পেটের ভাত জোগাতে সাইকেল সারাতেন, চা-ওয়ালা থেকে কীভাবে অভিনেতা হলেন শংকর চক্রবর্তী

কথায় বলে কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না। অভিনেতা শংকর চক্রবর্তীর (Shankar Chakraborty) জীবনে এই কথাটা অক্ষরে অক্ষরে ফলে গিয়েছে। একসময় সংসার চালাতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছিল তাকে। সেই সঙ্গে ছিল তার অভিনেতা হয়ে ওঠার স্বপ্ন। হাজার কষ্টের মাঝেও স্বপ্নকে বিসর্জন দেননি তিনি। আজ একজন সফল অভিনেতা হওয়ার পাশাপাশি অভিনেতার জীবন থেকে সেই দুঃখের দিনগুলোও কেটে গিয়েছে।

শুধু ধারাবাহিকের পর্দাতেই নয়, টলিউডের একাধিক ছবিতেও অভিনয় করেছেন শংকর চক্রবর্তী। তবে আজ এত সম্মান এবং পুরস্কার তার হাতে রয়েছে বটে, কিন্তু একটা সময় ছিল যখন দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্য দিনরাত কঠিন পরিশ্রমও করতে হয়েছিল তাকে। তিনি অত্যন্ত গরিব পরিবারের সন্তান ছিলেন। তার আসল নাম ছিল হারাধন চক্রবর্তী। শংকর চক্রবর্তী তার ফিল্মি নাম।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলচ্চিত্র বিষয়ে পড়াশোনা করেছিলেন শংকর চক্রবর্তী। কিন্তু তখন তার হাতে পড়াশোনা চালানোর জন্য নূন্যতম খরচটুকুও ছিল না। নিজের পড়াশোনার খরচ তুলতে কখনও সাইকেলের দোকানে সাইকেল সারানোর কাজ, আবার কখনও চায়ের দোকানেও কাজ করতে হয়েছিল তাকে। যেটুকু টাকা পেতেন সেই টাকা দিয়ে খাওয়ার খরচ চালানোর পাশাপাশি নাইট কলেজের খরচ দিতেন তিনি।

খুব ছোট বয়স থেকেই অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার মনের মধ্যে। উৎপল দত্তের নাটকের গ্রুপে যোগ দিয়েছিলেন অভিনয় শেখার জন্য। এরপর টলিউডের কমেডি ছবি ‘বিবাহ অভিযান’-এ অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেটাই ছিল তার প্রথম অভিনয়। প্রথম সুযোগেই তোতলা গণেশের ভূমিকাতে বাজিমাত করে দিয়েছিলেন শংকর চক্রবর্তী। এখনও অনেকেই তাকে সেই নামেই মনে রেখেছেন।

সেই থেকে শুরু হয় অভিনয় জগতে শংকর চক্রবর্তীর যাত্রা। দীর্ঘ সময় ধরে নানা ছবি এবং দূরদর্শনের নানা ধারাবাহিকে অভিনয় করে তিনি দর্শকদের প্রশংসা পেয়েছেন। ৩০ বছরের অভিনয় কেরিয়ারে আর কখনও পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। অঞ্জন চৌধুরী থেকে গৌতম ঘোষ, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত থেকে ঋতুপর্ণ ঘোষেদের মত বড় বড় পরিচালকদের পছন্দের অভিনেতা ছিলেন তিনি।

কখনও কোনও ছবিতে ভিলেন, কখনও আবার বাবার ভূমিকাতে তার অভিনয় বারবার পছন্দ করেছেন দর্শকরা। ৬০ বছর বয়সী এই অভিনেতা এখনও অভিনয় করে চলেছেন বিভিন্ন ধারাবাহিকে। ‘ধুলোকণা’, ‘গুড্ডি’ ধারাবাহিকে এখন অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে তাকে।