খুব শান্ত, নিপাট ভদ্রলোক, যার এক হাসিতেই মন ভুলে যায় আমাদের। সেই অরিজিৎ সিং (Arijit Singh) একজন বড় মাপের গায়ক হলেও তিনি কিন্তু আদ্যপ্রান্ত একজন সাদামাটা মানুষ। বিদেশের বহুতল আবাসনে প্রায়শই যাতায়াত থাকলেও আজও শিকড়ের টানে তিনি বারবার ফিরে আসেন জিয়াগঞ্জে। কিন্তু এই খ্যাতনামা সংগীত শিল্পীর এক সময় কপালে জুটে ছিল চোরের অপবাদ। ঠিক কি ঘটেছিল?
সম্প্রতি তারসেন মিত্তলের সঙ্গে একটি মিউজিক পডকাস্টে হাজির হয়ে নিজের ছোটবেলার কথা শেয়ার করলেন অরিজিৎ। স্কুলের মজার ঘটনা শেয়ার করতে গিয়ে অরিজিৎ বলেন, তখন তিনি ক্লাস টেনে পড়তেন। ইলেভেনের স্টুডেন্টদের জন্য ল্যাবের ব্যবস্থা থাকত যা তাদের কাছে ছিল একটি কৌতূহলের বিষয়। ইলেভেনের ল্যাবে ঢোকার এক সময় সুযোগ পেয়েছিলেন অরিজিৎ এবং তার দুই বন্ধু। ল্যাবে থাকা টেস্ট টিউব সহ অন্যান্য জিনিসপত্র দেখে ভীষণই মজা পেয়েছিলেন তারা কিন্তু পরবর্তীকালে তাদের আর সেই ল্যাবে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
সেই সময় সঙ্গীতশিল্পী ইলেভেনের সেই ল্যাবে না ঢুকতে পেরে খুব বিষন্ন হয়ে পড়েন, ঠিক তখনই অরিজিতের এক বন্ধু বলেন, চল ভাই একটা নিজেদের ল্যাব পেয়ে গেছি। বন্ধুর মুখে এই কথা শুনে অরিজিৎ এবং তার বন্ধুরা ভীষণ উত্তেজিত হয়ে সাইকেল করে সেই ল্যাবের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন। ল্যাবের খোঁজ করতে গিয়ে তারা এক জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যেতে থাকেন। তখনো অরিজিৎ বুঝতে পারছিলেন না, তার বন্ধু তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিলেন।
জঙ্গলে বেশ কিছুক্ষণ চলার পর একটি পাঁচিল টপকে অরিজিতরা একটি বিশাল রুমে ঢুকে পড়েন। সেখানে একটি বড় টেবিল এবং তার ওপরে একটি লাইট ছিল, সাথে ছিল বেশ কিছু সরঞ্জাম। ওখানেই ছিল গরুদের দেওয়া একটি বড় ইনজেকশন। ওই ইনজেকশনে জল ভরে পিচকারির মত খেলা করতে শুরু করে দেন অরিজিত এবং তার বন্ধুরা। খেলতে খেলতে তারা বুঝতে পারেন না যে তাদের গলা বাইরে থেকে শুনতে পাওয়া গেছে এবং সেখানে জড়ো হয়ে গেছেন বেশ কিছু লোকজন।
আশেপাশের লোকেরা অরিজিৎ এবং তার বন্ধুদের গলা শুনে সেখানে জড়ো হয়ে যান এবং তাদের কান ধরে বাইরে টেনে নিয়ে আসেন। শুধু তাই নয়, অরিজিৎ- দের নামে নালিশ করে বলা হয়, কাল যে প্লেট চুরি হয়েছে সেগুলি এরাই নিয়েছে। স্কুলের হেডমাস্টারকে ডেকে তাদের স্কুল থেকে বের করে দেওয়া থেকে শুরু করে পুলিশে দেওয়া সব ভয়ই দেখানো হয়েছিল। হেড মাস্টার মশাইয়ের হাতে পায়ে ধরার পর যদিও রেহাই পাওয়া যায় কারণ সামনে ছিল মাধ্যমিক, কিন্তু ততক্ষণে কলোনির সবাই জেনে গিয়েছিল এই কথা। বাড়ি ফিরতে না ফিরতেই বাবার কাছে উত্তম মধ্যম মার খেতে হয়েছিল অরিজিৎকে।
ওই ঘটনার পর অরিজিৎ আর কাউকে অন্ধের মত বিশ্বাস করতেন না বরং নিজের বুদ্ধিতে চলতেন। তবে তিনি এও মনে করেন, ছোটবেলায় এমন ছোটখাটো ঘটনা সকলের সঙ্গেই কখনো না কখনো ঘটেছে।আসলে ওই বিল্ডিংটা ছিল লন্ডন মিশন হাসপাতালের। যে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে একসময় বদমাইশি করে চোর অপবাদে শাস্তি পেতে হয়েছিল অরিজিৎকে সেই লন্ডন মিশন হাসপাতালকে আরো একবার চালু করার জন্য বর্তমানে চেষ্টা করছেন অরিজিৎ।
আরও পড়ুন : অরিজিত নাকি শ্রেয়া, কার পারিশ্রমিক বেশি?