কালো বলে অপমান, সুন্দরী স্ত্রীকেও কুৎসিত ইঙ্গিত, সেই ছেলেই আজ শাহরুখের ছবির পরিচালক

এশিয়ার দেশগুলোতে আজও যেকোনও ব্যক্তির প্রধান পরিচয় হয়ে ওঠে তার গায়ের রং। যত বড় গুণী ব্যক্তিই হোন না কেন, গায়ের রং কালো হলে তাকে নিয়ে সমালোচনা করবেই এই সমাজ। মেয়েদেরকে এই সমস্যার মুখে পড়তে হয় বেশি। তবে ছেলেরাও কিন্তু এই সমস্যার ঊর্ধ্বে নন। দক্ষিণী পরিচালক (South Indian Movie Director) অ্যাটলি কুমারকেও (Atlee Kumar) সমাজের নিম্ন মানসিকতার শিকার হতে হয়েছিল।

অ্যাটলি কুমারের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার বাসিন্দাদের প্রথম পরিচয় তার কাজের সূত্রে নয়। তিনি যখন প্রথম বার তার স্ত্রীর সঙ্গে ছবি শেয়ার করেছিলেন তখন সমাজের নোংরা মানসিকতার প্রমাণ পেয়েছিলেন। তার বান্ধবী তথা স্ত্রীর গায়ের রং ছিল ফর্সা। কালো ছেলের পাশে ধবধবে ফর্সা মেয়েকে দেখে সেদিন ট্রোল করেছিল গোটা সোশ্যাল মিডিয়া।

অ্যাটলি এবং তার বান্ধবী কৃষ্ণপ্রিয়ার বিয়েটা যখন হয়েছিল তখন তারা দুজনেই ইন্ডাস্ট্রিতে স্ট্রাগল করছিলেন। অ্যাটলি তখন গল্প লিখে প্রযোজকদের বাড়ি বাড়ি ঘুরতেন। অন্যদিকে কৃষ্ণাপ্রিয়া তামিল ইন্ডাস্ট্রির ধারাবাহিকে অডিশন দিতেন। বিয়ের পরই রজনীকান্তের ‘রোবট’ ছবিতে সহ পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।

অ্যাটলি এবং তার স্ত্রীর ছবি প্রকাশ্যেই আসতেই অনেক কঠিন মন্তব্য ধেয়ে এসেছিল তাদের উদ্দেশ্য করে। কেউ বলেছিলেন, এই মেয়েটি শুধু টাকার লোভেই এমন কালো ছেলেকে বিয়ে করেছে! কেউ বলেছিলেন ছেলেটি নাকি কালো জাদু করে এমন সুন্দরী মেয়েকে বউ হিসেবে পেয়েছে! ইত্যাদি, ইত্যাদি।

দুটো মানুষ গায়ের রং, রূপের বিচারের ঊর্ধে উঠে যে শুধু একে অপরকে ভালোবেসেও এক হতে পারেন এই ধারণা কারও মাথাতেই আসেনি সেদিন। এমনকি বন্ধু মহলেও অনেক কু-কথা শুনতে হয়েছিল নব দম্পতিকে। তবে তারা মুখ বুজে সহ্য করেছিলেন সবকিছু। তাদের হয়ে জবাব দিয়েছে সময়।

এই ছেলেটিই আজ দক্ষিণী সিনেমা জগতের জনপ্রিয় পরিচালক। তার ঝুলিতে রয়েছে ৪টি ছবি। সবকটি ছবিই বক্স অফিসে সুপারহিট হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘রাজা রানী’, ‘থেরি’, ‘মারসাল’ এর মত ছবি। এবার তার পরবর্তী প্রজেক্ট শাহরুখ খানের সঙ্গে। ছবির নাম ‘জওয়ান’। অ্যাটলি প্রমাণ করেছেন গায়ের রং কারও যোগ্যতা হতে পারে না। সাফল্যের পথে বাঁধার পাহাড় তুলেও দাঁড়াতে পারে না ‘কালু’ কিংবা ‘কালুয়া’ ডাক।