টলিউডে কাজ নেই, চলছে না সংসার! কাজ চেয়ে আবেদন জানালেন পরিচালক

বিনোদনের দুনিয়া অনিশ্চয়তায় ভরা। একাধিক হিট ছবি দর্শককে উপহার দিয়েছেন অথচ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যাদের অস্তিত্ব মুছে গিয়েছে বিনোদনের দুনিয়া থেকে, এমন পরিচালক, অভিনেতা অভিনেত্রী কিংবা কলাকুশলীদের সংখ্যা নেহাত কিছু কম নয়। আসলে প্রতিযোগিতার এই বাজারে টিকে থাকতে গেলে পরিশ্রমের সঙ্গে থাকতে হয় ভাগ্যের জোর। তাছাড়া স্বজনপোষণ, কাস্টিং কাউচের মত বিতর্ক তো লেগেই আছে। তার উপর আবার করোনা এসে বিনোদনের দুনিয়াকে কোণঠাসা করে দিয়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে কাজের অভাবে সমস্যায় পড়েছেন টলিউড (Tollywood) পরিচালক প্রেমাংশু রায় (Premangshu Roy)। ২০১৭ সালে তার পরিচালনায় ‘চিলেকোঠা’ ছবিটি মুক্তি পায় এবং প্রশংসাও পায়। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ব্রাত্য বসু, ঋত্বিক চক্রবর্তী, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়সহ আরও অনেকে। তবে ইদানিং বাংলার এই পরিচালকের হাতে বিশেষ কাজ নেই। তার পরিস্থিতি এমনই যে সংসার চালানোও তার কাছে দুঃসাধ্য বলে মনে হচ্ছে। তাই তিনি সাহায্যের আবেদন রাখলেন সোশ্যাল মিডিয়াতে।

প্রেমাংশু তার পোস্টটিতে লিখেছেন তিনি বিগত ২৭ বছর ধরে নাটকের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তার হাতে টলিউড ইতিমধ্যে ৪ টি ছবি পেয়েছে। কিন্তু এখন আর তার হাতে বিশেষ কাজ নেই। কর্মহীনতায় ভুগে শেষমেষ পরিচালক ফেসবুকের শরনাপন্ন হলেন। নিজের বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরলেন সকলের সামনে। এই দূঃসময় কাটিয়ে ওঠার জন্য চাইলেন কাজ। তিনি জানিয়েছেন, বাংলা ধারাবাহিকের চিত্রনাট্যের লিখতে কিংবা ধারাবাহিকে অভিনয় করতে চান তিনি। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তার অভিজ্ঞতা বাবদ ২৭ বছর নাট্য সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা এবং বাংলাতে চারটি ছবি পরিচালনার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।

প্রেমাংশু লিখেছেন, “সিরিয়াল, ওয়েব সিরিজ, সিনেমা যে কোন জায়গায় লেখা , অভিনয় বা পরিচালনার কাজ চাইছি। দীর্ঘ সাতাশ বছর ধরে নাট্য চর্চার জীবনে এক ডজনেরও বেশি নাট্য পরিচালনা, গোটা দশেক নাটক লেখা, গোটা চল্লিশ নাট্যে অভিনয়, সিনেমার জন্য গান লেখা এবং চারটে পূর্ন দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র(ফিচার ফিল্ম)পরিচালনা করেছি। যে ছবি গুলোর গল্প ও চিত্রনাট্য আমার লেখা। আমার শেষ মুক্তি প্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিলো “চিলেকোঠা”। যে ছবিটি “সিডনি চলচ্চিত্র উৎসব” এ শ্রেষ্ঠ ছবি, শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য ও শ্রেষ্ঠ অভিনেতার (ঋত্বিক চক্রবর্তী) পুরস্কার পায়”।

পরিচালকের আবেদন, “দীর্ঘ দিন লকডাউন ও প্রযোজকের অভাবে আমি দীর্ঘদিন কর্মহীন। আমার সংসার চলছে না। আমি লেখা, পরিচালনা ও অভিনয় ছাড়া সত্যিই কোন কাজ জানি না যেটা দিয়ে পেটের ভাত জোগাড় করা যায়। আর শুধুই নাটকে কাজ করেও পেটের ভাত জোগাড় হয় না। আমি সিরিয়াল বা ওয়েব সিরিজের জগতে সত্যিই কাউকে চিনি না। আর চলচ্চিত্র জগতের যে সব প্রযোজকদের চিনি বা কাজ করেছি, তারা এখন কাজ করছেন না। তাই এই মানবিক আবেদন।” পরিচালক কারও কাছে আর্থিক সহায়তা প্রার্থনা করেননি। যোগ্যতা বিচার করে তাকে উপযুক্ত সাম্মানিকসহ কাজ দেওয়া হলেই তিনি খুশি।