পাত্রের বয়স ৭৫, আর পাত্রী ৪৯! ২০২০ সালে লকডাউনের মধ্যে যখন বিয়েটা সেরেছিলেন দীপঙ্কর দে এবং দোলন রায় তখন এরকমই বয়স ছিল দুজনের। তার আগে অবশ্য দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর লিভ ইন সম্পর্কে কাটিয়েছিলেন তারা। দোলনের মায়ের বয়সী দীপঙ্কর, তার উপর আবার তার একটি বিয়ে এবং দুই সন্তানও ছিল। দোলনের দাবি, তিনি দীপঙ্কর এবং তার প্রথম স্ত্রীর সংসার ভাঙেননি।
দোলন এবং দীপঙ্কর বলতে গেলে প্রায় ২২ টা বছর একসঙ্গে কাটিয়েছেন। দুই দশক আগে তাদের জন্য এই সিদ্ধান্তটা নেওয়া সহজ ছিল না। দীপঙ্করের প্রথম স্ত্রী ছিলেন একজন অ্যাংলো ইন্ডিয়ান মহিলা। তাদের দুই কন্যা সন্তান টিটি এবং রুমি বয়সে কার্যত দোলনের থেকেও বড়। দীপঙ্করের ছোট মেয়ে রুমির সঙ্গে ভাল সম্পর্ক থাকলেও টিটি কিন্তু পছন্দ করতেন না সৎ মাকে।
অন্যদিকে দীপঙ্করের প্রথমা পত্নীকেও বেশ কিছুদিন আগে পর্যন্ত চোখে দেখেননি দোলন রায়। দীপঙ্করের বড় মেয়ের টিটির মৃত্যুর পর হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন দোলন। তখনই তাদের প্রথম দেখা হয়। সদ্য কন্যাহারা দীপঙ্কর এবং তার প্রথম স্ত্রীকে তখন সামলেছিলেন দোলনই। তাদের দেখভাল করা থেকে শুরু করে ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ানো, সবেরই দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। কোনওরকম তিক্ততা ছিল না তার মনের মধ্যে।
দোলন সম্প্রতি টিভি নাইন বাংলার কাছে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে জানিয়েছেন দীপঙ্করের সঙ্গে তার স্ত্রীর ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার অনেক বছর পর দোলনের সঙ্গে তার সম্পর্ক শুরু হয়। অতএব তিনি কারও সংসার ভাঙ্গেননি। আসলে দোলন এবং দীপঙ্করের প্রেম থেকে বিয়েকে কেন্দ্র করে অনেক কটাক্ষ হয়েছে। দোলনের পরিবার তাদের সম্পর্কটা মেনে নিতে পারেননি প্রথম প্রথম। অন্যদিকে দীপঙ্করের পরিবারের তরফ থেকেও একই প্রতিক্রিয়া মিলেছিল।
আরও পড়ুন : তারকা সন্তানকেও কাজ দেয়নি টলিউড, কোথায় হারিয়ে গেল তাপস পালের মেয়ে?
কিন্তু কোনদিনও কোনও কটাক্ষ কিংবা বাধার পরোয়া করেননি তারা। বিয়ের পর তিন বছর কেটে গেল তাদের সুখী দাম্পত্য জীবনের। তবে এত সুখের মাঝেও মা না হতে পারার দুঃখটা রয়ে গেল দোলনের মধ্যে। প্রথম প্রথম কষ্ট হলেও দোলন তার ভাইয়ের ছেলেকেই আপন সন্তানের মত করে দেখছেন এখন। দীপঙ্করও তাকেই আপন করে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন : রচনা-ঋতুপর্ণার জন্যই নায়িকা হওয়া হল না! ২০ বছর পর টলিউডের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক লকেট চ্যাটার্জী
বয়সের এত বিস্তর ব্যবধান দোলন এবং দীপঙ্করের মাঝে কখনও বাধা হতে পারেনি। দীপঙ্করের থেকে ভালোবাসা, প্রেম, স্নেহ, আদর থেকে শুরু করে শাসন সবই পেয়েছেন দোলন। সায়রা বানু যেমন দিলীপ কুমারকে ৯৮ বছর পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তার সেবাযত্ন দিয়ে, দোলনও ঠিক তেমনভাবেই সুস্থ রাখতে চান দীপঙ্করকে। এই জন্যই তো দীপঙ্করের ছোট মেয়ের রুমি দোলনকে বলেন, “তুমি সত্যিই আমার বাবাকে ভালবেসে তার দেখভাল করো। আমার সেটা দেখতে সত্যিই ভালো লাগে।”
আরও পড়ুন : ঠকিয়েছে আপনজনেরা, সব সম্পত্তি হারিয়ে আজ নিঃস্ব! কোথায় হারিয়ে গেলেন লোকেশ ঘোষ?