‘দায়িত্ববান’ ছেলেমেয়েরাই বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখেন! বিতর্কিত মন্তব্যে ট্রোলড অভিনেত্রী সুদীপ্তা

মা-বাবা, দাদু-ঠাকুমা, কাকা-জ্যাঠাদের নিয়ে যৌথ পরিবারের এখন আর সেভাবে দেখা মেলে না। এই আধুনিক প্রজন্ম ‘নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি’তেই অভ্যস্ত যেখানে শুধুই বাবা-মা এবং সন্তানকে নিয়েই গড়ে উঠেছে সংসার। এই ছোট ছোট পরিবারের ছোট্ট ঘরে জায়গা হয় না বৃদ্ধ বাবা-মায়েরও। তাদের ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম (Oldage Home)। নচিকেতার গানে সমাজের এই চিত্রটা খুব ভালোভাবেই ধরা পড়ে।

বৃদ্ধাশ্রম ভালো নাকি খারাপ? আধুনিক প্রজন্মের মধ্যেই রয়েছে মতপার্থক্য। সন্তানের কাছে বাবা-মায়ের থাকার জায়গা হবে না বা বাবা-মাকে দেওয়ার মত সন্তানের সময় হবে না এমনটা ভাবতে পারেন না অনেকে। আবার আধুনিক কর্মব্যস্ততার যুগে বাবা-মায়ের ‘উপযুক্ত দেখাশোনা’র জন্য অনেকেই বৃদ্ধাশ্রমের স্বপক্ষে। অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীও (Sudipta Chakraborty) এই দলে পড়েন। সম্প্রতি বৃদ্ধাশ্রমের পক্ষে নিজের বক্তব্য তুলে ধরে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিতর্কের মুখে পড়তে হল তাকে।

Sudipta Chakraborty

ঘটনার সূত্রপাত একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র‌ করে। বিশ্ব মাতৃ দিবস উপলক্ষে অভিনেতা সপ্তর্ষি রায় ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি লেখেন, “বলছিলাম সবাই যদি মাকে এত ভালবাসেন তাহলে বৃদ্ধাবাসগুলোতে কারা থাকেন?! তাঁদের ছেলেমেয়েরা বোধহয় কেউই এই ফেবু পাড়ায় নেই!!” এই পোস্টের নিচে অনেকেই নিজের নিজের মতামত রাখতে শুরু করেন। তাদের মধ্যে থেকে নজর কেড়েছে সুদীপ্তা চক্রবর্তীর কমেন্ট।

সুদীপ্তা কমেন্ট করেছেন, ‘বৃদ্ধাবাসের সঙ্গে মা বাবা কে না ভালোবাসার কোন সম্পর্ক কিন্তু নেই। আজকের নিউক্লিয়ার রেস্পন্সিবল ছেলেমেয়ে রা বাবা মা কে বৃদ্ধাবাসের রাখেন তাঁদের সুবিধার জন্যই। আমরা সারাদিন কাজের পিছনে ছুটবো, টাকা রোজগার করবো, বাচ্চা মানুষ করবো, নানান দায়িত্ব পালন করবো সারাদিন আর মা বাবা একা একা বাড়িতে বসে টিভি সিরিয়াল দেখে একাকীত্ব কাটানোর ব্যর্থ চেষ্টা করবেন।

কোন ইমারজেন্সিতে রেসপন্সিবল কাউকে তক্ষুণি আসে পাশে পাবেন না… এমন অবস্থায় রেখে দেওয়ার চেয়ে অনেক স্বাস্থ্যকর হলো সমবয়সী আরো অনেকগুলো মানুষের সঙ্গে অবসর জীবন কাটানো। দরকারে মেডিকেল ইমার্জেন্সিতে পাশে প্রপারলি ট্রেইন্ড লোকজন পাওয়া অনেক বেশি জরুরী।’

বলাবাহুল্য, অধিকাংশ নেটিজেন সুদীপ্তার সঙ্গে মোটেই একমত হননি। সপ্তর্ষি নিজেও মন্তব্য করেছেন, মা-বাবা বৃদ্ধ বয়সে টাকাপয়সা তো চাইছেন না, চাইছেন শুধু একটুখানি সময়। তাছাড়া অনেক সময় ইচ্ছার বিরুদ্ধেই বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হয়। সে কথাও উল্লেখ করতে ভোলেননি তিনি।