টলিউডে কাজ নেই, বসে বসে যন্ত্রণার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন শকুন্তলা বড়ুয়া

কপালে বড় লাল টিপ, চোখে কাজল আর ঠোঁটে লিপস্টিক, ৯০ এর দশকের একাধিক বাংলা ছবিতে (Bengali Movie) এই সাজেই বহুবার দেখা গিয়েছে তাকে। বাংলা টেলিমিডিয়ার ক্ষীরের পুতুল ধারাবাহিকে শেষবার তার দেখা মেলে। এরপর বহু দিনের প্রতীক্ষা। শেষমেষ দেবের ‘টনিক’ (Tonic) তাকে ফের ক্যামেরার সামনে ফেরার সুযোগ করে দিল। বহুদিন বাদে কাজ পেয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন শকুন্তলা বড়ুয়া (Shakuntala Barua)।

ইন্ডাস্ট্রি ক্রমশ বদলে যাচ্ছে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে কষ্ট করে হলেও খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন শকুন্তলা। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে একটি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “জীবনে সব কিছুই পরিবর্তনশীল। তবে আমি প্রাচীনপন্থী, আধুনিকতা মেনে নিতে কষ্ট হয়। প্রতি পদক্ষেপে মনে হয়, এ রকম ভাবে কেন বলছে, এভাবে কেন করছে? কিন্তু মানিয়ে নিতে হয়। তার মধ্যেই নিজস্বতা বজায় রাখি। আজ পর্যন্ত আমায় কেউ স্লিভলেস পরতে দেখেননি। সাজগোজেও পুরনোপন্থী আমি। লেস-নেট খুব ভাল লাগে। এখনকার ফ্যাশনে হয়তো তার চল নেই।”

তিনি কাজপাগল মানুষ। কাজ ছাড়া ফাঁকা বসে থাকতে পারেন না। অথচ টিভি সিরিয়ালের পরিচালক-প্রযোজকরা তাকে ডাকেন না। অভিনেত্রীর অভিযোগ, “শেষ সিরিয়াল করেছি ‘ক্ষীরের পুতুল’। তার পরে আর প্রস্তাব পাইনি। অনেকে বলেছিলেন কাজের কথা, কিন্তু কোনও ডাক আসেনি। বসে থাকতে-থাকতে নিজেই এক নামী প্রযোজককে ফোন করে বলি যে, ‘আমার জন্য কোনও চরিত্র থাকলে জানিয়ো।’ এর আগে জীবনে কাউকে কখনও বলিনি কাজের জন্য।

আমার খাওয়া-পরার অভাব হবে না। কিন্তু কাজের মানুষ কাজ ছাড়া বসে থাকতে পারি না। অসুস্থ, কাজ করতে পারছি না, সেটা অন্য কথা। কিন্তু সুস্থ মানুষ, কাজ নেই, বসে আছি। সেটা যন্ত্রণাদায়ক।” সেই যন্ত্রণা বুকে নিয়েই এতদিন নিজেকে অন্য কাজে ব্যস্ত রেখেছেন। অবসর সময়ে গান গাওয়া, কবিতা লেখা, ছবি আঁকা, রান্না করা আর ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের গান শেখান। তবে অভিনয়ের খিদেটা মনের মধ্যে থেকেই গিয়েছে। যে প্রযোজক বলেছিলেন যোগাযোগ করবেন, তিনি আর ফোন করেননি।

শকুন্তলা জানিয়েছেন, “আর এক প্রযোজনা সংস্থা থেকে ডাক এসেছিল। লুক টেস্ট হওয়ার কথা ছিল। আমার শুধু একটাই চাহিদা ছিল আলাদা মেকআপ রুমের। আসলে বয়স হয়েছে তো। একটা রুম পেলে রিল্যাক্স করা যায়। সমবয়সি কারও সঙ্গে রুম শেয়ার করতেও দ্বিধা নেই। কিন্তু ছোট ছোট ছেলেমেয়ের মাঝে বসে থাকতে পারব না। তারা ফোনে কথা বলবে আর আমি সামনে বসে থাকব। তা কি হয়?”

তিনি আরও বলেছেন, “সিরিয়ালটা শুরু হলে দেখলাম অন্য একজনকে কাস্ট করা হয়েছে। পরে সেই ধারাবাহিকের হিন্দি ভার্শনে অভিনয়ের জন্য ডাক আসে আমার মেয়ে পিলুর (রাজসী বিদ্যার্থী) কাছে। ও তখন তাপসী পান্নুর ‘উয়ো লড়কি হ্যায় কহাঁ’র প্রস্তাব পেয়ে যাওয়ায় ‘না’ করে দেয়”। উল্লেখ্য, শকুন্তলার মেয়ে রাজসী বিদ্যার্থী বলিউডের পরিচিত মুখ। তবে তার গানের সুরে মেতে রয়েছে মুম্বাই। তার জামাই বলিউড অভিনেতা আশিস বিদ্যার্থী।