মঙ্গলবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে সারা সন্ধ্যা জুড়ে একের পর এক গান গেয়ে মনোরঞ্জন করেছিলেন শহরবাসীর। তখন কে ভেবেছিল মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে সবকিছু? ম্যানেজমেন্টের গাফিলতি হোক বা অমোঘ নিয়তি, কেকে (KK) আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। কলকাতার মাটিতেই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে তার হৃদস্পন্দন। গান গাইতে গাইতেই শেষ বিদায় নিলেন তিনি। তারই গানের কথায় আজ তাকে ‘আলবিদা’ জানাচ্ছে গোটা দেশ!
বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ের ভারসোভা শ্মশানে কেকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। কেকের নিষ্প্রাণ শরীর ফিরিয়ে নিয়ে যেতে কলকাতায় এসে উপস্থিত হয়েছিলেন তার গোটা পরিবার। বৃহস্পতিবার শেষকৃত্যের সময় ভারসোভাতে গায়কের বাড়িতে উপচে পড়ছিল ভিড়। শেষবার তাকে একবার এক নজর দেখার জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন বলিউডের তাবড় তাবড় শিল্পীরা। শ্রেয়া ঘোষাল, অভিজিৎ, শংকর মহাদেভানরা চোখের জলে শেষ বিদায় জানালেন তাকে।
এদিন দুপুর ১টা নাগাদ ছেলের কাঁধে চড়ে ভারসোভার বাড়ি থেকে শ্মশানের উদ্দেশ্যে রওনা হন কেকে। ফুল, মালা ও চন্দনের সাজে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাকে। ভারসোভা মহাশ্মশানে নিয়ম মেনে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কাজ সম্পন্ন হল তার। তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছেন তার ছেলে নকুল। মেয়ে তামারাও উপস্থিত ছিলেন শ্মশানে। তার স্ত্রী জ্যোতিকেও পাওয়া গেল ক্লান্ত-বিধ্বস্ত চেহারায়।
View this post on Instagram
ঠাকুরপুকুর বিবেকানন্দ কলেজ এবং উল্টোডাঙ্গা গুরুদাস কলেজের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন কেকে। সোমবারের পর মঙ্গলবারও ছিল তার অনুষ্ঠান। দর্শকাসনে যতটা ধরে তার থেকে প্রায় তিনগুণ বেশি দর্শক এদিন অডিটোরিয়ামে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। অনেকে ভেতরে ঢোকার জায়গা না পেয়ে বাইরে ছিলেন। প্রবল গরমে দরদরিয়ে ঘাম ঝরছিল তার শরীর দিয়ে। এত কষ্টের মাঝেও তিনি পারফরম্যান্স বন্ধ রাখেননি।
View this post on Instagram
শরীরের সকল কষ্ট উপেক্ষা করে একের পর এক গান গেয়ে গিয়েছেন। রাত ন’টার সময় গ্র্যান্ড হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। হোটেলে ফিরতেই সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিএমআরআই হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে। বুধবার এসএসকেএম হাসপাতালে ময়না তদন্তের পর মুম্বাইতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তার নিষ্প্রাণ দেহ। বৃহস্পতিবার শেষকৃত্যের পর পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেল তার শরীর।
View this post on Instagram