একা প্রসেনজিৎ নয়, বাবা বিশ্বজিতেরও ২ বিয়ে, প্রথম স্ত্রীকে ঠকিয়ে দ্বিতীয় সংসার করছেন অভিনেতা

মহানায়ক উত্তম কুমারের সমসাময়িক টলিউডে তাকে টেক্কা দেওয়ার মত ক্ষমতা রাখতেন বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Biswajit Chatterjee)। লম্বা, সুদর্শন এই অভিনেতার প্রেমে তৎকালীন সময়ে পাগল হতেন মহিলারা। টলিউডে বহু ছবিতে তিনি অভিনয় করে পেয়েছেন প্রচুর জনপ্রিয়তা। সাদাকালো ছবি দুনিয়ার এই নায়কের জীবন কিন্তু ছিল বেশ রঙিন। আজ তার সম্পর্কেই কিছু অজানা তথ্য নিয়ে সাজানো এই প্রতিবেদন।

বাংলা থেকে বলিউড, বিশ্বজিৎ চ্যাটার্জীর কেরিয়ার ছিল সুবিস্তৃত। অথচ অভিনয়ের প্রতি এই ভালবাসাই একসময় তাকে তার আপনজনদের থেকে দূরে করে দেয়। গড়পারের রক্ষণশীল মামাবাড়িতে থাকতে থাকতে সকলকে লুকিয়ে তরুণ বিশ্বজিৎ রংমহলে নাটকে কাজ করতেন। একবার মেকআপ তুলতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়ে যেতেই তার মাথার উপর সেই আস্তানাটুকুও চলে যায়।

বন্ধুর বাড়িতে কোনওমতে মাথা গোঁজার আশ্রয়টুকু পেয়েছিলেন। হাতে সম্বল বলতে ছিল নাটকে কাজ করে পাওয়া সামান্য পারিশ্রমিক। ১৯৫৮ সালে ‘কংস’ ছবিতে পিছনে ভূমিকার অভিনয় করে শুরু হয় তার অভিনয় যাত্রা। এরপর ৬০ এর দশক জুড়ে একের পর এক ছবিতে অভিনয় করে গিয়েছেন বিশ্বজিৎ। রেডিওতে কাজ করার সুবাদে মুম্বাইয়ের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়।

টলিউডের পাশাপাশি বলিউডেও নিজের ভিত শক্ত করতে তিনি ছিলেন মরিয়া। তাই বক্সিং থেকে শুরু করে ঘোড়ায় চড়া, সবই শিখেছিলেন। ‘দুই ভাই’, ‘চৌরঙ্গী’ ‘পৃথ্বীরাজ’ এর মত ছবিতে অভিনয় করেছেন। মুম্বাই থাকতে থাকতেই তার সঙ্গে পরিচয় হয় ইরার সঙ্গে। ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আবদ্ধ হন তারা। কিন্তু ততদিনে বিশ্বজিৎ ছিলেন বিবাহিত। স্ত্রী রত্না চ্যাটার্জী, ছোট ছোট দুই সন্তান প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী এবং পল্লবী চ্যাটার্জীকে রেখে মুম্বাইতে দ্বিতীয় সংসার পেতে বসেন বিশ্বজিৎ।

বিশ্বজিতের দ্বিতীয় বিবাহ কলকাতা খুব সহজে কিন্তু মেনে নিতে পারেনি। এই নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছিল তার। বাবার জন্মদিনে আনন্দবাজারে কলম ধরে পল্লবী তার মনের কথা বলেন। তিনি বলেন তারকা বাবার সন্তান হলেও তারা কিন্তু তারকা সন্তান ছিলেন না। বাবার থেকে ভালোবাসা-স্নেহ পেয়েছেন, কিন্তু সন্তানদের নিয়ে ‘আদিখ্যেতা’ কখনও ছিল না বিশ্বজিতের।

বিশ্বজিতের দ্বিতীয় পক্ষ থেকেও তার এক কন্যা সন্তান রয়েছেন। প্রসেনজিৎ এবং পল্লবীর ছোট বোনের নাম সম্ভাবী। পল্লবী অবশ্য জানিয়েছেন ছোট বোনকে নিয়ে বা বাবার দ্বিতীয় বিয়েকে নিয়ে তার মনে কোনও অভিমান নেই। বরং তিনি খুশি এই ভেবে যে ৮৫ বছরের বিশ্বজিতকে আজও একইভাবে ভালবাসেন ইরা। বিশ্বজিৎ আজ কলকাতা থেকে দূরে মুম্বাইতে দ্বিতীয় স্ত্রী এবং কন্যাকে নিয়ে রয়েছেন। এই বয়সেও যথেষ্ট কর্মঠ তিনি। বয়স তার কাছে বাঁধা নয়, বরং নিজেকে কাজের মধ্যে ডুবিয়ে রাখতেই তিনি ভালবাসেন।