি পরামর্শদাতা। অধিগ্রহণ, নিরাপত্তা আইনে বিশেষজ্ঞ। মুম্বাইয়ের এলফিনস্টোন কলেজে পড়াশোনা করেন। কেমব্রিজের সেলউইন কলেজ থেকে আইনে স্নাতক এবং ১৯৭৯ সালে হার্ভাড থেকে আইনে মাস্টার্স করেন। নিউইয়র্কের বেকার অ্যান্ড ম্যাকিঞ্জিতে টানা পাঁচ বছর কাজ করেছেন। ১৯৮৪ সালে মুম্বাইতে স্বাধীনভাবে প্র্যাকটিস শুরু করেন।
আরো পড়ুন : সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ভারতের ১০ আইনজীবী

মানেকা গুরুস্বামী
নয়াদিল্লিতে আইনজীবী হিসাবে স্বাধীনভাবে কাজ করছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ ল থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। হার্ভার্ড এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও আইনের ওপর ডিগ্রি হাসিল করেছেন।
আমাদের প্রতিটি পোস্ট WhatsApp-এ পেতে ⇒ এখানে ক্লিক করুন