মোটা মাইনের প্রফেসরি ছেড়ে লেখিকা, ‘শ্রীময়ী’, ‘ধূলোকণা’র লেখিকা লীনা গাঙ্গুলীর জীবনটাও যেন সিনেমা

বাংলা সিরিয়ালপ্রেমীরা (Bengali Mega Serial) লীনা গাঙ্গুলীর (Leena Ganguly) নাম প্রায় সকলেই জানেন। মা-ঠাকুমারা তার নাম না শুনে থাকলেও তার লেখা প্রায় সমস্ত সিরিয়ালের নাম তাদের মুখস্থ। সোনার হরিণ থেকে শুরু করে জল নূপুর, ইষ্টিকুটুম, শ্রীময়ী, খড়কুটো, ধুলোকণার মত একাধিক সুপারহিট ধারাবাহিকের গল্প তার লেখনী থেকেই বেরিয়েছে।

লীনা গাঙ্গুলী শুধুই একজন চিত্রনাট্যকার নন, তিনি একজন পরিচালক এবং প্রযোজকও। সেই সঙ্গে বর্তমানে রাজ্যের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন তিনি। একসময় তিনি ছিলেন একটি কলেজের প্রফেসর। কলেজে প্রফেসরির চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি কীভাবে এই ইন্ডাস্ট্রিতে এলেন, কী করেই বা বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে তার এত আধিপত্য বাড়লো, সেই অজানা কাহিনীই থাকছে এই প্রতিবেদনে।

লীনা গাঙ্গুলী কমলা গার্লস স্কুল এবং সিস্টার নিবেদিতা স্কুলের ছাত্রী ছিলেন। রামকৃষ্ণ মিশন থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা করেন। নিজের পড়াশোনা শেষ করার পরেই তিনি একটি কলেজে বাংলা বিষয়ের অধ্যাপিকা হিসেবে যোগদান করেন। সেই সঙ্গে লেখালেখিও করতেন তিনি।

লীনা গাঙ্গুলী কলেজে অধ্যাপিকা হিসেবে যোগদান করার পরই বাংলা সিরিয়ালের একটি প্রোডাকশন হাউজের তরফ থেকে তার কাছে চিত্রনাট্য লিখে দেওয়ার জন্য প্রস্তাব আসে। সালটা ছিল ২০০৪। ‘সোনার হরিণ’ সিরিয়ালের জন্য তাকে চিত্রনাট্য লিখতে হয়েছিল। লীনা গাঙ্গুলীর লেখনীতেই জনপ্রিয় হয়েছিল সিরিয়ালটি। এরপর ধারাবাহিকভাবে সিরিয়ালের গল্প লিখতে শুরু করেন লীনা গাঙ্গুলী।

‘সাত পাকে বাঁধা’, ‘ইষ্টিকুটুম’, ‘মোহর’, ‘শ্রীময়ী’, ‘কেয়া পাতার নৌকো’,‘কুসুম দোলা’, ‘অন্দরমহল’ এর মত অনেক ধারাবাহিকের গল্প তারই লেখা। লীনা গাঙ্গুলী যেভাবে ক্রমান্বয়ে ধারাবাহিকের গল্প লিখে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তার মত এমন সৌভাগ্য বাকিদের কিন্তু হয়নি। চিত্রনাট্যের কারণে অল্প-বিস্তর ট্রোল্ড হতে হলেও এই মুহূর্তে বাংলাতে তাকে টেক্কা দেওয়ার মতো চিত্রনাট্য লেখক কিংবা লেখিকা এক কথায় বিরল।

Leena Ganguly Opens up About the Success of Dhulokona

এই প্রসঙ্গে লেখিকা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “যাঁরা টাকার জন্য ধারাবাহিক লিখবেন ভাবেন, তাঁরা পারেন না। ধারাবাহিক লেখায় বিশ্বাস করতে হবে। নাম করব না। সম্মান জানিয়েই বলছি, অনেক লেখক ধারাবাহিক লিখতে এসেছিলেন। পারেননি। আসলে লেখা হাতে ধরে শেখানো যায় না”।