উত্তম কুমারের মৃত্যুর দিন ঠিক কী কী ঘটেছিল? প্রকাশ্যে এল অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য

উত্তম কুমারের অকালমৃত্যুর কারণ কী? মৃত্যুর দিন ঠিক কী কী ঘটেছিল?

বাংলা সিনেমার মহানায়ক উত্তম কুমার (Uttam Kumar)। টলিউডকে (Tollywood) কার্যত খ্যাতির শিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনিই। অথচ মাত্র ৫৪ বছর বয়সেই আচমকা কাউকে কিছু টের পেতে না দিয়েই খাতির মধ্য গগনে থাকতে থাকতেই প্রয়াত হন তিনি। তারকার মতই নিঃশব্দে মৃত্যু হয়েছিল তার। ১৯৮০ সালের ২৪শে জুলাই, তারিখটা টলিউডের এর জন্য একটা কালো দিন। কারণ এই দিনেই প্রয়াত উত্তম কুমার।

জীবনের শেষ দিনটা পর্যন্ত লাইট ক্যামেরা অ্যাকশনের মধ্যেই ডুবে থেকেছেন উত্তম কুমার। ওইদিন সকাল থেকেই তার মধ্যে অসুস্থতার লক্ষণ ছিল। সেই সময় ’ওগো বধূ সুন্দরী’ ছবির শুটিং চলছিল। প্রযোজক কমল বনশলের যাতে কোনও ক্ষতি না হয় সেই কারণেই সেদিন একপ্রকার জোর করেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন উত্তম কুমার। শরীরের সঙ্গে তার মনের উদ্বেগটাও সেই সময় কিছু কম ছিল না।

ওই সময় সুপ্রিয়া দেবীও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। উত্তম কুমারের মাথার উপরেও নাকি দেনার চাপ ছিল। সেদিন গাড়িতে উঠতে গিয়েই প্রথম ধাক্কা পেয়েছিলেন তিনি। তিনি দেখেন তার দীর্ঘদিনের যাত্রাপথের সঙ্গী তার প্রিয় টেপ রেকর্ডারটা গাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। চুরি হয়ে গিয়েছিল ওই যন্ত্রটি। প্রতিদিন শুটিংয়ে যাতায়াতের পথে গান শুনতে শুনতে যাওয়াটা তার অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। টেপ রেকর্ডার না পেয়ে বিষন্ন হয়ে পড়েছিলেন উত্তম কুমার।

মহানায়কের সহ অভিনেতারা জানান ওইদিন শুটিং সেটে বড়ই আনমনা হয়ে ছিলেন তিনি। তবে তারই মধ্যে মেকআপ করে শুটিং ফ্লোরে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। দৃশ্যটা ছিল সুমিত্রা মুখোপাধ্যায় বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন আর উত্তমকুমার দাড়ি কামাতে কামাতে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলছেন, “আমিও দেখে নেব, আমার নাম গগন সেন…’’।

আরও পড়ুন : উত্তম কুমারের অকালমৃত্যুর কারণ কী? মৃত্যুর দিন ঠিক কী কী ঘটেছিল?

তবে এই সংলাপ বলার সময় থেকেই তার বুকে ব্যথা শুরু হয়ে যায়। তবুও তিনি ডায়লগ বলা থামাননি। সিনেমার ওই দৃশ্য লক্ষ্য করলে দেখা যায় বুক চেপে ধরেও ডায়লগ বলে চলেছেন উত্তম কুমার। সেটাই ছিল তার শেষ শট। এরপর বাড়ি ফিরে আসেন মহানায়ক। তবে এরপরেও সেদিন রাতে বন্ধুর বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন তিনি। বাড়ি ফিরে আসার পর রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার অসুস্থতাও বাড়তে থাকে।

আরও পড়ুন : প্রেমে পড়লেও কেন বিয়ে করেননি উত্তম-সুচিত্রা?

এরপর উত্তম কুমারকে দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু ততক্ষণে যা ঘটার ঘটে গিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই প্রয়াণ ঘটে উত্তম কুমারের। উত্তম কুমারের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে টলিউডে যেন স্বর্ণযুগের অন্ত হয়।

আরও পড়ুন : বাবা-মেয়ের সম্পর্ক নিয়েও নোংরামি! সুপ্রিয়ার মেয়েকে স্বীকৃতি দেননি উত্তম কুমার