দক্ষিণের ছবি (South Indian Film Industry) দুনিয়াতে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন বাংলার মালদা জেলার ছেলে সাগর পাসওয়ান (Sagar Paswan)। সাম্প্রতিক ব্লকবাস্টার হিট তেলেগু ছবি ‘পুষ্পা’ (Pushpa) তার কেরিয়ারের শুরুর মাইলস্টোন বলা যেতে পারে। স্পেশাল ভিডিও ইফেক্ট বানানোর কাজে দক্ষ সাগর ‘পুষ্পা’ ছবির দুর্দান্ত ভিএফএক্স নিয়ে কাজ করেছেন। তার কাজ আজ সারা দুনিয়া থেকে প্রশংসা পাচ্ছে। যে কারণে বাংলার ছেলে পাড়ি দিতে যাচ্ছেন হলিউডে।
মালদা শহরের সানি পার্ক এলাকার বাসিন্দা সাগরের বয়স মাত্র ২৩ বছর। এরই মধ্যে তিনি পুষ্পা, বাঙ্গারাজু, ঘানির মতো একাধিক দক্ষিণ ভারতীয় ছবির নেপথ্যে কাজ করেছেন। দক্ষিণের পাশাপাশি বলিউডের ‘হিরোপান্তি ২’, ‘শর্মাজি নমকিন’ এর নেপথ্যে কাজ করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। স্পেশাল ভিডিও ইফেক্ট বানিয়ে ক্রমশ বাড়ছে তার নামডাক।
সাগর মালদার এক অত্যন্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে। তার বাবা রামকুমার পাসওয়ান একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। মা, বাবা ও ভাইকে নিয়ে ছোট্ট পরিবার নিয়ে মালদা জেলার বুকে ছোট্ট একটি বাড়িতে থাকেন তারা। তবে তার স্বপ্ন অনেকটা বড়। এই স্বপ্ন দেখার শুরুটা হয়েছিল সপ্তম-অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকেই।
ওই বয়সে অ্যানিমেটেড ছবি দেখে প্রথমবার তার মনে অ্যানিমেশন এবং সিনেমার প্রতি আগ্রহ জন্মায়। এরপর ব্লকবাস্টার হিট ‘বাহুবলী’র অসাধারণ ভিএফএক্স দেখে তিনি মুগ্ধ হয়ে যান। তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন এরপর তার কাজ হবে সিনেমা বানানো। এর জন্য রীতিমতো পড়াশোনাও করতে হয়েছে তাকে। পুরাতন মালদার গৌড় কলেজ থেকে মাস কমিউনিকেশন নিয়ে পড়ার পর অ্যানিমেশন শিক্ষার উপর জোর দেন তিনি।
সাগর একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন পারিবারিক সমস্যার কারণে নবম শ্রেণী থেকেই বিয়েবাড়িতে ফটোগ্রাফির কাজ শুরু করতে হয়েছিল তাকে। সেই সময় ভিডিও এডিটিং শিখেছিলেন তিনি। পাশাপাশি ইউটিউব থেকেও কাজ শিখেছেন। আরও ভালো করে শেখার জন্য মালদার এরিনা অ্যানিমেশন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন সাগর। এখানেই সর্বপ্রথম তার বানানো একটি বিজ্ঞাপন স্বীকৃতি পায়।
এরপর সাগর মুম্বাই এবং হায়দ্রাবাদের বিভিন্ন স্টুডিওতে পরীক্ষা দিতে শুরু করেন। হায়দ্রাবাদের একটি স্টুডিওতে প্রথম কাজ পান তিনি। তারপর তাকে আর ঘুরে তাকাতে হয়নি। সনক, পুষ্পা, বাঙ্গারাজু, ঘানি থেকে শুরু করে হিরোপান্তি ২, শর্মাজি নমকিনের মতো বিভিন্ন সিনেমাতে ছবির নেপথ্যে তিনি কাজ করে গিয়েছেন। এবার তার কাছে এল হলিউডের ডাক। এমপিসি কোম্পানির সঙ্গে বেশ কিছু কাজ করছেন তিনি। ভবিষ্যতে ভিএফএক্স সুপারভাইজার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন সাগর। নিজের লক্ষ্যের দিকে ধীরে ধীরে এক পা করে এগিয়ে আজ বাংলার গর্ব মালদা শহরের এই ছেলেটি।