

কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ (Krishna Kumar Kunnath) ওরফে কেকের (KK) মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে একটা গোটা দিন। কেকের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে প্রতিটা মুহূর্ত বড়ই দুঃসহ কাটছে তার ভক্তদের। কলকাতায় স্টেজ পারফরম্যান্স করতে এসে গান গাইতে গাইতেই শেষ হয়ে গেল তার জীবন। মাত্র ৫৪ বছর বয়সে কেকের এমন পরিণতি হবে এমনটা মেনে নিতে পারছেন না কেউই। সোশ্যাল মিডিয়াতে বারবার ঘুরেফিরে আসছে কেকের স্মৃতি।
স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে কেকের স্ত্রী জ্যোতি কৃষ্ণা (Jyothy Krishna) এবং সন্তানরা এসে পৌঁছেছেন কলকাতায়। কেকের সঙ্গে জ্যোতির ৩১ বছরের দাম্পত্যের এমন মর্মান্তিক পরিণতি ঘটলো! স্ত্রী এবং পরিবারকে ছেড়ে না ফেরার দেশেই চলে গেলেন কেকে। অথচ কেকে কিন্তু কখনোই জীবনের চরমতম কঠিন পরিস্থিতিতেও তার প্রেমিকা তথা স্ত্রী জ্যোতির হাত ছাড়েননি। বলিউডের এভারগ্রীন প্রেম কাহিনীগুলোর মতো কেকে এবং জ্যোতিরও দারুন সুন্দর এক প্রেম কাহিনী রয়েছে।
জ্যোতির সঙ্গে তার আলাপ হয়েছিল কৈশোরে। সেই থেকে তাদের প্রেম গড়ে ওঠে। এরপর যখন তারা বড় হলেন, সম্পর্ক পূর্ণতা পাওয়ার সময় এল, তখন কেকের সঙ্গে বিয়ে দিতে বেঁকে বসে জ্যোতির পরিবার। কারণ কেকে তখন ছিলেন বেকার। কিন্তু কেকে এবং জ্যোতি নিজেদের উপর বিশ্বাস হারাননি। জ্যোতিকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার তাগিদ জন্মায় তার মধ্যে। তবে সেই সময় গানের দুনিয়াতে তেমন প্রতিষ্ঠা পাননি কেকে। তাই তিনি সেলসের চাকরি নিয়েছিলেন। গান ছিল তার প্যাশন।
তবে প্রেমিকার কথা ভেবে নিজের প্যাশনকে সামরিক দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন কে কে। কে কে সেলসের চাকরি পাওয়ার পর ১৯৯১ সালে তারা বিয়ে করেন। তারপর কেটে গিয়েছে ৩১টা বছর। এর মাঝে তাদের জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিয়ের তিন মাস পর সেলসে চাকরি আর করতে পারেনি কে কে। তারপর থেকেই শুরু হয় তাদের সংগ্রাম। ১৯৯৯ সালে কেকের প্রথম অ্যালবাম মুক্তি পায়। এরপর অবশ্য তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
জ্যোতি এবং কেকে দুজনেরই পেশা আলাদা। তবে পেশা আলাদা হলেও তাদের সম্পর্কে তার কোনও প্রভাব পড়েনি। বেশ সুখেই দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করছিলেন তারা। বলিউড সেলিব্রেটিদের দাম্পত্য জীবন ভাঙতে সময় লাগে না। কিন্তু জ্যোতি এবং কেকের মাঝে ভাঙন ধরাবে এমন দুঃসাধ্য মৃত্যু ছাড়া আর কারও ছিল না। বিশ্বাস রেখে আজীবন একসঙ্গে পথচলার প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন তারা। জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত কে কে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন।