মাঝরাতে ঘুম থেকে ডেকে তুলে মোক্সা বোঝাচ্ছেন, রোদ্দুর রায়ের গানের গুঁতোয় অতিষ্ঠ জেলসঙ্গীরা

“রাত হয়েছে, এবার ঘুম থেকে ওঠো!”, নিজের জেলবন্দি সঙ্গীদের প্রতি মাঝরাতে এভাবেই ঘুম থেকে তুলে গানের আসর বসাচ্ছেন রোদ্দুর রায় (Roddur Roy)! তার হাত থেকে ছাড়া পাচ্ছে না অতি বড় দোর্দণ্ডপ্রতাপ তোলাবাজ আসামীও! রাতের খাবার খেয়ে যেই না একটু শুয়েছেন, দুচোখের পাতা ঘুমে ভারী হয়ে এসেছে, অমনি রোদ্দুর রায় হাজির তার মোক্সাবাদ আর গান নিয়ে। সারা রাতজুড়ে চলে গান আর বক্তৃতা!

কসবার স্বঘোষিত ডন সোনা পাপ্পু এই দফায় জেলে সাজা কাটতে এসে রোদ্দুর রায়ের খপ্পরে পড়ে বেজায় বিপাকে পড়ে গিয়েছেন! তার দিনের শান্তি, রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন রোদ্দুর রায়! প্রতি রাতে বারোটা অথবা একটা বাজলেই বিপদ, রোদ্দুর রায় তাকে ডেকে তুলে বলেন, “এবার উঠে পড়ো ভাই। সবাই ওঠো। রাতে কেউ ঘুমোয় নাকি? চল তোমাদের গান শোনাই!”

roddur roy

এখন পরিস্থিতি এমনই যে অতি বড় দাগী আসামী, যাদের ভয়ে তটস্থ তাদের এলাকা, তারা পর্যন্ত রোদ্দুর রায়ের ভয়ে তটস্থ হয়ে রয়েছেন! রাত হলেই থানায় লক আপের মধ্যে নিজস্ব ভঙ্গিমায় চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দিয়ে অশ্লীল গান গেয়ে ওঠেন রোদ্দুর রায়। অশ্লীল গান আর মোক্সাবাদের ঢালাই রীতিমতো কাঁদো কাঁদো দশা তাদের।

তবে না, রোদ্দুর রায় কিন্তু এ পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার বা গালিগালাজ করেননি। তার টার্গেট শুধু জেলের অন্যান্য বন্দীরা। বিশেষত দক্ষিণ ও পূর্ব কলকাতার ত্রাস সোনা পাপ্পু এবং তার দলবলকে কাঁদিয়ে ছেড়েছেন তিনি! যেদিন প্রথম রোদ্দুর রায়কে তারা দেখেন ওই দিন তাকে নিয়ে খানিক হাসি-মশকরা করতে গিয়েছিলেন। সেদিন রাতেই তারা টের পেলেন রোদ্দুর রায়ের সঙ্গে পাঙ্গা নেওয়ার ফল কী হতে পারে!

রোদ্দুর রায়ের গানের গুঁতোয় সোনা পাপ্পু এবং তার দলবলসহ অন্যান্য বন্দীদের প্রাণ হয়েছে ওষ্ঠাগত। তার উপর আবার মোক্সাবাদের উপর জ্ঞান বিতরণ তো রয়েইছে! ‘মোক্সা’ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিপ্লব এবং বিষয়টির উপর তাঁর গবেষণা নিয়ে সারারাত ধরে অবিরাম বক্তৃতা দিতে থাকেন রোদ্দুর রায়। শুনতে-শুনতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন পাপ্পু এবং তার সঙ্গীরা। কিন্তু রোদ্দুর রায়ের কোনও ক্লান্তি নেই।

Roddur Roy WiKi, Biography & More

এমতাবস্থায় পুলিশ আধিকারিকদের আবেদন করে অন্য ঘরে সরে গিয়েছেন পাপ্পু ও তার সঙ্গীরা। যদিও তাতেও তাদের রোদ্দুরকে নিয়ে ভয় কাটছে না। ভবিষ্যতে আবারও যদি রোদ্দুরের পাল্লায় পড়েন তাহলে তাদের অবস্থা কী হবে! নতুন ঘরে সরে গিয়েও স্বস্তি পাচ্ছেন না তারা।