বোনে বোনে বনিবনা নেই! এই একটি কারণে রানীকে সহ্য করতে পারেন না কাজল

বোনে বোনে কথা বন্ধ! ২৫ বছরেও ঝামেলা মেটেনি রানি ও কাজলের

১৯৯৮ সাল, জীবনের প্রথম ছবি পরিচালনা করলেন করন জোহর, নাম ‘কুছ কুছ হোতা হে’। একটি অমলিন প্রেম কাহিনী দেখতে পেলাম আমরা। বন্ধুত্ব আর প্রেমের সংজ্ঞাই যেন রাতারাতি পাল্টে গেল সেদিন থেকে। সিনেমায় বলিউড কিং শাহরুখ খান ছাড়াও অভিনয় করেছিলেন দুই বাঙালি অভিনেত্রী, রানী মুখার্জি এবং কাজল। কিন্তু একই বাড়ির মেয়ে হলেও, একই সঙ্গে অভিনয় করলেও কেন তারা একসঙ্গে কথা বলতেন না সিনেমার সেটে, জানেন?

যে বাঙালিরা বলিউডে নিজের মাটি শক্ত করতে পেরেছিলেন তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে আমরা রানী মুখার্জি এবং কাজলের নাম বলতেই পারি। সিনেমায় মুখ্য ভূমিকায় কাজল অভিনয় করলেও রানী মুখার্জির অভিনয়ও ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কাজল আগে অনেকগুলি সিনেমা করলেও রানী মুখার্জির ছিল প্রথম সিনেমা। সিনেমার সেটে যখন অন্যান্য অভিনেতা অভিনেত্রীরা একে অপরের সঙ্গে হাসি ঠাট্টায় মেতে উঠতেন তখন রানী এবং কাজল যতটা পারতেন একে অপরকে এড়িয়ে চলতেন। কিন্তু কেন?

Kuch Kuch Hota Hai

সম্প্রতি কফি উইথ কর্ণ- র অষ্টম সিজনে এই প্রসঙ্গে সরাসরি কথা বললেন রানী এবং কাজল। করন জোহরের এই টক শোতে এই দুই বোন এসেছিলেন অতিথি হয়ে। পর্বের মাঝে কথা বলতে বলতেই পরিচালক ‘ কুচ কুচ হোতা হে’ সিনেমার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “পরিচালক হিসাবে আমার প্রথম ছবি ছিল সেটা। আমি জানতাম তোমরা একই পরিবারের সদস্য। কিন্তু তাও একে অপরের সঙ্গে সেভাবে কথা বলতে না তোমরা। আমি মনে মনে ভাবতাম, এ আবার কেমন পরিবার?” কেন কথা বলতে না তোমরা?

পরিচালকের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কাজল বলে, “বিষয়টা একেবারেই তেমন নয়। আমাদের মধ্যে কোন দূরত্ব ছিল না সেই ভাবেই। আসলে আমরা যখন অভিনয়ে জগতে এসেছি তখন বেশ লড়াই করতে হতো আমাদের, তাই নিজের অভিনয় নিয়ে বেশ ব্যস্ত থাকতাম আমরা। আর ছোট থেকেই আমার বোনের সঙ্গে ওর বন্ধুত্ব বেশি ছিল। আমার সঙ্গে কম কথা হতো ওর। তাই সেই ভাবে ওর সাথে বন্ধুত্ব তখন গড়ে ওঠেনি।”

Kuch Kuch Hota Hai

আরও পড়ুন : বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে মুখ দেখাতে পারেননি, রানীকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নেননি আদিত্যর পরিবার

কাজলের কথা প্রসঙ্গে রানী মুখার্জি বলেন, “আমি ছোট থেকেই ওকে কাজল দিদি বলে চিনি। একটা দিদি হওয়ার জন্য যে সম্মান দেওয়া উচিত সেটাই ওকে দিতাম তাই আমাদের মধ্যে প্রথম থেকেই দূরত্ব ছিল। ওর থেকে বেশি তানিশার সঙ্গে আমার কথা হতো। আর এমনিতেই পরিবারের ছেলেদের সঙ্গে কাজলের বন্ডিং বেশি ছিল মেয়েদের থেকে।” কিন্তু কিভাবে এই দূরত্ব কমে গেল? কিভাবে একে অপরের কাছাকাছি এলেন কাজল এবং রানী?

আরও পড়ুন : ১৮ না পেরোতেই মা হয়ে যান, বলিউডে ডুবতে বসেছিল রানীর কেরিয়ার

Rani And Kajol

আরও পড়ুন : একেবারে মায়ের জেরক্স কপি! রানী মুখার্জীর মেয়ে কত সুন্দরী হয়েছে দেখুন ছবিগ্যালারী

প্রশ্নের উত্তরে রানী বলেন,” আমার মনে হয় যখন আমার বাবারা মারা যান তখন আমাদের মধ্যে দূরত্ব অনেকটাই কমে যায়। প্রিয় মানুষ চলে গেলে যেমন পরিবারের বাকি সদস্যরা কাছে টেনে নেন, ঠিক তেমনি আমাদের সঙ্গে হয়েছে। কাজলের বাবা আমার ভীষণ কাছের মানুষ ছিলেন। আমার বাবা যখন মারা যান, তখন কাজলও আমাকে ভীষণ ভাবে আগলে রাখতো। এই ভাবেই আমরা একে অপরের বন্ধু হয়ে উঠেছিলাম।” রানীর এই কথায় সহমত পোষণ করেছেন কাজলও।

আরও পড়ুন : জন্মের পরই হাসপাতালে বদলে গিয়েছিলেন ছোট্ট রানী, মেয়েকে খুঁজে বার করেন মা

যদিও শোনা যায় রানীর বাবা শমু মুখার্জী এবং কাজলের বাবা রাম মুখার্জির মধ্যে পারিবারিক বিষয় সম্পত্তি নিয়ে তুমুল ঝামেলা বাঁধে। এমন একটা পরিস্থিতিতে কাজল কখনোই চাননি রানী বলিউডে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়ান। তাই তিনি নাকি আদিত্য চোপড়ার উপর চাপ সৃষ্টি করে ‘কুছ কুছ হোতা হে’ ছবি থেকে রানীকে বাদ দিতে চেয়েছিলেন। যদিও করণ জোহরের রানীকে খুব পছন্দ হওয়াতে তেমনটা শেষমেশ হয়ে ওঠেনি। কিন্তু ওই একটি ছবিতেই দুই বোন অভিনয় করেছিলেন একসঙ্গে। এরপর তারা আর কখনও একসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেননি।