
বিশ্বে কোরোনা থাবা। এবং সেই কোরোনা ভাইরাস থাবা বসিয়েছে বাইশ গজে। ভারতের কিছু তরুণ এমন প্রতিভা আছেন যাদের জাতীয় দলের জার্সিতে খেলার সুযোগকে বিলম্বিত করে দিয়েছে কোরোনা ভাইরাসের জেরে দেশে জারি হওয়া এই লক ডাউন। এর অন্যতম কারণ বর্তমান পরিস্থিতির জন্য এই বছরের আইপিএল খেলা বাতিল হওয়া। কিন্তু তাদের রেকর্ড বা খেলার প্রতিভা দেখে একটা কথা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে ভারতীয় ক্রিকেট দলের ভবিষ্যত সুরক্ষিত হাতে আছে। চলুন দেখে নাওয়া যাক তারা কারা।
৫. ঈশান কিষন :- ঈশান কিষন বিগত কিছু বছর ধরে আইপিএলে ঝাড়খণ্ডের তরফ থেকে খেলছেন এবং নতুন খেলোয়াড় হিসেবে একটা ফ্যানবেস তৈরি করে ফেলেছেন। অনেকের মতে, তিনি টি টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট, কিন্তু তিনি এখনও পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে খেলেননি। এই বছরও এপ্রিল মাস থেকেই আইপিএল শুরু হওয়ার কথা ছিল কিন্তু কোরোনা ভাইরাসের জেরে পুরো দেশে জারি হওয়া লক ডাউনের জন্য তার এইবার আর আইপিএলে খেলা হয়ে ওঠেনি।
২১ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় এইবার আইপিএলে নির্বাচকদের নিজের ক্ষমতা দেখানোর জন্য প্রস্তুত থাকলেও এই লক ডাউনের কারণে জাতীয় দলে তার আর এবার জায়গা করা হবেনা। বর্তমান বিষয়গুলিতে কিশান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে সিনিয়র দলে জায়গা করতে পারবেন না। তবে তা হলেও তার অল্প বয়স এবং অপরিসীম প্রতিভাকে কোনোভাবেই কম ভাবা ঠিক হবেনা।
৪. ঈশান পোরেল :- তিনি একাধারে একজন উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান থেকে একজন অসাধারণ বোলার। ভারতীয় জাতীয় দলের ভবিষ্যতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় এই পারেন বিষয় কোনও সন্দেহ নেই। পরবর্তী আইপিএল সিজন এর অনিশ্চয়তার কারণে জাতীয় দলে তার অভিষেক যে বিলম্বিত হয় তা বলাই যায়।
তিনি এই বছর রঞ্জি ট্রফিতে বাংলাকে ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছে দাওয়ার কৃতিত্বের অন্যতম দাবিদার ছিলেন।এর পর এই ২১ বছরের খেলোয়াড় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবে যোগদান করার পর ভারতের সিনিওর জাতীয় ক্রিকেট দলে নিজের নাম দেখার দাবি রাখতেন কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির জন্য তা বিলম্বিত হয়। তবে তার খেলার অসাধারণ প্রতিভার জন্য এবার না হলেও এক না একদিন তিনি ভারতের জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামবেন এবং বিশ্বের বড় বড় দেশগুলির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ঠিকই।
৩. যশস্বী জয়সওয়াল :- দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুর্ধ – ১৯ বিশ্বকাপে তার পারফরম্যান্স সবার নজর কেড়েছিল । আইপিএলে রাজস্থান রয়ালস-এর হয়ে খেলে আইপিএল-এ ভাল পারফর্ম করে ভারতের জাতীয় দলে খেলার আশা করলেও কোরোনা ভাইরাসের জেরে হওয়া লক ডাউনে তার এই স্বপ্ন যেন থমকে গেছে।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপে ৪টি হাফ-সেঞ্চুরি এবং ১টি সেঞ্চুরি ১৩৩.৩৩ এর গড়ে মোট ৪০০ রান করেছেন। শুধু তাই নয় বিজয় হাজারে ট্রফিতে তিনি ডবল সেঞ্চুরি করেন তারপর থেকেই তিনি টক অফ দা টাউন। এর পরের ধাপ তার জন্য অবশ্যই সিনিওর দলে অংশ নাওয়া কিন্তু কোনো আইপিএল রেকর্ড ছাড়া যেহেতু তা সম্ভব হবেনা সেজন্য তাকে অপেক্ষা করতে হবে কারণ চলতি বছরের আইপিএল এখনও হবে কিনা ঠিক নেই।
আরও পড়ুন :- ক্রিকেটের এই ১০টি রেকর্ড কোনদিন কারোর পক্ষে ভাঙা সম্ভব নয়
২. নীতীশ রাণা :- কলকাতা নাইট রাইডার্স-এর হয়ে আইপিএলে নীতীশ রাণার পারফরমেন্স দেখে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলেছেন মেন ইন ব্লুর জার্সি গায়ে তিনি নিজের নামের আলাদা ছাপ রেখে যেতে পারবেন। কিন্তু এই বছর বিশ্বজুড়ে কোরোনা ভাইরাসের প্রকোপে লকডাউনের জেরে জাতীয় দলে তার অভিষেক বেশ কিছুটা বিলম্বিত হলো। ৪৬ টি আইপিএল ম্যাচে ২৬ বছর বয়সী নিতীশ ২৯.৩২ গড়ে ১০৮৫ রান করেছেন এবং তিনি ৭টি উইকেটও নিয়েছেন।
আরও পড়ুন :- ৫ ভারতীয় ক্রিকেটার যারা খেলে ফেলেছেন তাদের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ
১. সূর্যকুমার যাদব :- যাদব সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ডিওয়াই পাটিল টি-টোয়েন্টি কাপেও নিজের অভিনব খেলা প্রদর্শন করেছিলেন, এবং তিনি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (এমআই) ধারাবাহিক পারফর্মারদের একজন। সূর্যকুমার যাদব যে এখনও জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামেননি এই বিষয়টিই অবাক করার মতন।২৯ বছর বয়সী এই অসাধারণ ব্যাটসম্যান যে জাতীয় দলে ক্রিকেট খেলার অন্যতম দাবিদার তা বলাই যায়।
আরও পড়ুন :- ৫ ব্যাটসম্যান যারা তাদের ক্রিকেট কেরিয়ারে একটাও ৬ মারেননি
গত বারো মাস ধরে ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে অন ফিল্ড তিনি দুর্দান্ত ভাবে খেলেছেন। অনেকেই আশা করেছিলেন সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ব্যাট হতে দেখা যাবে তাকে। কিন্তু সেটি এই লক ডাউন এর কারনে আর হলো না। যাদব এখনও পর্যন্ত ৮৫ টি আইপিএল ম্যাচ খেলে ২৮.০৭ গড়ে ১৫৪৪ রান করেছেন এবং তিনি ৭টি অর্ধশতকও করেছেন। কিন্তু এসবের পরও মুম্বাইয়ের এই খেলোয়াড়কে আরও অপেক্ষা করতে হবে।