হতে পারতেন IAS অফিসার, চাকরির সুযোগ ছেড়ে আজ বিখ্যাত র‍্যাপার বাদশা

বলিউডে (Bollywood) র‍্যাপ (Rapp) সংগীতকে আলাদা মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছেন বাদশা (Badshah)। বলতে গেলে বলিউডের র‍্যাপ সংগীতের ‘বাদশাহ’ তিনি। তার গাওয়া বা কম্পোজ করা গান ছাড়া পার্টি ঠিক জমে না। ‘বড়লোকের বেটি’ হোক বা ‘ডিজেওয়ালে বাবু’! সবেতেই সুপারহিট বাদশাহ। তবে গণিতের মেধাবী ছাত্রটি ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে কেন বেছে নিলেন এই গানের দুনিয়া? জানতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে বেশ কয়েকটা বছর।

১৯৮৫ সালে দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন আদিত্য প্রতীক সিংহ সিসৌদিয়া। ভাবছেন এটা আবার কার নাম? এই নাম আদতে বাদশারই আসল নাম। তবে এই নাম তিনি এখন আর ব্যবহার করেন না। শুধু এখন বলে নয়, যেদিন থেকে তিনি গানের দুনিয়ায় নতুন সফর শুরু করলেন সেদিন থেকেই নাম বদলে নিয়েছিলেন বাদশা। তবে তখন অবশ্য তার নাম ছিল আলাদা। পীতমপুরার বালভারতী স্কুলে পড়ার সময় থেকেই ছোট্ট বাদশার গানবাজনার প্রতি ঝোঁক দেখা দেয়। স্কুলে তার একটি গানের দল ছিল। পড়াশোনাতেও তিনি ছিলেন বেশ মেধাবী ছাত্র।

বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন বাদশা। তার বিষয় ছিল গণিত। তবে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে চণ্ডীগড়ে চলে যান সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পথেও বাঁধা আসে। কলেজে পড়ার সময় থেকেই র‍্যাপ গানের প্রতি তার আগ্রহ দেখা দেয়। তখন থেকেই তিনি গান লিখতে শুরু করেন। একবার একটি সাক্ষাৎকারে বাদশা নিজের মুখে স্বীকার করেন, গানের প্রতি আকর্ষণ না জন্মালে তিনি হয়তো আইএএস অফিসার হতে পারতেন। বাদশা যখন প্রথমবার গায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তখন তিনি ‘কুল ইক্যুয়াল’ নাম নিয়েছিলেন।

২০০৬ সালে ইয়ো ইয়ো হানি সিংয়ের সঙ্গে ব্যান্ডে গান করতেন তিনি। ২০১২ সালে তিনি সেই দল ছেড়ে দেন। সেই বছরই তিনি হরিয়ানার একটি লোক সংগীত ‘কর গয়ি চুল’ প্রকাশ করেন যা পরবর্তীকালে ‘কাপুর এন্ড সন্স’ ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছিল। এক কথায় ভাইরাল হয়েছিল সেই গান। এরপরই হানি সিংয়ের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বাদশা। হানি সিং তাকে প্রকাশ্যে টাটা ন্যানোর মতো কমদামি গাড়ির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। নিজেকে রোলস রয়েসের মত মহার্ঘ গাড়ির সঙ্গে তুলনা করেন। তার যোগ্য জবাব দিয়েছিলেন বাদশা। তিনি বলেছিলেন, রাস্তায় রোলস রয়েসের থেকে টাটা ন্যানো বেশি দেখা যায় কারণ ওটাই বেশি জনপ্রিয়।

বাদশার ‘ডি জে ওয়ালে বাবু’ মুক্তি পাওয়ার পরপরই সব রেকর্ড ভেঙে দেয়। খুব কম সময়ের ব্যবধানে লক্ষ্য লক্ষ্য ভিউ পায় এই গানটি। এরপর ২০১৯ সালে ইউটিউবে ‘পাগল’ গানটি মুক্তি পায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই গানে সাড়ে সাত কোটি ভিউ হয়েছিল। তবে ভিউজে নকল ইউজার রয়েছেন বলে বিতর্কে জড়ান বাদশা। তবে তার আঁচ তার কেরিয়ারে পড়েনি।

‘হাম্পটি শর্মা কে দুলহনিয়া’, ‘খুবসুরত’, ‘বজরঙ্গী ভাইজান’, ‘এবিসিডি টু’, ‘অল ইজ ওয়েল’, ‘সনম রে’, ‘বদ্রীনাথ কি দুলহনিয়া’, ‘সুলতান’, ‘দবং থ্রি’, ‘গুড নিউজ’, ‘স্ট্রিট ডান্সার থ্রি’-সহ সাম্প্রতিক বহু ছবিতেই তিনি গান গেয়েছেন। এছাড়াও ২০১৯ সালে ‘খানদানি শফাখনা’ ছবিতে অভিনয়ও করেছেন বাদশা। ‘দো দুনি পাঁচ’ ছবির প্রযোজক তিনি। তবে তিনি আজীবন গায়ক হিসেবে পরিচয় পেতে চেয়েছেন। কেরিয়ারের বাইরে তিনি পুরোদস্তুর ফ্যামিলি ম্যান। তার স্ত্রী জেসমিনের সঙ্গে একমাত্র শিশুকন্যার দেখভালও করেন তিনি।