চুরি বিদ্যা, মহাবিদ্যা যদি না পড়ো ধরা! তবে সিনে ইন্ডাস্ট্রিতে টুকলি করবেন, অথচ ধরা পড়বেন না, এমনটা এককথায় অসম্ভব। কারণ এখন সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। তার উপর আবার রয়েছে গুগোল। তাই কে কোথা থেকে, কতটুকু কপি (Copy) করছেন, কতটুকু রং চড়াচ্ছেন, সহজেই ধরে ফেলতে পারেন দর্শক। তবুও টুকলি চলছে অবিরাম। বলিউডের (Bollywood) পরিচালকেরা হলিউড থেকে গল্প নিয়ে অনায়াসে হুবহু টুকে দিচ্ছেন (Bollywood Movies Copied From) নিজের ছবিতে।
এদিকে আবার টলিউডও (Tollywood) দক্ষিণী ছবি থেকে হুবহু বাংলা ছবি তুলে আনছে (bollywood movie copy from south)। অর্থাৎ বলিউড, টলিউড জুড়ে এখন কার্যত শুধুই টুকলির জয়যাত্রা চলছে। এখন তাও অবশ্য ভদ্র-সভ্যভাবে আসল ছবিকে ক্রেডিট দিয়ে অনুপ্রেরণায় ছবি বানাচ্ছেন পরিচালকেরা। তবে জানলে হয়তো অবাক হবেন এক দশক আগে অব্দি বলিউডে যে কয়টি ছবি হিট হয়েছে, তার বেশির ভাগটাই হলিউড থেকে ঝেঁপে টোকা! আসুন জেনে নিই (bollywood copied movies list) বলিউডের ছবিগুলির মধ্যে কোনটি কোন হলিউড ছবি থেকে টোকা হয়েছে।
মুন্নাভাই এমবিবিএস (Munna Bhai MBBS) : ১৯৯৮ সালের হলিউড ছবি “প্যাচ অ্যাডামস” (Patch Addams) এর অনুপ্রেরণায় রাজকুমার হিরানি এই ছবিটি বানিয়েছিলেন। জানলে হয়তো অবাক হবেন, ছবিটি একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে বানানো হয় হলিউডে। অথচ রাজকুমার হিরানি এই ছবিকে সেলফ ক্রিয়েশন হিসেবেই উল্লেখ করেন!
বাজিগর (Bazigaar) : শাহরুখ-কাজল অভিনীত এই ছবিটিও হলিউড ছবি A Kiss Before dying (১৯৯১) এর থেকে হুবহু টুকে দেওয়া হয়েছে। তবে তৎকালীন হিট জুটিকে নিয়ে রিমেক ছবি বানানো হলেও তা নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাননি কেউ।
দুশমন (Dushman) : কাজল, আশুতোষ রানা, সঞ্জয় দত্ত অভিনীত সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার “দুশমন” ছবিটিও একসময় বলিউডে ব্যাপক সাফল্য লাভ করেছিল। এই ছবিটি হলিউড ছবি আই ফর দ্য আই ( Eye For The Eye, ১৯৯৬) এর অনুপ্রেরণা থেকে নির্মাণ করা হয়েছে।
অগ্নিপথ (Agneepath) : ১৯৯০ শালে অমিতাভ বচ্চন অভিনীত “অগ্নিপথ” ছবিটিও দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয়। এই ছবিটি হলিউড ছবি “স্কারফেস”র (Scarface) নকল। ২০১২ সালে আবার ছবিটির রিমেক হয়। সেই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন হৃত্বিক রোশন।
মোহব্বতেঁ (Mohabbatein) : ১৯৮৯ ছবি “ডিড পোয়েটস” (Did Poyets) সোস্যাইটিকে নকল করে এই ব্লকবাস্টার ছবিটি বানানো হয়েছিল। অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান অভিনীত এই ছবি উঠতি বয়সের যুবক-যুবতী, কিশোর-কিশোরী বিশেষত কলেজ পড়ুয়াদের বেশ আকর্ষণ করেছিল।
কোই মিল গেয়া (Koi Mil Gaya) : বলিউডের প্রথম স্কাইফাই ছবি বলা যেতে পারে এই ছবিকে। ছবিটি বিশ্ব বিখ্যাত স্কাই-ফাই পরিচালক স্পিল-বার্গের “ইটি” (Iti) ছবির নকল বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, “ইটি” কিন্তু সত্যজিৎ রায়ের বঙ্কুবাবুর বন্ধু গল্প দ্বারা অনুপ্রাণিত! একথা খোদ হলিউড পরিচালক নিজেই স্বীকার করেছিলেন।
চক দে ইন্ডিয়া (Chak de india) : “৭০ মিনিট রয়েছে তোমাদের হাতে, এই ৭০ মিনিট তোমাদের জীবনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ”, হকি ফাইনালের ঠিক আগে শাহরুখ খানের মুখের এই ডায়লগ আজও দর্শককে রোমাঞ্চিত করে। তবে জানলে হয়তো অবাক হবেন, হলিউডের “মিরাকল” (Miracle) ছবিতে কার্চ রাসেলের বক্তৃতাকেই হুবহু হিন্দিতে নকল করা হয়েছে।
পার্টনার (Partner) : হলিউড ছবি “হিচ” (Hitch) থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সলমন খান, গোবিন্দা, ক্যাটরিনা কাইফ, লারা দত্ত অভিনীত এই ছবি বানায় বলিউড। তবে হলিউড কিংবা বলিউডে এই কমেডি ছবি কিন্তু বিশেষ সফলতা অর্জন করতে পারেনি।
এয়েতরাজ (Aitrazz) : বলিউডের এই সাসপেন্স থ্রিলার ছবিটি হলিউডের “ডিসক্লোজার” (Disclosure) ছবির নকল। অক্ষয়কুমার, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এবং করিনা কাপুর অভিনীত এই ছবিটি পরবর্তীকালে দর্শকের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল।
দোস্তানা (Dostana) : অভিষেক বচ্চন, জন আব্রাহাম এবং প্রিয়াঙ্কা চোপড়া অভিনীত “দোস্তানা” হলিউড ছবি ”নাও আই প্রোনাউন্স ইউ চাক অ্যান্ড ল্যারি” (Now Eye Pronunce You Chack and Larry) ছবি থেকে নকল করা হয়েছে। দুটি ছবিই বক্স অফিসে ব্যাপক সফলতা অর্জন করে।
জুড়য়া (Judwaa) : জ্যাকি চ্যানের “টুইন ড্রাগন” (Twin Dragon) এর বলিউড ভার্সন ডেভিড ধাওয়ানের এই ছবি। শুধু পার্থক্য বলতে হিন্দি ভার্সনে ডেভিড ধাওয়ান কিছু নাচ গানের দৃশ্য ঢুকিয়েছিলেন যা আসল ভার্সনে ছিল না। পরবর্তীকালে এই ছবির রিমেকও হয়।