টলিউডকে দাঁড় করাতে সবকিছু করেছি, আমি ইন্ডাস্ট্রির সিইও : প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী

টলিউডের (Tollywood) ‘ইন্ডাস্ট্রি’ মানেই তিনি হলেন প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী (Prasenjit Chatterjee)! এই বদ্ধমূল ধারণা কার্যত গেঁথে গিয়েছে দর্শকদের একাংশের মনে। এই নিয়ে অবশ্য তর্ক-বিতর্ক কিছু কম নেই। প্রসেনজিতের সতীর্থ চিরঞ্জিত চক্রবর্তী প্রসেনজিৎকেই একা ‘ইন্ডাস্ট্রি’ বলে মানতে চান না। এই বিষয়ে খোদ প্রসেনজিতের কী বক্তব্য? তিনিও কি নিজেকে ইন্ডাস্ট্রিই মনে করেন? সম্প্রতি এই প্রশ্নের জবাবে তিনি আনন্দবাজারের কাছে মুখ খুললেন।

আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রসেনজিৎ বলেছেন, ‘‘লোকে বলে, আমি ইন্ডাস্ট্রি। এটা সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘অটোগ্রাফ’ ছবির জনপ্রিয় সংলাপ, ‘আমি অরুণ চট্টোপাধ্যায়, আমি ইন্ডাস্ট্রি’। তাই হয়তো এত জনপ্রিয়।’’ এরপর তিনি নিজেই প্রশ্ন করেন, ‘‘কেউ কোনও দিন ‘ইন্ডাস্ট্রি’ হতে পারে? একা এক জনের পক্ষে কি ‘ইন্ডাস্ট্রি’ হওয়া সম্ভব?’’

দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে টলিউডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন প্রসেনজিৎ। উত্তম কুমার পরবর্তী সময়ে বাংলা ছবির ধরন বদলেছে। মানুষের পছন্দও বদলে গিয়েছে। প্রসেনজিতের কথায়, একটা সময় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, রঞ্জিত মল্লিকদের হাতে ছিল টলিউডের রাশ। তারপর ধীরে ধীরে তাদের চরিত্র বদলেছে। তাদের পরবর্তী প্রজন্ম চিরঞ্জিত, তাপস পাল, অভিষেক, প্রসেনজিতরা টলিউডে পা রেখেছেন।

প্রসেনজিৎ বলেন, এভাবে কাজ করতে করতেই ইন্ডাস্ট্রিকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব তাদের কাঁধের উপর এসে পড়ে। প্রসেনজিৎ আরও বলেছেন, ‘‘এ ভাবেই কাজ করতে করতে একটা সময় আস্তে আস্তে আমার দায়িত্ব বেড়েছে। সে সব সামলাতে গিয়ে আমি সিইও-র চেয়ারে। একটি সংস্থাকে দাঁড় করাতে গেলে এক জন সিইও যা যা করেন, সেগুলোই করার চেষ্টা করে এসেছি। আমি কখনও বলতে পারি, আমি ‘ইন্ডাস্ট্রি’? আমি টলিউডের সিইও।’’

‘আমিই ইন্ডাস্ট্রি!’, প্রসেনজিতের মুখে ছবির এই সংলাপ কার্যত দিকে দিকে ছেয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার কাছে ছবির দুনিয়াই হল ইন্ডাস্ট্রি। এখানে যিনি ট্রলি বয়ে নিয়ে আসেন তিনিও যেমন গুরুত্বপূর্ণ, আবার যিনি আলো লাগান, সেট তৈরি করেন তিনিও গুরুত্বপূর্ণ। টলিউডে প্রচুর মানুষ তাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করেন। সবাই টলিউডের উন্নতির চেষ্টা করেন, প্রসেনজিতও তার ব্যতিক্রম নন। এমন সময়ও গিয়েছে যখন টানা তিন-চারটে শিফট শুটিং করে তবে বাড়ি ফিরেছেন প্রসেনজিৎ। খাওয়ার সময়টুকুও পাননি, দই আর শশা খেয়ে খিদে মিটিয়েছেন। ঘুমেরও সময় পেতেন না। প্রসেনজিৎ ইন্ডাস্ট্রি হোন বা না হোন, টলিউডকে দাঁড় করাতে তিনি অনেক অবদান রেখেছেন তা এক কথায় অনস্বীকার্য।