টলিউডে কি রকম নোংরা রাজনীতি হয়? মুখ খুললেন বাংলা সিনেমার তারকারা

কেন দিন দিন নামছে বাংলা সিনেমার মান? টলিউডের এমন দুর্দশা কেন? মুখ খুললেন তারকারা

বাংলা সিরিয়াল হোক কিংবা সিনেমা, গত কয়েক বছরে দর্শক সংখ্যা কিন্তু দিনে দিনে কমেছে। তবে শুরু থেকেই যে টলিউডের এমন হাল ছিল তা নয়। পুরনো বাংলা সিরিয়ালগুলোকে আজ ১০-২০ বছর পরেও মনে রেখেছেন দর্শকরা। আর ৯০ দশকের সিনেমাগুলো তো ছিল আইকনিক বাংলা সিনেমা (Bengali Cinema)। তাহলে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে হঠাৎ এমন দুর্দশা কেন? রাজনীতি নাকি অন্য কিছু? মুখ খুললেন টলিউডের (Tollywood) বেশ কিছু তারকা।

আজতক বাংলার কাছে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বর্ষিয়ান অভিনেতা বিপ্লব চ্যাটার্জী বলেছেন বাংলাতে অনেক ভালো পরিচালক আছেন। তারা ভালো ভালো প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করতে পারেন। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে তাদের প্রডিউসারের দাবী মেনে কাজ করতে হয়। শুধু টাকার জন্য এখন সিরিয়ালে পরকীয়া, দু-তিনটে স্বামী, মা মেয়েকে কুশিক্ষা দিচ্ছে এমনটা দেখানো হয়। লোককে বাজে জিনিস দেখানো হচ্ছে, এমনটাই অভিমত এই বর্ষীয়ান তারকার।

ROOPA GANGULY

‘মেয়েবেলা’ সিরিয়ালের অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলী অবশ্য দাবি করেছেন মানুষকে যা দেখানো হবে তারা তাই দেখবেন। যদি ভালো দেখানো হয়, তাহলে তারা ভালোই দেখবেন। বর্তমানে সিরিয়ালে যে জঘন্য গল্প পরিবেশন করা হয় তার সাফাই দিতে গিয়ে অনেক তারকাই দর্শকদের রুচি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। রূপার প্রশ্ন, “জানলে কি করে মানুষ ভালো জিনিস দেখে না? ভালো দেখাও, তবে তো দেখবে।”

ইদানিং বেশ কিছু তারকার মুখে টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে রাজনীতির কথা শোনা যায়। অভিনেতা শুভাশিস মুখার্জীর দাবি, এখন রাজনীতি ভীষণভাবে চেপে বসেছে ইন্ডাস্ট্রিতে। প্রডিউসারের পছন্দমত ব্যক্তিকে নিতে হয়। আবার অভিনয়ের দুনিয়ার বহু শিল্পীও রাজনীতিতে প্রবেশ করছেন। যেটাকে একেবারেই ভালভাবে নেন না শুভাশিস। তার মতে, রাজনীতি না জেনেই সেই ক্ষেত্রে পা রাখা মানে কোনও এক যোগ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে তার কাজ থেকে বঞ্চিত করা। যা একেবারেই কাম্য নয়।

CHIRANJEET CHAKRABORTY

চিরঞ্জিত চক্রবর্তী অবশ্য সিনেমার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমার কারণ হিসেবে ছবির প্যাটার্ন বদলকেই দায়ী করেছেন। তার কথায়, বিশেষত অঞ্জন চৌধুরীর মৃত্যুর পর থেকে বাংলাতে মাস সিনেমা বানানোই বন্ধ হয়েছে। মুষ্টিমেয় শহুরে শিক্ষিত দর্শকদের জন্য বানানো সিনেমা গ্রাম বাংলার মানুষ নিচ্ছেন না। এই কারণে আগে যেখানে বাংলাতে ৭৫০ টি সিনেমা হল ছিল, এখন তা কমে ৭১০ -এ এসে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন : বাংলা সিরিয়ালের নায়িকারা কে কত টাকা পারিশ্রমিক পায়?

চিরঞ্জিত আরও বলেছেন, সাধারণ মানুষের IQ সাধারণত ৮ বছরের বাচ্চার মত। তাদের সামনে যখন শিক্ষিত মানুষের সিনেমা পরিবেশন করা হয় তখন তারা সেটা বুঝতে পারেন না। কাজেই হল ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। বাংলা সিনেমাকে চাঙ্গা করতে বাংলাতেও পাঠান, জওয়ান কিংবা বেদের মেয়ে জোৎস্না, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদের মত সিনেমা করতে হবে, এমনটাই মনে করেন চিরঞ্জিত।

আরও পড়ুন : সিরিয়াল অভিনেতাদের কাজ দেয় না টলিউড! ইন্ডাস্ট্রিটে চলে ‘লবিবাজি

RUDRANIL GHOSH

আরও পড়ুন : আগে সেক্স তারপর ট্যালেন্ট, টলিউডে কাজ পেতে শুতে হয়

অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ বলিউড এবং টলিউডের মধ্যে ফারাকটা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন তার সাক্ষাৎকারে। তার মতে বাংলা সিনেমার মান কমার অন্যতম বড় কারণ বাজেট। হিন্দি সিনেমা ভালো বাজেট পায়, সেই সঙ্গে দর্শকদের পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে অভিনেতা বাছাই করে। বম্বেতে অভিনেতা বাছাইয়ের অপশনও আছে। আর বাংলাতে হয় উল্টোটা। ছবির গল্প ভালো হলেও বাজেট কম থাকে। সেই সঙ্গে প্রডিউসারের পছন্দের চাপ তো রয়েইছে। যার ফলে সিনেমার মান কমছে, দর্শকও কমছে।

আরও পড়ুন : আগে সেক্স পরে কাজ, বলিউডে কাজ পেতে মেটাতে হয় যৌন চাহিদা