ইদানিং টলিউড (Tollywood) ঘাঁটলে শুধুই উঠতি মডেল-অভিনেত্রীদের আত্মহত্যার খবর পাওয়া যাচ্ছে। পল্লবী দে (Pallavi Dey), বিদিশা দে মজুমদারদের (Bidhisha Dey Majumder) মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার মঞ্জুষা নিয়োগীর (Manjusha Neogi) আত্মহত্যার খবরে তোলপাড় হল স্টুডিও পাড়া। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে ৩ অভিনেত্রীকে হারিয়েছে টলিউড। যাদের মধ্যে একজন বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী।
পরপর অভিনেত্রীদের আত্মহত্যার খবর মিলতে থাকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন টলিউডের ভক্তরাও। কেন এত কম বয়সে সব আশা হারিয়ে চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন অভিনেত্রীরা? সেই নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন টলিউডের খ্যাতনামা অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জী (Rachana Banerjee)। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির এই দুর্দিনের কারণ হিসেবে তিনি কতগুলি পয়েন্ট তুলে ধরেছেন।
টলিউড এবং ওড়িয়া ফিল্মি দুনিয়ার এক নম্বর নায়িকা ছিলেন রচনা ব্যানার্জী। সাফল্য খুব কম সময়ে মধ্যে ধরা দিয়েছিল তাকে। কিন্তু সেই সাফল্য ধরে রাখার জন্য তার স্ট্রাগলও কিছু কম ছিল না। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে রচনা ব্যানার্জীর বক্তব্য, বর্তমান প্রজন্ম স্ট্রাগল করতেই শেখেনি। সমস্ত কিছুই এদের মুখের সামনে তুলে ধরতে হয়! কিছু না করলেও কাজ চাই, আর কাজ না পেলেই অবসাদে ভোগে। তারপর অবসাদ থেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তাদের সময় ব্যাপারটা এরকম ছিল না। সেই সময় পায়ের তলার মাটি আঁকড়ে ধরে সংঘর্ষ করে যেতে হয়েছে। হাতের সামনে কেউ কিছু এনে গুছিয়ে দিয়ে যায়নি। আর এখনকার প্রজন্ম যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সবকিছু পেতে চায়। রচনা ব্যানার্জী আরও বলেছেন, এখন স্কুল শেষ হতে না হতেই সিরিয়ালে চলে আসছে অভিনয়ের জন্য। অভিনয় করে টাকা হাতে আসতেই শুরু হয় ফুর্তি! এটাই এখনকার প্রজন্মের জীবন। আর এর ফল ভোগ করতে হয় বাবা-মায়েদের।
রচনা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, বাবা-মা সবসময় সন্তানের ভালো চান। অথচ সন্তানরা তাদের কথা শুনতে চায় না। এমনকি তার নিজের ছেলে প্রনীলের কাছেও মা নাকি ভুল! ছেলেকে ‘বেয়াড়া’ বলে সম্বোধন করে রচনা ব্যানার্জী বলেছেন বার বার বোঝানোর চেষ্টা করলেও ফল হয় না। অন্যদিকে এই প্রজন্মের অভিনেত্রীদের উদ্দেশ্য করে রচনা ব্যানার্জি বলেছেন এই মেয়েদের জন্য তার বিন্দুমাত্র কষ্ট হয় না। একটা ছেলের জন্য কখনও জীবন এভাবে শেষ করা উচিত নয়। কাজ না পেলে কিংবা একটা ছেলের তৃতীয় বউ না হয়ে উঠতে পারলে গলায় দড়ি দিতে হবে! এদের ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কাউন্সেলিং করানো উচিত বলে মনে করেন নায়িকা। এদের বাবা-মায়েদের কথা ভেবে কষ্ট পান রচনা। এই প্রজন্মের কাছে বন্ধুরাই সব, আর কষ্ট করে মানুষ করা বাবা-মা হলেন শত্রু!