টলিউড (Tollywood) তথা বলিউড (Bollywood), একসময় এই দুটি ইন্ডাস্ট্রিতে এই জমিয়ে কাজ করেছিলেন মৌসুমী চ্যাটার্জী (Mousumi Chatterjee)। বেশ কয়েক বছর আগে পর্যন্ত তার অভিনয় যাত্রা অটুট ছিল। কিন্তু এখন বয়সের ভারই হোক আর যে কারণই থাকুক না কেন মৌসুমীকে সেভাবে ধারাবাহিকভাবে পর্দায় পাওয়া যায় না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সিনেমার সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন ঠিকই কিন্তু তার অভিনীত সিনেমা দাগ কেটে গিয়েছে দর্শকদের মনে।
গয়নার বাক্স থেকে পিকু, মৌসুমী চ্যাটার্জীকে টলিউড এবং বলিউডের এই দুটি সিনেমাতে শেষ অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল। ১৯৬৭ সালে ‘বালিকা বধূ’ (Balika Badhu) ছবির মাধ্যমে তার অভিনয় জীবনের শুরুটা হয়। তবে ২০১৯ সালে বড় মেয়ে পায়েল সিনহা (Payel Sinha) মৃত্যুর পর তিনি যেন নিজেকে কেমন গুটিয়ে নিয়েছিলেন। তবে মেয়ের শোক সামলে উঠতে পেরেছেন কি?
শুধু মেয়ের মৃত্যু শোক নয়, মেয়ের মৃত্যুর দায়ভারাটও তাকেই নিতে হয়েছিল। ছোট থেকেই তার মেয়ে পায়েল জুভেনাইল ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগতেন। তার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল পোশাক ব্যবসায়ী ডিকি সিনহার। এই ডায়াবেটিসের কারণেই মাত্র ৪৫ বছর বয়সে পায়েলের মৃত্যু হয়। এই শোক ভেতর ভেতর ভেঙে দিয়েছিল মৌসুমীকে। তবে সকলে অবাক হয়েছিলেন যখন তার জামাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন।
২০১৮ সালে পায়েল কোমায় চলে যান। তাকে সেই অবস্থা থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। ডিকি অভিযোগ করেন মা হয়ে মেয়েকে শেষ বেলায় দেখতে আসেননি মৌসুমী। পায়েলের ছোট বোন এবং বাবা তার শেষ কৃত্যে হাজির হয়েছিলেন অবশ্য। মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে মৌসুমীর সম্পর্কটা ভাল ছিল না মোটেই। পায়েলের কাস্টডি চেয়ে মৌসুমী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বলে শোনা যায়।
আরও পড়ুন : এই বাঙালি অভিনেতার ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেনি বলিউড তারকারা, ছোট্ট ছেলেটিকে চিনতে পারছেন?
মৌসুমী বলেন তিনি না চাইতে যেমন অনেক কিছু পেয়েছেন, তেমন নিজের আঁচল খালি করে মেয়েকে ভগবানের হাতে তুলে দিয়েছেন। তবে তিনি নিজের মনকে শান্ত করেছেন এই ভেবে যে দেশের শহীদ জওয়ানদের মায়েরাও তো তাদের সন্তানদের মৃত্যুর হাতে সঁপে দিতে পারেন। তিনি মনে করেন কষ্ট বা দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার জিনিস নয়।
আরও পড়ুন : উত্তম কুমারের প্রপৌত্র এল ঘরে, চুপিসারে বাবা-মা হলেন গৌরব-দেবলীনা? শুভেচ্ছার বন্যা ইন্ডাস্ট্রিতে
সবার সামনে কাঁদতেও তিনি পারেন না। তাই শেষ বয়সে মেয়ের মৃত্যু শোক সামলেও নিজেকে শক্ত রেখেছেন মৌসুমী। তার কথায়, “আমি এখনও হাসতে পারি। আমার মনে হয় আপনাকে আনন্দের কারণ হতে হবে। ব্যক্তিগত কারণে আমি সবার সামনে কাঁদতে পারি না। এরকম শক্ত করেই আমার মা-বাবা আমায় তৈরি করেছেন।”