টলিউডে (Tollywood) উত্তম-সুচিত্রার জুটির পর দ্বিতীয় যে জুটি দর্শকদের মনে প্রবলভাবে সাড়া ফেলেছিল তারা হলেন প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী (Prasenjit Chatterjee) এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (Rituparna Sengupta)। তারা দুজন মিলে ৫৮ টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ঋতুপর্ণা এবং প্রসেনজিতের জুটি সেই সময় এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে তাদের গ্ল্যামারের ছটায় ফিকে হয়ে গিয়েছিলেন বাকি তারকারা। প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রিতে বুঁদ হয়ে থাকতেন দর্শকরা। কিন্তু একটা সময় পর এই জুটি ভেঙে যায়।
প্রসেনজিত-ঋতুপর্ণার জুটি কেন ভেঙেছিল সেই নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক জল্পনা রয়েছে। যে মুহূর্তে তাদের জুটিটা ভেঙেছিল সেই মুহূর্তে দুজনের ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক পরিবর্তন আসে। এর ফলে বিতর্কের পারদ ক্রমশ চড়তে থাকে। সেই সঙ্গে প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়েও চরম কাটাছেঁড়া চলে। আসলে পর্দাতে তাদের ঘনিষ্ঠ হতে দেখে দর্শকদের মনে বদ্ধমূল ধারণা হয়েছিল সত্যি সত্যিই হয়ত প্রেম করছেন দুজনে। প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার জুটি ভীষণভাবে সফল ছিল সেই সময়, তাই তাদের নিয়ে জল্পনা ছিল বেশি।
টলিউডের আরেক অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র তো সরাসরি দাবি করেছিলেন প্রসেনজিতের সঙ্গে ঋতুপর্ণার সম্পর্কের কারণেই নাকি তিনি টলিউডের নায়িকা হতে পারেননি। একই অভিযোগ তুলেছিলেন প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক চ্যাটার্জীও। তিনিও তার ব্যর্থ কেরিয়ারের জন্য অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছিলেন প্রসেনজিত এবং ঋতুপর্ণার দিকে। সেই সময় টলিউডের পর্দা জুড়ে একচ্ছত্রভাবে কাজ করে গিয়েছেন প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা।
কিন্তু সফলতার শিখরে থাকতে থাকতেই এই জুটিটা ভেঙে যায়। কারণ সেই সময় প্রসেনজিতের সঙ্গে ঋতুপর্ণার সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন চরমে উঠেছিল। একদিকে প্রসেনজিতের দ্বিতীয় বিয়ে তখন ভাঙার মুখে, অন্যদিকে ঘরে বাইরে নিত্য প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণাকে নিয়ে এই সমালোচনা আর সহ্য হয়নি তাদের। তাই শেষমেশ তারা আর একসঙ্গে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ঋতুপর্ণার বিয়ে হয়ে যায়।
ঋতুপর্ণার বিয়ের দিনেও প্রসেনজিৎকে নিয়ে গুজব রটাতে ছাড়েনি টলিপাড়া। কেউ কেউ দাবি করেন ঋতুপর্ণার বিয়ের দিন প্রসেনজিৎ উপস্থিত থাকলেও তাকে দেখে বেশ মর্মাহত বলে মনে হচ্ছিল। আসলে তাদের মধ্যে সম্পর্কের গুজব ছড়িয়ে দিয়ে তাদের জুটিটা ভাঙ্গার চেষ্টা করেছিলেন অনেকেই। সেই কাজে তারা সফলও হয়েছিলেন। ইন্ডাস্ট্রির অভ্যন্তরে রাজনীতির শিকার হয়েছিলেন প্রসেনজিত-ঋতুপর্ণা নিজেই। একপ্রকার ষড়যন্ত্র করেই তাদের জুটি ভেঙে দেওয়া হয়।
ঋতুপর্ণা বারবারই বলেছেন প্রসেনজিতের সঙ্গে তার শুধু বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। বহু বছর বাদে শিবপ্রসাদ-নন্দিতার ‘প্রাক্তন’ ছবিতে আবার ফিরে আসে এই জুটি। প্রসেনজিতের নিজস্ব প্রযোজনার ছবি ‘প্রসেনজিৎ ওয়েডস ঋতুপর্ণা’তেও ক্যামিও চরিত্রে দেখা যাবে দুজনকে। এতদিন পরে হয়তো তারা তাদের ভুলটা বুঝতে পেরেছেন। তাই সমস্ত মান-অভিমান ভুলে আবারও একসঙ্গে পর্দায় ধরা দিতে চলেছেন টলিউডের অন্যতম সেরা এই জুটি।