জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত বাবাকে যোগ্য সম্মান দেয়নি টলিউড, আক্ষেপে মুখ খুললেন মেয়ে জোজো

বাংলা সিনেমা জগতে মৃণাল মুখার্জি (Mrinal Mukherjee) নামটা একসময় অনেকটা জায়গা জুড়ে ছিল। সেই সময় টলিউডের নামিদামি পরিচালকদের সঙ্গে ওঠাবসা ছিল তার। বিভিন্ন শেডের চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরতেন অভিনেতা। মানুষের ভালোবাসা থেকে জাতীয় পুরস্কারে ভরে উঠেছিল তার ঝুলি। তবে মৃত্যুর তিন বছরের মাথাতেই টলিউড ভুলতে বসেছে তাকে। বাবাকে নিয়ে তাই আবেগপ্রবণ কন্যা জোজো (Jojo)।

বাবার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে বাবার সম্পর্কে অকপট অভিনেতার তারকা কন্যা জোজো। জোজো মনে করেন তার বাবা সবসময় নিজেকে প্রচারের আলো থেকে দূরেই রেখেছিলেন। দর্শক তাকে মনে রেখেছেন ঠিকই তবে তিনি তার যোগ্য সম্মানটুকু পাননি। জোজোর কথায়, “বাবা পুরনো দিনের মানসিকতার মানুষ। তাঁর কাছে কাজটাই সব কিছু ছিল। কাজের ক্ষেত্রে যতটুকু প্রচার হয়েছে, ওই ততটুকুই। তার বাইরে নিজের কোনও প্রচার করেননি।”

জোজো আরও বলেছেন, “বাবা খুব চাপা স্বভাবের ছিলেন। নিজের কোনও খারাপ লাগার কথাই আমাকে বলতেন না। তবে আমি মনে করি, জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পরেও প্রাপ্য বাবা পাননি। সেটা ভেবে খারাপ লাগে নিশ্চয়ই। আসলে যে সময় তিনি পুরস্কারটা পেয়েছিলেন, তখন সংবাদমাধ্যম ততটা সক্রিয় ছিল না। এখন কেউ জাতীয় সম্মান পেলে যতটা মাতামাতি হয়, তখন সেটা ছিল না।”

মৃত্যুর আগে পর্যন্ত কাজ করে যেতে চেয়েছিলেন অভিনেতা। রোগ-ব্যাধিকে তোয়াক্কা করেননি কখনও। সেই সব দিনের স্মৃতি মনে করে জোজো বলেছেন, “বাবার কাছে কাজই ছিল সব। মৃত্যুর আগে রোগব্যাধিতে অনেক যন্ত্রণা পেয়েছেন। কিন্তু তখনও কাজ করে যেতে চেয়েছেন। শেষ ছবির শ্যুটিংয়েও কাউকে বুঝতে দেননি ওঁর অসুবিধা”। বাবার কাছেই জোজোর সংগীত শিক্ষার হাতেখড়ি হয়েছিল। তিনি চেয়েছিলেন মেয়ে তার কাছে আরও কিছু সময় গানের তালিম নিক। তবে তার সেই ইচ্ছা অপূর্ণই থেকে যায়।

জোজো বলেছেন, “বাবা পুরাতণী গান খুব ভালো জানতেন। চাইতেন, আমিও যাতে নিজের গানকে সমৃদ্ধ করি। নানা কারণে সেটা আর তখন হয়ে ওঠেনি। আসলে ভাবতে পারিনি বাবা এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন। থাকলে হয়তো লকডাউনেও অনেক কিছু শিখতে পারতাম।” সবশেষে তিনি বলেন, “আমার জীবনে যা শিখেছি, তার বেশিরভাগই শিখিয়েছেন বাবা। ওঁর থেকে সত্যনিষ্ঠ আর বিনম্র হওয়ার যে শিক্ষা পেয়েছি, তা সব সময় আমার সঙ্গে থাকবে।”