আর নয়, এবার বাড়ি ছাড়তে চলেছে গুনগুন (Gungun)। পুচুসোনার জন্য বিগত কয়েকদিন ধরে সারা বাড়ির প্রত্যেক সদস্যের থেকে বহু অপমান সহ্য করতে হয়েছে তাকে। এমনকি বাবিনও তার পাশে নেই। তার প্রিয় পুচুসোনা আজ হাসপাতালে ভর্তি। তার জন্য বাড়ির সকলে তাকেই দুষছে। তাই এবার চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে সে। যে বাড়িতে তাকে সকলে অপমান করে, সেই বাড়িতে আর থাকবেনা গুনগুন।
গুনগুনের এই সিদ্ধান্তে স্বভাবতই মুখার্জি পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। আর হবে নাই বা কেন? গুনগুনের উপর সাময়িক রাগ হলেও তারা সকলেই তাকে স্নেহ করেন, ভালোবাসেন। পুচুসোনাকে নিয়ে গুনগুনের বাড়াবাড়িতে তারা অতিষ্ঠ হয়েছিলেন ঠিকই, তবে গুনগুন বাড়ি ছেড়ে চলে যাক, এটা তারা চাননি। গুনগুনের অবুঝ মনোভাব কাটিয়ে ওঠার জন্য তারা কম প্রচেষ্টা চালাননি। তবে শতবার বোঝানোর পরেও গুনগুন কারোর কথাই মানতে চায় না।
এবার গুনগুন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তার বাবা। গুনগুনের বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ সমর্থন করছেন তিনি। শ্বশুরবাড়িতে মেয়ের অপমান দেখে তিনিও আর চান না গুনগুন এই বাড়িতে থাকুক। বাবার সঙ্গে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য জামাকাপড় গুছিয়ে নিয়েছে গুনগুন। পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দিয়েছে সে বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এবার সে আর কোনোদিনও ফিরবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে!
এতে অবশ্য ডঃ কৌশিক সেন তার মেয়ের কোনও দোষ দেখছেন না। বরং বাবিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। পুটুপিসির কথার জবাবে তিনি বলেন, “যে স্বামী তার নিজের স্ত্রীকে অসম্মানের হাত থেকে বাঁচাতে পারে না, যে স্বামী তার নিজের স্ত্রীকে বুঝতে পারেনা, আমি তাকে স্বামী বলে মনে করি না”। অভিযোগের আঙুল যখন বাবিনের দিকে গিয়ে ওঠে তখন বাবিন গুনগুনকে প্রশ্ন করে, “গুনগুন আমি কি তোমায় বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেছিলাম?”
বাবিনকে গুনগুন উত্তর দেয়, “অনেকবার বলেছ। এখন বলোনি হয়তো, কিন্তু এর আগে তো বহুবার বলেছ। আর ভবিষ্যতে যে বলবে না, তার তো কোনও গ্যারান্টি নেই।” গুনগুন যে কতখানি অভিমান মনে পুষে রেখে বাড়ি ছাড়ছে, তা তার কথাতেই বেশ স্পষ্ট। গুনগুন সাফ জানিয়ে দেয়, “আমি আমার নিজের ইচ্ছায় এই বিয়েটা করিনি, তাই আমি যার ইচ্ছে বিয়ে করেছিলাম তার ইচ্ছেতেই বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছি”।
মুখার্জি বাড়িতে একমাত্র পটকা ছাড়া এই মুহূর্তে গুনগুনের পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। গুনগুন যখন কিছুতেই পুচুসোনাকে মিষ্টির কাছে যেতে দিতে রাজি হচ্ছিল না, তখন জ্যাঠাইও চাইছিলেন তাকে কিছুদিনের জন্য বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিতে। শ্বশুরবাড়িতে অহরহ তিরস্কার, অপমান এতদিন পুচুসোনার জন্যই সহ্য করছিল গুনগুন। কিন্তু এবার তার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে। সে তার বাবার সঙ্গে চিরতরে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে চায়। সৌজন্যে এবং গুনগুনের সম্পর্ক এবার কোন দিকে মোড় নেবে? সত্যিই কি ভেঙে যাবে তাদের সম্পর্ক? কি মনে হয় আপনার?