নিশান্তিকা দাস (Nishantika Das), আজ এই নামটার সঙ্গে বেশ পরিচিত বাংলা সিরিয়ালের দর্শকরা। তাকে মোহর (Mohor) এবং নবাব নন্দিনী (Nabab Nandini) সিরিয়ালে অভিনয় করতে দেখেছেন দর্শকরা। পার্শ্বচরিত্র হলেও ছোট্ট-মিষ্টি এই মেয়ের অভিনয় দর্শকদের মনে দাগ কেটেছে। কিন্তু এমন একজন অভিনেত্রী অতীত জীবনে নিজের পরিবার এবং কাছের মানুষদের থেকে এমন আঘাত পান যে নিজেকেই শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন।
বাংলা সিরিয়ালের পর্দায় খলনায়িকা হয়েই আগমন ঘটেছিল নিশান্তিকার। ‘মোহর’ সিরিয়ালে একটি খল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। অভিনয় দক্ষতার জেরে তাকে পরবর্তীকালে ‘নবাব নন্দিনী’ সিরিয়ালে নবাবের বোনের ভূমিকা দেওয়া হয়। সম্প্রতি এই অভিনেত্রী তার জীবন সংগ্রামের কাহিনী তুলে ধরলেন একটি ইউটিউব চ্যানেলে। যা শুনলে শিউরে উঠতে হয়।
অভিনেত্রী জানিয়েছেন নিজের পরিবারেই তিনি অবহেলা এবং কটাক্ষের শিকার হয়েছিলেন তার রূপের কারণে। তার এক জমজ দাদা রয়েছেন। ছোটবেলা থেকেই দুই ভাই বোনের মধ্যে রূপ নিয়ে তুলনা চলত। তাকে বলা হত তার দাদা খুব সুন্দর, কিন্তু তিনি নন। এই একই ঘটনার শিকার হতে হয়েছিল যখন তিনি টলিউডে পা রাখেন।
অভিনয় করার স্বপ্ন নিয়ে টলিউডে পা রেখেছিলেন নিশান্তিকা। তাকে তার ফটোগ্রাফার ছবি তোলার সময় বলেছিলেন তিনি সুন্দরী নন, তাই তাকে অভিনয়টা ভাল করে করতে হবে। এরপর যখন তিনি অভিনয়ের জন্য কাজের চেষ্টা করেন তখন এক অভিনেত্রীও তাকে দেখে বলেন এত বাজে দেখতে একটা মেয়ে খলনায়িকা হবে?
ঘরে বাইরে সর্বত্র রূপ নিয়ে খোঁটা শুনতে শুনতে নিশান্তিকা নিজের প্রতি আস্থা হারাতে শুরু করেন। এমনকি তিনি নিজের জীবন শেষ করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যে কারণে একবার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে সেদিন টুলের উপর দাঁড়ালেও পা দিয়ে ঠেলে টুল সরানোর সাহস হয়নি তার। জীবন তাকে আবার নতুন সুযোগ দেয়।
আরও পড়ুন : একের পর এক সিরিয়াল ফ্লপ! দিনে দিনে কেন কমছে সিরিয়াল নায়িকাদের জনপ্রিয়তা?
আরও পড়ুন : রোহিত-ফুলকির বিয়ে ভাঙতে সিরিয়ালে পা রাখছেন এই জনপ্রিয় নায়িকা! ফুলকিতে আসছে মহাধামাকা পর্ব
কিন্তু এরপরেও তার স্ট্রাগল কমেনি। প্রেমেও বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হতে হয় তাকে। ‘মোহর’ সিরিয়ালের শট দেওয়ার আগে মেকআপ রুমে বসে অঝোরে কেঁদেছিলেন তিনি। সেই সময় তাকে সহ-অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা বলেন এটাই তার সবথেকে ভাল শট হবে। তেমনটাই হয়েছিল। সেদিন নিশান্তিকার অভিনয় দেখে সেটের সকলে হাততালি দিয়ে উঠেছিলেন। ওইদিনের আনন্দ তাকে জীবনের সব না পাওয়ার দুঃখ ভুলিয়ে দেয়।