অমিতাভ তাকে খুন করতে চেয়েছিলেন! ভয়ংকর অভিযোগ তুলেই মারা যান এই অভিনেত্রী

সত্তরের দশকের শুরুতে যখন বলিউডে (Bollywood) রাজত্ব করছিলেন রাজেশ খান্না, অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan) থেকে শুরু করে হেমা মালিনী, জিনাত আমানরা, তখন সেই সময় আরও এক অভিনেত্রী ক্রমে তার মোহময়ী রূপে আচ্ছন্ন করে ফেলেছিলেন ইন্ডাস্ট্রিকে। নাম তার পারভিন বাবি (Parveen Babi)। বলিউডের রহস্যময়ী এই অভিনেত্রীকে নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা।

১৯৪৯ সালে গুজরাটের জুনাগড়ের জন্মেছিলেন পারভিন। পাঁচ বছর বয়সে তিনি তার বাবকে হারিয়েছেন। আমেদাবাদের মাউন্ট কার্মেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে স্নাতক হয়েছিলেন পারভিন। এরপর ১৯৭২ সালে মডেল হিসেবে তার কেরিয়ার শুরু হয়। সেই থেকেই তিনি বলিউডে প্রবেশের সুযোগ পেয়ে যান।

PARVEEN BABI

১৯৭৩ সালে ‘চরিত্র’ ছবির হাত ধরে বলিউডে প্রবেশ করেছিলেন পারভিন। তবে ১৯৭৪ সালে ‘মজবুর’ ছবির হাত ধরে তিনি জনপ্রিয়তা পেতে থাকেন। ১৯৭৫ সালে অমিতাভ বচ্চন, শশী কাপুরের সঙ্গে ‘দিওয়ার’ ছবিটি মুক্তি পায়। এরপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গেই তিনি ৮ টি সফল ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।

তার কেরিয়ার তখন দুর্দান্ত গতিতে এগোচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রেমের জোয়ারেও গা ভাসিয়েছিলেন বলিউডের লাস্যময়ী এই অভিনেত্রী। প্রথমে ড্যানি ডেনজংপা এবং পরে কবীর বেদির সঙ্গে তার প্রেম হয়। পরে সেসব ভেঙে গিয়ে মহেশ ভাটের প্রেমে পড়েন এই অভিনেত্রী। কিন্তু ১৯৭৯ সাল থেকে সবকিছু বদলাতে শুরু করে।

AMITABH BACHCHAN

ওই বছর একদিন ঘরে ঢুকে পারভিনকে দেখে চমকে যান মহেশ। তার হাতে ছিল একটি ছুরি এবং তিনি ঘরের এক কোণে ভয়ে কুঁকড়ে বসেছিলেন। মহেশ কিছু বলতে গেলে তিনি ইশারায় বলেন ঘরে নাকি এমন কেউ রয়েছেন যিনি পারভিনকে হত্যা করতে চান। মহেশ বুঝতে পারেন পারভিনের কিছু মানসিক সমস্যা আছে। তিনি স্কিৎজোফ্রেনিয়ার শিকার ছিলেন ছিলেন।

PARVEEN AND MAHESH

বহু মনোবিদের পরামর্শ, এমনকি আমেরিকাতে নিয়ে গিয়ে তার চিকিৎসা করালেও পারভিন সুস্থ হননি। বরং দিন দিন তার আতঙ্ক বাড়তে থাকে। একবার তো তিনি বলে বসেন অমিতাভ বচ্চন নাকি তাকে খুন করতে চান। তিনি ভয় পেতেন তার খাবারে বিষ মিশানো আছে, তাই তিনি সেটা আগে মহেশকে খাওয়াতেন। ২০০৫ সালে মুম্বাইয়ের বাড়িতে তার দেহ উদ্ধার হয়।

PARVEEN BABI

তার মৃত্যুর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু খুঁজে পায়নি পুলিশ। মানসিক অবসাদের শিকার হয়ে তার মৃত্যু হয়েছিল বলে জানিয়েছিল পুলিশ। তবে পুলিশ যেদিন তাকে উদ্ধার করে পারভিনের মৃত্যু তার থেকে তিন দিন আগে ঘটেছিল। তার শেষকৃত্যের জন্য এগিয়ে আসেনি পরিবার-পরিজনরা। মহেশই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।