Auroville City : নানা জাতি, নানা ভাষা, নানান মতাদর্শের মানুষের বাস এই ভারতবর্ষে। এত বৈচিত্র্যের মধ্যেও ঐক্য বজায় রেখে এগিয়ে চলেন এই দেশের মানুষেরা। তবে জানেন কি ভারত (India) -র অভ্যন্তরেই এমন একটি জায়গা রয়েছে যেখানে জাত-পাত, ধর্মের ভেদাভেদের কোনও জায়গা নেই? এমনকি সেখানে টাকা-পয়সারও কোনো দাম নেই। জানেন সেই জায়গাটা কোথায় রয়েছে?
ভারতের একমাত্র শহর যেখানে জাতি-ধর্মের ভেদাভেদ নেই, নেই রাজনীতি, এমনকি সেখানকার মানুষের সেরা জীবন-ধারণের জন্য টাকা-পয়সার উপর নির্ভর করেন না। পৃথিবীতে সুপ্রাচীন যুগে যখন টাকা-পয়সার চল ছিল না, তখন বিনিময় প্রথাই ছিল তাদের জীবনধারণের মাধ্যম। দক্ষিণ ভারতের একটি ছোট্ট শহর আজও সেই প্রথা মেনে চলছে।
শুধু ভারতবর্ষ নয়, গোটা পৃথিবী এখন টাকার পেছনে ছুটছে। দিন প্রতিদিন টাকার প্রতি মানুষের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুর ভিন্নপুরম জেলার অন্তর্গত অরোভিল শহর যেন আলাদাই এক পৃথিবী গড়ে তুলেছে। ১৯৬৮ সালে মিরা আলফাসা নামের একজন মহিলা এই শহর গড়ে তুলেছিলেন। তিনি ছিলেন ঋষি অরবিন্দ (Rishi Aurobindo) -র মতাদর্শে বিশ্বাসী।
পশ্চিমবঙ্গের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে অরবিন্দ ঘোষ হলেন অন্যতম একজন। তিনি তার জীবনের এক পর্যায়ে সবকিছু ছেড়ে হয়েছিলেন ঋষি অরবিন্দ। তার নাম অনুসারেই এই শহরের নাম হয়েছে অরোভিল। অরোভিল গড়ে তোলার একটাই লক্ষ্য ছিল মানুষের মধ্যে একতা গড়ে তোলা। এই শহর ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি মেনে চলে না।
পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে এই শহরে নির্বিঘ্নে, শান্তিতে দিন যাপন করতে পারেন। এখানে বিশ্বের ৫০ টি দেশের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করেন। শহরের জনসংখ্যা প্রায় ২৫০০ জন। এই শহরের কেন্দ্রে রয়েছে একটি মাতৃমন্দির যেখানে সকলে ধ্যান এবং যোগা করেন। এই জায়গাতে আর কোনও ধর্মীয় স্থান। এখানকার মানুষের মধ্যে টাকা-পয়সার লেনদেন হয় না।
আরও পড়ুন : ভিনগ্রহ থেকে পৃথিবীতে এসেছিল সোনা, জানুন পৃথিবীর সবথেকে দামি ধাতুর আসল রহস্য
জীবনধারণের জন্য অরোভিল শহরের মানুষেরা ব্যবহার করেন একটি বিশেষ ধরনের কার্ড। যাকে বলা হয়ে থাকে অরোকার্ড। শহরের মধ্যে কোথাও টাকা পয়সা ব্যবহার করার নিয়ম নেই। তবে শহরের বাইরে বেরোলে অবশ্য তারা টাকার ব্যবহার করে থাকেন। এই শহরের মানুষদের একটি বিশেষ কমিটি দল আছে। তাদের সিদ্ধান্ত মেনেই সকলকে চলতে হয়।
আরও পড়ুন : এটিই ভারতের সবচেয়ে সুখী রাজ্য, এখানে কারও নেই কোনও টেনশন