টলিউড (Tollywood) হোক অথবা বলিউড, যেকোনো ইন্ডাস্ট্রিতেই স্বজন পোষণ ভীষণ স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর এই স্বজনপোষণ নিয়ে উত্তাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া, কিন্তু নেপটিজম ব্যাপারটা বহু দিনের পুরনো। আর শুধু ইন্ডাস্ট্রি কেন, যে কোনো কাজের ক্ষেত্রেই এই স্বজন পোষণ হয়ে থাকে। এবার এই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)।
লকেট চ্যাটার্জীর ছোটবেলা
লকেটের জন্ম হয় শ্রীরামকৃষ্ণের পরিবারে। শৈশব কেটেছে কলকাতার দক্ষিণেশ্বরে। লকেটের বাবা অনিল চট্টোপাধ্যায় ছিলেন দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দিরের পুরোহিত। খুব অল্প বয়সেই মাত্র ১৬ বছরে তিনি প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্যের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যান। বিয়ের পর যোগমায়া কলেজ থেকে জীববিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী হিসেবে পরিচিতি গড়ে তুলেছিলেন লকেট। পরে ধীরে ধীরে প্রবেশ করেন অভিনয় জীবনে।
লকেট চ্যাটার্জীর সিনেমা
‘গ্রেপ্তার’, ‘ক্রান্তি’, ‘গুরু’, ‘ত্যাগ’, ‘অগ্নি’, ‘উড়ো চিঠি’, ‘কাপুরুষ মহাপুরুষ’, ‘চোরাবালি’, ‘কয়েকটা মেয়ের গল্প’, ‘গোড়ায় গন্ডগোল’, ‘ স্ট্রীট লাইট’, ‘বাই বাই ব্যাংকক’, ‘ ফাইটার ‘, ‘পরান যায় জ্বলিয়া রে’ সহ আরো বহু সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। সিনেমার পাশাপাশি ‘মা মনসা’ এবং ‘ভালোবাসা থেকে যায়’ সহ একাধিক বাংলা ধারাবাহিকও কাজ করেছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়।
লকেট নিঃসন্দেহে একজন সুন্দরী এবং প্রতিভাবান অভিনেত্রী। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমসাময়িক লকেট বারবার চেষ্টা করেছিলেন নিজেকে প্রমাণিত করার। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও তেমন ভাবে কোন সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করা হয়নি লকেটের। কখনো বোনের চরিত্রে কখনো আবার ভাইয়ের বৌয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু এত প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও কেন লকেট হতে পারলেন না মুখ্য চরিত্রের অভিনেত্রী?
আরও পড়ুন : কেন অভিনয় ছেড়ে দিয়েছিলেন রচনা ব্যানার্জি? কারণ জানলে অনুপ্রাণিত হবেন
কেন নায়িকা হতে পারলেন না লকেট চ্যাটার্জী
শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় সঞ্চালিত অপুর সংসারে এসে বলেন,” আমার এই অসফলতার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। পরিচালক থেকে অভিনেতা সকলেই রয়েছেন এর পেছনে। বুম্বাদা ছিলেন, ঋতু দি, রচনা ছিলেন। তখনকার দিনের তারকা অর্থাৎ বুম্বাদা বা ঋতুপর্ণাকে নিয়ে এই সিনেমা তৈরীর কথা চিন্তা ভাবনা করতেন পরিচালকরা। এক্সপেরিমেন্ট করতে ভয় পেতেন তারা। যদি সিনেমা ফ্লপ হয়ে যায়, যদি কোন সমস্যা হয় এই ভয়ে নতুনদের সুযোগ দিতেন না পরিচালকরা।”
আরও পড়ুন : পরমব্রতর স্ত্রী পিয়া আসলে কে? রইল অভিনেতার স্ত্রীর পরিচয়
বর্তমানে বিনোদন জগত থেকে পুরোপুরি নিজেকে সরিয়ে দিয়ে তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ২০১৬ সালে তৃণমূল ছেড়ে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন এবং পশ্চিমবঙ্গের ময়ূরেশ্বর আসন থেকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০১৭ সালে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে সরিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি মহিলা শাখার প্রেসিডেন্ট হন তিনি। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে হুগলির কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন লকেট। আপাতত তিনি একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ।
আরও পড়ুন : শুধু বাবার ছবির হিরোইন হয়েই থেকে গেলেন, কেন আর পর্দায় দেখা যায় না চুমকি চৌধুরীকে?