সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘হীরামান্ডি’ ওয়েব সিরিজে নবাব আমলের বাইজিদের জীবন সম্পর্কে এক ঝলক দর্শকদের চোখে ধরা পড়েছে। পাকিস্তানের লাহোরে সত্যিই একসময় ‘হীরামান্ডি’র রমরমা ছিল। আজকের এই প্রতিবেদনে রইল ভারতের নামকরা কিছু নর্তকী বা বাইজিদের নাম যারা নাচে, গানে, কবিতায়, শিষ্টাচার এবং বিভিন্ন ভাষায় পারদর্শী ছিলেন।
স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে বিশেষ করে নবাবদের আমলে বাইজি প্রথার রমরমা ছিল। নবাব এবং সমাজের উচ্চ সম্প্রদায়ের মনোরঞ্জন করতেন এরা। এদের মধ্যে কিছু বাইজির রোজগার এবং সম্পত্তির পরিমাণ ছিল আকাশ ছোঁয়া। এরা ছিলেন ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত বাইজি। আজকের দিনে সুপারস্টাররা ছবি পিছু যত চার্জ করেন, তখনকার আমলে এরা তার থেকেও বেশি টাকা নিতেন জলসায়।
গওহর জান : ১৮৮৭ সালে দারভাঙ্গা রাজের রাজ দরবারে প্রথম অভিনয় করেছিলেন গওহর জান। এরপর তিনি ওই রাজ দরবারে গান শোনাতেন। সমগ্র ভারত তার গানের কদর করত। তিনি ওই শতকের প্রথম কোটিপতি গায়িকা ছিলেন। ওই সময় ১০ গ্রাম সোনার দাম ছিল ২০ টাকা। আর গওহর জান গান পিছু ৩ হাজার টাকা নিতেন। বর্তমান দর অনুযায়ী গান পিছু তিনি ১ কোটি টাকা নিতেন। তিনি তার জীবনে ৬০০ টি গান ১০টি ভাষাতে গেয়ে রেকর্ড করেছিলেন।
বেগম হযরত মহল : ইনি অবধের বেগম নামেও পরিচিত ছিলেন। তিনি আবার অবধের নবাব ওয়াজির আলী শাহের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন। ১৮২০ সালে তার জন্ম হয়, তার বাবা-মা তাকে বিক্রি করে দেন। তার ঠাঁই হয় শাহী হারেমে। তার নাম হয় মেহেক পরী। তার রূপ এবং গানে পাগল ছিলেন তৎকালীন সময়ের উচ্চ সম্প্রদায়ভুক্ত পুরুষেরা। শোনা যায় বেগম হযরত মহল গান শোনানোর জন্য অনেক সোনার মুদ্রা চার্জ করতেন।
আরও পড়ুন : আরাধ্যার পেছনে মাসে কত টাকা খরচ হয়? জানলে চোখ উঠবে কপালে
আরও পড়ুন : দিনে রোজগার ৫০ লক্ষ টাকা! কোথা থেকে এত আয় করেন ওরি?
জদ্দানবাই হুসেন : তিনি ছিলেন বলিউড অভিনেত্রী নার্গিসের মা। ১৮৯২ সালে তার জন্ম হয়। তিনি তার অসাধারণ সংগীত প্রতিভার জন্য জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। প্রিন্সলি স্টেট হিসেবে পরিচিত রামপুর, বিকানির, গোয়ালিয়র, জম্মু এবং কাশ্মীর, ইন্দোর এবং যোধপুরের রাজা-মহারাজারা তার গানের ভক্ত ছিলেন। জলসায় নাচ-গানের জন্য চড়া দর হাঁকাতেন জদ্দানবাই। তা দিতে অবশ্য কসুর করতেন না রাজারা।