ভারত তো বটেই, বিশ্বের ধনকুবেরদের মধ্যে নিঃসন্দেহে আমরা বলতে পারি মুকেশ আম্বানির নাম। মুকেশ আম্বানির সম্পূর্ণ পরিবার কেমন ভাবে বসবাস করেন বা তাদের বাড়ি অ্যান্টিলিয়ার পরিচারকদের সঙ্গে তারা কেমন ব্যবহার করেন, এই তথ্য আমাদের জানার আগ্রহ থাকে সবসময় কিন্তু জানার সুযোগ আর হয়ে ওঠে না। সাধারণ মানুষের অ্যান্টিলিয়াতে প্রবেশ নিষিদ্ধ। তবুও কাজের সূত্রে কারও কারও মুকেশ আম্বানির বাড়িতে ঢোকার সেই সৌভাগ্য হয়েছে। সম্প্রতি তেমনই সৌভাগ্যবান কিছু ব্যক্তি রেডিট মারফত সোশ্যাল মিডিয়াতে তুলে ধরলেন তাদের অভিজ্ঞতার কথা।
রেডিট নামে সংবাদ মাধ্যমের একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে এক নেটিজেন প্রথম মুকেশ আম্বানির পরিবারের অন্দরমহলের কথা জানতে চেয়েছিলেন। জবাবের প্রত্যাশায় তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, আম্বানির পরিবার কি আদৌ মুম্বাইয়ের বাসভবনে থাকেন বেশিরভাগ সময়? সবার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করেন তারা? এইসব প্রশ্নের উত্তরে নাম গোপন করেই বেশ কয়েকজন বলেছেন তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা।
মোহাত্তার নামক অ্যাকাউন্টের অধিকারী বলেন, “আমরা মূলত গ্রাউন্ড ফ্লোরে কাজ করতাম। খুব জোর দোতলা পর্যন্ত ওঠার পারমিশন ছিল আমাদের। এই দুটো ফ্লোরের মধ্যে পরিবারের কাউকে কোনদিন দেখতে পাইনি আমরা। বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের সঙ্গেই আমাদের দেখা হতো। বেশ কয়েক বছর ধরে রিলায়েন্সের সঙ্গে কাজ করার সুবাদে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় আম্বানি পরিবারের তরফ থেকে। আম্বানিরা পারিশ্রমিকের দিক থেকে কখনো কার্পণ্য করেন না। ওনাদের নিয়ম-নীতি অনুযায়ী যদি কাজ করতে পারেন তাহলে আপনি আপনার খুশি মত পারিশ্রমিক পাবেন।”
লেজিটিমেন্ট work ৫৩২৯ নামক একটি অ্যাকাউন্ট থেকে বলা হয়, “আমার এক বন্ধু ওখানে কাজ করতো, যার থেকে শুনেছি, নীতা আম্বানি নাকি সারাদিন ঘুমিয়ে থাকতেন এবং রাতের বেলা কাজ করতেন। কখনো জরুরী মিটিংও তিনি সেরে নিতেন রাতে। তবে আম্বানিরা সপরিবারে সিনেমা দেখার পরিকল্পনা করে থাকেন মাঝে মাঝেই যা শুনে আমার খুব ভালো লেগেছিল।” সায়েন্টিফিক হিউম্যান নামের অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী বলেন, “আমার এক বন্ধু ওখানে জিম প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন। প্রতিদিন প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হতো আম্বানি পরিবারের সকলের জন্য।”
অর্চিস শাহ নামে একটি অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী বলেন, “আমি হসপিটালিটি ইন্ড্রাস্টির একজন কর্মী। এই বিষয় নিয়ে যখন পড়াশোনা করতাম তখন মুকেশ আম্বানির বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল একবার। ওনাদের অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহ করার জন্য প্রতি ৬ ঘন্টায় আড়াই হাজার টাকা পেয়েছিলাম আমি। অনুষ্ঠানে আমাদের কাজ ছিল অতিথিদের কাছে স্টার্টার এগিয়ে দেওয়া। অনেকেই নিচ্ছিলেন না তাই আমরা বেশিরভাগ সময় চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমাদের যা কাজ বলা হয়েছিল তার থেকে এক বিন্দু বেশি কাজ করানো হয়নি। তবে কি কি করতে হবে সেটা খুব স্পষ্ট করেই প্রথমেই বলে দেওয়া হয়েছিল।”
আরও পড়ুন : ৫০০০ কোটির ব্যবসা সন্তানদের দিয়ে অবসর নিচ্ছে মুকেশ আম্বানি, কে কত সম্পত্তি পেল?
রেয়ার ট্রান্সলেটর ১০৪৭ নামের এক অ্যাকাউন্টধারী বলেন, “আমার এক দাদা ওখানে প্রশাসনিক বিভাগে কাজ করতেন। দাদা ভালোই মাইনে পেতেন আর আম্বানিরা কিন্তু পরিচারকদের সব রকম ভাবে সাহায্য করে থাকেন।” পেশেন্ট বক্স ৯৫৭২ নামের অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী বলেন,” বছরের বেশিরভাগ সময় আম্বানিরা মুম্বাইতে থাকেন না, থাকেন বিদেশে। মুম্বাইয়ের এই বাড়িতে আম্বানির বড় ছেলে এবং পুত্রবধূ থাকেন। ”
আরও পড়ুন : আম্বানির থেকেও ধনী ছিলেন, এখন ভিখারির হাল! এই ভারতীয় ধনকুবেরের কাহিনী আপনাকে কাঁদিয়ে ছাড়বে
ট্রিকি স্যান্ডউইচ 0 নামের এক ব্যবহারকারী বলেন, “আমার এক ঘনিষ্ঠ ওনাদের বাড়িতে গাড়ি দেখাশোনার কাজ করতেন। ওই বাড়ির গোটা একটা তলা শুধু আম্বানিদের গাড়ি দেখভালের জন্য বরাদ্দ করা রয়েছে। পুরনো দিনের পোর্শে গাড়ি থেকে শুরু করে ফেরারি, সবকিছুই রয়েছে আম্বানিদের কাছে।” ইলেকট্রিক বিল ২৬৪ নামের অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী বলেন, “আমার বস আম্বানিদের হয়ে একটি বিশেষ টিমে কাজ করতেন। তিনি বলতেন, ওনাদের দেখে মনেই হবে না ওনারা এত বড় একজন বিজনেসম্যান। মুকেশ আম্বানি মিটিং এর মধ্যেই ইডলি, ভেলপুরি বড়া পাওয়ের মতো সাধারণ খাবার দাবার অর্ডার করতেন।”
আরও পড়ুন : ড্রাইভার-রাঁধুনীদের কত বেতন দেন মুকেশ আম্বানি? জানলে প্রধানমন্ত্রীও লজ্জা পাবে