স্ত্রীর জন্য ১২ বছর অপেক্ষা করেছেন, কমেডিয়ান রাজুর প্রেম কাহিনীর কাছে সিনেমাও ফেল

সদ্য প্রয়াত হয়েছেন ভারতবিখ্যাত কমেডিয়ান রাজু শ্রীবাস্তব (Raju Shrivastav)। কমেডিয়ান রাজুর অকাল মৃত্যুটা মোটেই মেনে নিতে পারছেন না ভক্তরা। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই যে তার জীবন প্রদীপ নিভে যাবে এমনটা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি কেউ। বেঁচে থাকতে তিনি সকলের মুখে হাসি ফুটিয়েছিলেন। তার মৃত্যুর খবরে আজ কাঁদছে গোটা দেশ। রাজুর মৃত্যুর ক্ষতি অপূরণীয়। চরম অন্ধকার নেমে এল তার পরিবারের উপরেও।

রাজুর পরিবারের রয়েছেন তার স্ত্রী শিখা শ্রীবাস্তব (Sikha Shrivastav)। দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে তাদের। রাজু এবং শিখার প্রেম থেকে বিয়ের যে গল্প তা কিন্তু কোনও সিনেমার থেকে কম চিত্তাকর্ষক নয়। বিয়ের আগে রাজু ছিলেন একনিষ্ঠ প্রেমিক। স্ত্রী শিখার জন্য তিনি ১২ বছর অপেক্ষা করেছিলেন। আজ এই প্রতিবেদনে রইল রাজু শ্রীবাস্তব এবং শিখা শ্রীবাস্তবের অজানা সেই প্রেমের কাহিনী।

রাজু শ্রীবাস্তবের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে খুব কমই জানে লোকে। তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল রাজুর ভাইয়ের বিয়েতে। ভাইয়ের বিয়েতে ফতেহপুরে গিয়ে শিখাকে দেখেই তার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন রাজু। তিনি ঠিক করে ফেলেন বিয়ে করলে এই মেয়েকেই করবেন। এরপরই বিয়ে বাড়ির সেই ‘মিস্ট্রি গার্ল’ এর খোঁজ পড়ে যায়। অবশেষে রাজু সেই মেয়েটিকে খুঁজে বের করে ফেলেন।

শিখা ছিলেন রাজুর নতুন বৌদির খুড়তুতো বোন। শিখার বাড়ি ইটাবায়, সে কথা জানতে পেরেই রাজু নানা বাহানা দিয়ে তার ভাইকে সঙ্গে নিয়ে ইটাবায় যাতায়াত করতে শুরু করেন। তখন তার সঙ্গে শিখার দেখা হয়। তবে এই প্রেম কাহিনীর শুরুটা আসলে সহজ ছিল না। রাজু বহুবার শিখাকে তার মনের কথা বোঝাতে চেষ্টা করলেও বারবার ব্যর্থ হতেন। এভাবেই কেটে যায় কয়েকটা বছর।

১৯৮২ সালে রাজু সেরা কমেডিয়ান হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বাইতে পাড়ি দেন। তবে মুম্বাইতে গিয়েও কিন্তু তিনি শিখাকে ভুলে যাননি। মাঝেমধ্যেই চিঠি পাঠাতেন তাকে। সেই সঙ্গে শিখার জীবনে অন্য কেউ এসেছেন কিনা, তিনি আর কাউকে বিয়ে করার কথা ভাবছেন কিনা সেই খোঁজখবরও রাখতেন রাজু। রাজু আন্দাজ করতে পারতেন শিখা তাকে মনে মনে পছন্দ করেন। তার কারণ শিখার জন্য যখনই বিয়ের প্রস্তাব আসতো তখন তিনি নানা বাহানা দিয়ে এড়িয়ে যেতেন।

ধীরে ধীরে রাজু মুম্বাইতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন। তার কেরিয়ারেও ভালই উন্নতি হচ্ছিল তখন। এরপর তিনি আর দেরি করেননি, শিখার পরিবারে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। দুই পরিবারের মধ্যে কথাবার্তা হয়। শিখার ভাই মুম্বাইতে রাজুর বাড়ি দেখতেও এসেছিলেন। সব দেখেশুনে সন্তুষ্ট হওয়ার পরই বোনের সঙ্গে রাজুর বিয়ে দিতে সম্মতি দেন তারা। ১২ বছর অপেক্ষার পর ১৯৯৩ সালে স্বপ্নের রাজকন্যার সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন রাজু।